লোহাচড়া, নিউমুর ও ঘোড়ামারা দ্বীপের জলমগ্ন হওয়ার কারণ লেখো। |
লোহাচড়া, নিউমুর, ঘোড়ামারা দ্বীপের জলমগ্ন হওয়ার কারণগুলি নিম্নলিখিত–
সমুদ্র জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি
সমুদ্র জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। এই জলতল দ্বীপ ও দ্বীপসমূহের বিস্তীর্ণ অঞ্চলসমূহকে সমুদ্রগর্ভে গ্রাস করে। এই তিনটি দ্বীপের ক্ষেত্রেও এই ঘটনাই ঘটেছে।
ক্ষয়
ঘোড়ামারা, লোহাচড়া, নিউমুর ও অন্যান্য নবগঠিত দ্বীপগুলির গঠনগত কোনো স্থিরতা নেই ও মৃত্তিকা আলগা প্রকৃতির হয় যার ফলে, দৈনিক জোয়ারের প্রভাবে এরা ক্ষয় পায় এবং ঘূর্ণিঝড় সুনামি বা সমুদ্র জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধিতে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। United Nations Intergovernmental Panel on Climate Change-এর মতে, যদি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সমুদ্র জলতল 3.3 ফুট উঁচু হয়, তবে 2050 সালের মধ্যে বাংলাদেশের 17% অংশ সমুদ্রগর্ভে তলিয়ে যাবে।
সাইক্লোনের প্রভাব
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলশ্রুতি হিসেবে সাইক্লোনের ভয়াবহতা বেড়েছে। অবস্থানগত কারণে এবং বঙ্গোপসাগরে আরব সাগরের তুলনায় ঘূর্ণবাত অধিক তৈরি হওয়ার কারণে দ্বীপগুলি অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভয়াবহ সাইক্লোনের মাত্রা বেশি হওয়ায় দ্বীপগুলি জলের তলায় চলে যায়।
ম্যানগ্রোভ অরণ্য হ্রাস
হ্যালোফাইট প্রকৃতির উদ্ভিদের সমাহার হল ম্যানগ্রোভ অরণ্য। এই উদ্ভিদ শ্বাসমূল ও ঠেসমূলের সাহায্যে লবণাক্ত মৃত্তিকায় নিজেদের বাঁচিয়ে রাখে এবং উপকূলীয় ক্ষয়, সাইক্লোন ও সুনামিকে প্রতিহত করে। কিন্তু বর্তমানে খাঁড়ি অঞ্চলে মীন চাষ, চিংড়ি চাষ ও Shrimp Farming (বিশেষ ব্যবসায়িক কারণে চিংড়ির চাষ)-এর কারণে ম্যানগ্রোভ নিধন করা হচ্ছে, যার ফলশ্রুতি হিসেবে উপকূলীয় দ্বীপগুলি চরমভাবে ক্ষয়ের সম্মুখীন হচ্ছে।
উপকূলীয় বন্যা
উপকূল অঞ্চলে বন্যার কারণে উপকূলীয় দ্বীপসমূহ ব্যাপক পরিমাণ ক্ষয়ের সম্মুখীন হয় এবং এই ক্ষয় প্রক্রিয়া উপকূলীয় দ্বীপসমূহের আপেক্ষিক উচ্চতাকে হ্রাস করে। ফলস্বরূপ প্রতিনিয়ত বন্যা দেখা যায় এবং দ্বীপগুলি জলের তলায় নিমজ্জিত হয়।
সাম্প্রতিক তথ্য
2009 সালের পরবর্তীতে পুনরায় লোহাচড়া দ্বীপটি সমুদ্রের উপরে জেগে ওঠে।