অসুখী একজন কবিতাটিকে ‘যুদ্ধবিরোধী কবিতা’ বলা যায় কিনা-আলোচনা করো

অসুখী একজন কবিতাটিকে ‘যুদ্ধবিরোধী কবিতা’ বলা যায় কিনা

'অসুখী একজন' কবিতাটিকে 'যুদ্ধবিরোধী কবিতা' বলা যায় কিনা-আলোচনা করো
‘অসুখী একজন’ কবিতাটিকে ‘যুদ্ধবিরোধী কবিতা’ বলা যায় কিনা-আলোচনা করো।

পাবলো নেরুদার ‘অসুখী একজন’ কবিতাটি চিলির গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে লেখা। শুভবুদ্ধিসম্পন্ন, শান্তিপ্রিয়, নিরীহ, সাধারণ মানুষের কাছে যুদ্ধ অবাঞ্ছিত। তবু ক্ষমতালোলুপ, স্বার্থান্বেষী একদল মানুষ যুগে যুগে দেশে দেশে যুদ্ধ বাঁধায়। আলোচ্য কবিতায় যুদ্ধের ভয়াবহ ফলশ্রুতির কথা আছে। কবিতার কথক গৃহযুদ্ধের অনিবার্য কারণে স্বদেশ ছেড়ে গিয়েছেন। ফেরার অপেক্ষায় দরজায় দাঁড় করিয়ে রেখে গিয়েছেন প্রিয় নারীকে-

‘আমি তাকে ছেড়ে দিলাম

 

অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে রেখে দরজায়
আমি চলে গেলাম দূর…দূরে।’

 

যুদ্ধ ও তার ফলশ্রুতি

কথক চলে যাওয়ার পর সাধারণ ঘটনাধারার মধ্য দিয়ে স্বাভাবিকভাবেই দিন কাটছিল, কিন্তু ‘তারপর যুদ্ধ এল’। ফলে ‘শিশু আর বাড়িরা খুন হলো’, ‘সমতলে আগুন ধরে গেল’, ‘সব চূর্ণ হয়ে গেল, জ্বলে গেল আগুনে।’ মানুষের আশ্রয়, দেববিশ্বাস এবং আগামী প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে গেল।

যুদ্ধ বিরোধিতা

যুদ্ধ যে কাম্য নয়, সে-কথা কবি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন। যুদ্ধ কেবল রক্তপাত, ধ্বংস আর মৃত্যু রচনা করে। তাই যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে থাকে স্বদেশ তথা মানবতার প্রতিভূ সেই মেয়েটি। অহিংসা ও ভালোবাসাময় পৃথিবীর জন্য তার অপেক্ষা শাশ্বতকালের। তাই কথকের প্রিয় নারীর মধ্য দিয়েই যেন বেঁচে থাকে আগামীর সেই স্বপ্ন। এই ‘অপেক্ষা’ দিয়েই কবিতাটি শেষ হয়েছে-

‘আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায়।’ 
সুতরাং আলোচ্য কবিতাটি স্পষ্টতই একটি যুদ্ধবিরোধী কবিতা।

Leave a Comment