সনাতন সেন: চিন্তিত হব না? শিক্ষাক্ষেত্রে কী ভয়ংকর দিন ঘনিয়ে আসছে। পাস-ফেল প্রথা বিদ্যালয় স্তর থেকে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার ফলে বিদ্যালয় স্তরে শিক্ষায় শৈথিল্য দেখা যাচ্ছে, শিক্ষাব্যবস্থা তলিয়ে যেতে বসেছে।
সায়ক কর: পঠিত জ্ঞানের পরীক্ষানিরীক্ষায় বারবার পরিবর্তনের ফলে ছাত্রছাত্রীরা সমস্যায় পড়ছে। কখনও বলা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের উপর চাপ কমানোর জন্য পরীক্ষা ও মূল্যায়ন ব্যবস্থা রাখা উচিত নয়। আবার কেউ কেউ বলছেন, মূল্যায়ন ব্যবস্থায় পাস-ফেল প্রথা না থাকলে শিক্ষার্থী পড়াশোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। মেধাশক্তির যথাযথ প্রকাশ বিঘ্নিত হচ্ছে। আমার মনে হয় প্রাথমিক স্তরে পাস-ফেল না রাখলেও পঞ্চম শ্রেণি থেকে পাস-ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।
সনাতন সেন:
সায়কবাবু আপনি ঠিকই ভেবেছেন। ছাত্রকে উপযুক্ত করে তোলার জন্য যে পরিকাঠামো এবং ছাত্র ও শিক্ষকের অনুপাত প্রয়োজন, আমাদের দেশের বিদ্যালয় স্তরে তা নেই। তার ফলে যেসব অভিভাবক নিজেরা ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ায় সাহায্য করতে পারেন না তাদের শিক্ষার মধ্যে ফাঁকফোঁকর থেকে যাচ্ছে। তারা ভাবছে পড়াশোনা না করলেও যখন পরের শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হতে পারবে, অতএব পড়ার দরকার নেই। কিন্তু পাস-ফেল প্রথা থাকলে তারা এভাবে পড়াশোনা করত না বলেই আমার মনে হয়।
সনাতন সেন: এ কথা ঠিক যে, পাঠ্যক্রমকে হালকা করা প্রয়োজন। তাহলে শিক্ষার্থীর পড়ার প্রতি আগ্রহ জন্মাবে, চাপিয়ে দেওয়া ব্যবস্থা মনে হবে না। তার সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন মূল্যায়ন ব্যবস্থার মাধ্যমে পাস-ফেল প্রথা প্রবর্তিত হলে শিক্ষার মানের উন্নয়ন ঘটবে।
সায়ক কর: আপনার সঙ্গে আমি সহমত পোষণ করছি। পাস-ফেল প্রথা ফিরে এলে শিক্ষার্থীর ভিত শক্তিশালী হবে। উচ্চশিক্ষা অর্জনের সময় অসুবিধা হবে না। শিক্ষার্থীদের অনুসন্ধিৎসু মনোভাব তৈরি হবে, পড়াশোনায় আগ্রহ জন্মাবে।
সনাতন সেন: কিন্তু সবটাই নির্ভর করছে প্রশাসনিক সদিচ্ছার উপর। সেজন্যই বলছি ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যাবুদ্ধির বিকাশ এবং অন্তরের সুপ্ত শক্তিসম্ভাবনাকে জাগিয়ে তোলার জন্য বিদ্যালয় স্তরে পাস-ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনা দরকার। পাস-ফেল প্রথা শিক্ষার্থীর পক্ষে ক্ষতিকর হবে না।
সায়ক কর: ঠিকই বলেছেন। আমারও তাই মনে হয়। আজ তবে চলি। অন্যদিন আবার এ বিষয়ে কথা হবে।