নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠে কেন
নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠে কেন
|
নদীর মোহানায় বদ্বীপ গঠনের অনুকূল ভৌগোলিক অবস্থা–
পলিযুক্ত নদী
বদ্বীপ গঠনের অন্যতম প্রধান শর্ত পলিযুক্ত নদী। পললরাশির পরিমাণ অনেক বেশি হতে হবে, তাহলেই সমুদ্রগর্ভে ধীরে ধীরে পলি সঞ্চিত হয়ে বদ্বীপ গঠিত হবে।
নদীর দীর্ঘ, মধ্য ও নিম্ন প্রবাহ
বদ্বীপ গঠনের ক্ষেত্রে নদীর গতিপথ দীর্ঘ হতে হবে। মধ্য ও নিম্ন প্রবাহ দীর্ঘ হলে পলি সঞ্চয়ের পরিমাণ বাড়বে এবং বদ্বীপ গঠনের সহায়ক হবে।
উপনদীর সংখ্যা
উপনদীগুলি মূল নদীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে জলের সঙ্গে পলিও বহন করে, ফলে, মূল নদীতে পলির পরিমাণ বাড়ে এবং বদ্বীপ গঠনের হার ত্বরান্বিত হয়।
শান্ত সমুদ্র
নদীর মোহানা সংলগ্ন সমুদ্রটি যত শান্ত হবে এবং জোয়ারভাটার প্রকোপ যতই কম হবে ততই নদীবাহিত পদার্থগুলি সহজেই সমুদ্রবক্ষে সঞ্চিত হবে।
অগভীর মোহানা
উপকূলের কাছে বা মোহানার কাছে সমুদ্র অগভীর হওয়া প্রয়োজন। মোহানার কাছে যদি সমুদ্র গভীর হয়, তবে নদী দ্বারা বাহিত যাবতীয় বস্তুভার সমুদ্রগর্ভে তলিয়ে যাবে। ফলে, কখনোই বদ্বীপ গঠিত হবে না। যেমন আমাজন পৃথিবীর অন্যতম দীর্ঘ নদী হলেও মোহানার কাছে সমুদ্রের গভীরতা অনেক বেশি হওয়ায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়নি।
স্রোতের বিপরীত দিকে বায়ুপ্রবাহ
বদ্বীপ গঠিত হওয়ার জন্য স্রোতের বিপরীত দিক থেকে বায়ুপ্রবাহ প্রয়োজন।
জলের ঘনত্ব
মোহানার কাছে জলের ঘনত্ব বেশি হলে বদ্বীপ গঠনের সহায়ক হয়।
সমুদ্রে লবণের পরিমাণ
সমুদ্রের জলে লবণের পরিমাণ যত বেশি থাকবে, সেখানে নদীবাহিত পললরাশির সঞ্চয় তত দ্রুত হবে।
পরিবেষ্টিত সমুদ্র
উন্মুক্ত সমুদ্রের তুলনায় স্থল দ্বারা পরিবেষ্টিত সমুদ্রে বা ঘেরা সমুদ্রে পলি সঞ্চয়ের পরিমাণ বেশি হয় এবং বদ্বীপ গঠিত হয়।
এই সকল অনুকূল পরিবেশের জন্য গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র, মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা প্রভৃতি নদীতে বদ্বীপ গড়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন – ভারতে রেলপথ প্রবর্তনের উদ্দেশ্য ও প্রভাব আলোচনা করো