খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা’ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে একজন শিক্ষক ও একজন ছাত্রের সংলাপ রচনা

খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা' বিষয়টিকে কেন্দ্র করে একজন শিক্ষক ও একজন ছাত্রের সংলাপ রচনা
খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা’ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে একজন শিক্ষক ও একজন ছাত্রের সংলাপ রচনা

মিহিরস্যার: তাহলে ওই কথাই রইল। রাইট ব্যাক হিসেবে কাল তুই খেলছিস। 

দীপক : কিন্তু স্যার…

মিহিরস্যার: ওসব কিন্তু-ফিন্তু চলবে না। স্কুল যদি হেরে যায় তোর কি ভালো লাগবে?

দীপক : আসলে তা না, মা বলছিল সামনে পরীক্ষা, এর মধ্যে খেলতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরীক্ষা দেওয়াটা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

মিহিরস্যার:
একথা বলেছেন তোর মা? আমি কিন্তু বিশ্বাস করি না। কারণ তোর মা শুনেছি চাকরি করেন, শিক্ষিত মহিলা। আমি বিশ্বাস করি তিনি জানেন খেলাধুলো করলে শরীর খারাপ হয় না, বরং শরীর সুস্থ-সবল হয়। তা ছাড়া গড়ে ওঠে অফুরন্ত প্রাণশক্তি। মনে জাগে উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং লড়াই করার ইচ্ছা। আমার মনে হয় টুর্নামেন্টটা খেলতে তোর নিজের কোনো সমস্যা আছে। সত্যিই যদি সমস্যা থেকে থাকে, খুলেই বল না আমাকে, তবু তো বুঝব একটা খেলোয়াড় ভয় পেয়ে পালায়নি।

দীপক : সত্যি কথা বলব স্যার? বকবেন না বলুন?

মিহিরস্যার: ও মা, বকব কেন? টিমের খেলোয়াড়দের কারুর না কাবুর সমস্যা তো থাকতেই পারে। তুই বলে ফেল দেখি।

দীপক : কাল একটা সিনেমা দেখতে যাওয়ার কথা আছে স্যার। কোচিংয়ের বন্ধুরা জোর করে ধরেছে আমাকে যেতেই হবে। কাল তাই আর স্কুলে আসব না।

মিহিরস্যার: স্কুলের সম্মানের চেয়ে তোর বন্ধুদের অনুরোধে সিনেমা দেখাটা বড়ো হল রে দীপক? কোথায় খেলা আর কোথায় সিনেমা। হ্যাঁ, মানছি যে ভালো সিনেমাও শিক্ষামূলক। কিন্তু খেলাধুলোর ভিতর দিয়ে যেভাবে চরিত্র গঠিত হয়, চিন্তাভাবনার প্রসার ঘটে, গড়ে ওঠে একাগ্রতা, প্রতিযোগিতার মনোভাব এবং জাতীয় ঐক্যবোধ; সিনেমার ভিতর দিয়ে সেসব পাওয়া কি সম্ভব? গেমটিচার হয়ে আমি বলছি বাবা, স্কুলের সম্মানটা আর খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তার দিনটাই তোর কাছে বড়ো হওয়া উচিত। সিনেমাটা তুই পরে দেখে নিতে পারবি, কিন্তু কালকের এই খেলাটা কিন্তু আর ফিরে আসবে না। আসবে কি? তুই তো বড়ো একজন ফুটবলারই হতে চাস, না কী?

দীপক : তা অবশ্য ঠিক।

মিহিরস্যার: এই তো বুঝেছিস বাবা। এবার অন্তত ‘হ্যাঁ’-টুকু বল।

দীপক : বেশ, খেলব তাহলে।

Leave a Comment