‘চন্দ্রনাথ’ গল্প অবলম্বনে চন্দ্রনাথের চরিত্র আলোচনা করো
|
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘চন্দ্রনাথ’ গল্পে প্রশ্নের এই উক্তিটি করেছে গল্পকথক নরেশ। উক্তিটি করেছে তার সহপাঠী চন্দ্রনাথ সম্পর্কে। আলোচ্য গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হল চন্দ্রনাথ। গল্পের প্রেক্ষাপটে চন্দ্রনাথ চরিত্রের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা যায়। যেমন—
উন্নত স্বাস্থ্য
চন্দ্রনাথ ‘একজন দীর্ঘাকৃতি সবল সুস্থ দেহ নির্ভীক দৃষ্টি কিশোর।’ দুটি বড়ো চোখ ও চওড়া কপালের অধিকারী সে। কথকের মতে কালপুরুষের ভীমাকৃতির সঙ্গে চন্দ্রনাথের আকৃতি তুলনীয়।
প্রতিবাদী
চন্দ্রনাথের ধারণা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কৌশলে তাকে দ্বিতীয় করে হীরুকে প্রথম করেছে। এর প্রতিবাদে সে দ্বিতীয় পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্ত চিঠির মাধ্যমে বিদ্যালয়কে জানিয়েছে। এমনকি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহাশয়ের অনুরোধ ও দাদার নির্দেশও চন্দ্রনাথ মেনে নিতে পারেনি—এমনই অনমনীয় প্রতিবাদী ছিল চন্দ্ৰনাথ।
যুক্তিশীল
হীরু যে প্রথম হতে পারে না—তা চন্দ্রনাথ যুক্তি দিয়ে বোঝাতে চেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজাল্ট কেমন হতে পারে, তাও চন্দ্রনাথ তার সহপাঠী নরেশকে বুঝিয়েছে। সে বলেছে—‘অনুপাতের আঙ্কিক নিয়মে যার মূল্য যতবার কষে দেখবে, একই হবে।
অনুমান ক্ষমতা
অসামান্য অনুমান ক্ষমতার জন্যই চন্দ্রনাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার সম্ভাব্য ফলাফল বলে দিয়েছে। হীরুর ফলাফল ছাড়া তার সকল অনুমান মিলে গেছে।
আত্মমর্যাদাবোধ
অত্যধিক আত্মমর্যাদাবোধ ও চারিত্রিক দৃঢ়তার কারণেই | চন্দ্রনাথ নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পেরেছে। এ কারণেই বিদ্যালয়ের পুরস্কার, প্রধান শিক্ষকের অনুরোধ, দাদার নির্দেশ, হীরুর কাকার দেওয়া | স্পেশাল প্রাইজ হেলার সঙ্গে সে প্রত্যাখ্যান করতে পেরেছে।
মেধাবী
বিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল না হলেও চন্দ্রনাথ যে অত্যন্ত মেধাবী তার পরিচয় হল ইতিপূর্বে সে কখনও দ্বিতীয় হয়নি।
অহংবোধ
চন্দ্রনাথের চরিত্রের ত্রুটি হল তার অহংবোধ। তারই জন্য সে প্রধান শিক্ষক মহাশয় বা দাদার সঙ্গে আশানুরূপ আচরণ করেনি।
‘চন্দ্রনাথ’ গল্পে চন্দ্রনাথের এই সকল বৈশিষ্ট্যগুলি লক্ষ করা যায়।
‘চন্দ্রনাথ’ গল্পে চন্দ্রনাথের এই সকল বৈশিষ্ট্যগুলি লক্ষ করা যায়।