কে বাঁচায়, কে বাঁচে-এই শীর্ষক নামকরণের যথার্থতা আলোচনা করো

কে বাঁচায়, কে বাঁচে-এই শীর্ষক নামকরণের যথার্থতা আলোচনা করো – আজকের পর্বে কে বাঁচায়, কে বাঁচে-এই শীর্ষক নামকরণের যথার্থতা আলোচনা করা হল।

    কে বাঁচায়, কে বাঁচে-এই শীর্ষক নামকরণের যথার্থতা আলোচনা করো

    'কে বাঁচায়, কে বাঁচে'-এই শীর্ষক নামকরণের যাথার্থ্য আলোচনা করো
    ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’-এই শীর্ষক নামকরণের যাথার্থ্য আলোচনা করো।
    সাহিত্যে নামকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা পাঠক এবং পাঠ্যের মধ্যে ভাবসেতু নির্মাণ করে। নামকরণ মূলত তিন ভাবে হয়ে থাকে-বিষয়কেন্দ্রিক, চরিত্রকেন্দ্রিক, ব্যঞ্জনাধর্মী।

    সমাজসচেতন কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ১৩৫০ বঙ্গাব্দের মন্বন্তরে পীড়িত মানুষের যন্ত্রণাকে আলোচ্য ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ গল্পে প্রকাশ করেছেন। সেসময় মানুষ গ্রাম উজাড় করে শহরে এসে লঙ্গরখানাতেও খাবার পায়নি। ফুটপাথ জুড়ে অনাহারে মৃত মানুষদের লাশ ছড়ানো। এমনই কাহিনির প্রেক্ষাপটে গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনের গতিপথে অফিস যাওয়ার পথে প্রত্যক্ষ করে ‘অনাহারে মৃত্যু’। ঘটনার আকস্মিকতায় মৃত্যুঞ্জয়ের চিন্তাপ্রক্রিয়া পালটে যায়। দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষকে ভালো রাখার দায়িত্ব নেয় সে। কিন্তু পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির অভিঘাতে, সামাজিক গভীর ক্ষতের অতলে মৃত্যুঞ্জয় হারিয়ে যেতে থাকে। নিজের সামাজিক অবস্থান থেকে সরে এসেও মৃত্যুঞ্জয় কাউকে বাঁচাতে পারে না।

    গল্পের পরিণতিতে যে বাঁচাতে চায় আর যাদের বাঁচাতে চায়, তারা একই বিন্দুতে এসে দাঁড়ায়। তাই ঘটনাক্রমের সাপেক্ষে এই প্রশ্ন অনিবার্য হয়ে ওঠে-‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’। সমাজে শ্রেণি বৈষম্যের ব্যঞ্জনাকে প্রতিফলিত করে গল্পের ব্যঞ্জনাধর্মী এই তীর্যক নামকরণ সার্থক ও সুপ্রযুক্ত।

    Leave a Comment