বৃষ্টির জল সংরক্ষণের পদ্ধতিগুলি লেখো
বৃষ্টির জল সংরক্ষণের পদ্ধতিগুলি লেখো। |
জলসম্পদ সংরক্ষণের অন্যতম উপায় হল বৃষ্টির জল সংগ্রহ করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। এই বখতিকে রেন ওয়াটার হারভেস্টিং (Rain Water Harvesting) বলে।
সাধারণত দুটি পদ্ধতিতে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করা যায়। যথা- অভ্যন্তরীণ জলসংরক্ষণ এবং বাহ্যিক জলসংরক্ষণ।
অভ্যন্তরীণ জলসংরক্ষণ
সংজ্ঞা: কোনো অঞ্চলের বৃষ্টির জলকে সরাসরি জমিতে সংরক্ষণ করার পদ্ধতিকে অভ্যন্তরীণ জলসংরক্ষণ বলে।
পদ্ধতি
- জমির ঢালের আড়াআড়িভাবে বসল বুনলে বৃষ্টির জল দ্রুত অপসারিত হাত না পেরে মাটিতে প্রবেশ করতে পারে।
- বর্ষার পূর্বে জমি বর্ষণ করে রাখলে নটির জল ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- জমিতে গভীর শিকড়যুক্ত পাতাওয়ালা ডালশস্য চাষ করলে বৃষ্টির ফোঁটা দ্বারা মাটি ক্ষয় কম হয় এবং জমিতে জল প্রবেশ করে।
- জমির ঢাল বিচার করে ছোটো ছোটো বাঁধ বা আল দিলে জলের গতি কম হয়, ফলে ভৌমজলের সঞ্চয় বৃদ্ধি পায়।
বাহ্যিক জলসংরক্ষণ
সংজ্ঞা: অধিক বৃষ্টির জলকে বিভিন্ন উপায়ে ধরে রাখা বা সংগ্রহ করাকে বাহ্যিক জলসংরক্ষণ বলে।
পদ্ধতি
জলাশয় খনন: ঢালু অঞ্চলে জলনিকাশি নালার পাশে জলাশয় বা পুকুর কেটে বৃষ্টির জল আবদ্ধ করে রেখে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায়।
বাড়ির ছাদে জলসংগ্রহ: যে-কোনো বাড়ির ছাদের বৃষ্টির জল সরাসরি বা পাইপের সাহায্যে কোনো চৌবাচ্চা বা ট্যাংকে সঞ্চয় করা যায় এবং পরে তা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায়।
কৃত্রিমভাবে ভৌমজলের সঞ্চয় বৃদ্ধি: বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করে ভৌমজলের সঞ্চয় বৃদ্ধির অন্যতম পদ্ধতি হল– (i) জলভরণ নলকূপ : এই পদ্ধতিতে একটি বড়ো গর্ত করে গর্তের মাঝখানে মাটির অনেক গভীর পর্যন্ত পাইপ বসানো হয়। এরপর পাইপের মুখ বন্ধ না হয় এমনভাবে গর্তটিকে প্রস্তরখণ্ড দিয়ে বুজিয়ে দেওয়া হয়। ফলে, বৃষ্টির জল সহজেই পাইপের মধ্য দিয়ে ভৌমজলস্তরে চলে যায়। (ii) জলভরণ কুয়ো: কুয়ো খনন করে বা পতিত কুয়োতে ছাদের জল পাইপের সাহায্যে নিয়ে গিয়ে সঞ্চয় করা যায়। এই জল ক্রমশ চুঁইয়ে চুঁইয়ে ভৌমজলের সঞ্চয় বৃদ্ধি করে। (iii) পরিখা খনন: পরিখা খনন করে ছাদের জল জমা করা হয়। এই জল ধীরে ধীরে চুঁইয়ে মাটির নীচে প্রবেশ করে।
আরও পড়ুন – নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য রচনা