শাকসবজি, খাদ্যদ্রব্য প্রভৃতিতে বিপজ্জনক কীটনাশক ও কেমিক্যালের ব্যবহার নিয়ে দুই নাগরিকের মধ্যে সংলাপ রচনা

শাকসবজি, খাদ্যদ্রব্য প্রভৃতিতে বিপজ্জনক কীটনাশক ও কেমিক্যালের ব্যবহার নিয়ে দুই নাগরিকের মধ্যে সংলাপ রচনা
শাকসবজি, খাদ্যদ্রব্য প্রভৃতিতে বিপজ্জনক কীটনাশক ও কেমিক্যালের ব্যবহার নিয়ে দুই নাগরিকের মধ্যে সংলাপ রচনা

মলয়বাবু : গতকাল রাতে অশোকবাবু মারা গেছেন বিধানদা।

বিধানবাবু :
কোন্ অশোক?

মলয়বাবু :
অশোকবাবুকে চিনলেন না? আরে সেই যে গেল বছর দার্জিলিং-এ ট্যুরে গিয়ে যাঁর গলায় আমরা দারুণ সব রবীন্দ্রসংগীত শুনেছিলাম। মনে পড়ছে? কে.এন.সি. রোডে বাড়ি…।

বিধানবাবু :
স্টেট ব্যাঙ্কে চাকরি করা সেই ভদ্রলোক?

মলয়বাবু: হ্যাঁ, হ্যাঁ। এই তো চিনেছেন।

বিধানবাবু :
ভদ্রলোক মারা গেছেন। কী করে? বেশি তো বয়স হয়নি। পঞ্চাশ-পঞ্চান্ন বড়োজোর।

মলয়বাবু: মৃত্যু কি আর বয়স মানে দাদা? অমন শক্তসমর্থ মানুষ, মারা গেলেন কীসে, না খাদ্যে বিষক্রিয়ায়।

বিধানবাবু :
সে কী, ফুড পয়জনিং-এ।

মলয়বাবু: তবে আর বলছি কী? খাবার মধ্যে খেয়েছিলেন একবাটি পায়েস। আর তাতেই…

বিধানবাবু: হসপিটালে নেয়নি?

মলয়বাবু: নার্সিংহোমে নিয়ে গেছিল। কিন্তু কাজ হয়নি কিছু।

বিধানবাবু :
নির্ঘাত ভেজাল ছিল পায়েসের ওই দুধে। আমি তো শুনেছি আজকাল জলে ডিটারজেন্ট গুলে তাতে কী একটা কেমিক্যাল দিয়ে দুধ বানিয়ে ফেলছে কিছু জালিয়াত, হয়তো সেরকম কোনো দুধ পেটে গেছিল অশোকবাবুর।

মলয়বাবু: তা হতেই পারে। আজকাল যা চলছে চারদিকে। ম্যাগিতে সিসা আবার ফল, শাকসবজি, পটল, উচ্ছে, রাঙাআলু, লংকা সবকিছুতে এখন কীটনাশক, রং- এসব মেশাচ্ছে চাষি কিংবা বিক্রেতারা। টাটকা রাখতে কেমিক্যাল মেশাচ্ছে, মাছের কানকোয় ইনজেক্ট করছে কেমিক্যাল মেশানো লাল রং, মিষ্টির দোকানের মিষ্টিতে মেশাচ্ছে স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ক্ষতিকর সব রং। সেসব খেয়ে কার না শরীর খারাপ হতে পারে?

বিধানবাবু :
সরকার কি জানে না এসব? অথচ দ্যাখো, বিশেষ কোনো পদক্ষেপ কি. আজও নিতে পেরেছে? সরকারের সদিচ্ছা নেই, তা বলব না। নেই শুধু ঠিকঠাক পরিকাঠামো। যতদিন না এসব বন্ধ হবে, ততদিন কী জানো মলয়, আমাদের মতো সাধারণ মানুষরা ওভাবে মৃত্যুর দিকে এগোতেই থাকবে।

Leave a Comment