বুড়ির শরীর উজ্জ্বল রোদে তপ্ত বালিতে চিত হয়ে পড়ে রইল -বুড়ির চেহারা ও পোশাকের পরিচয় দাও। তার তপ্ত বালিতে পড়ে থাকার কারণ কী |
“বুড়ির শরীর উজ্জ্বল রোদে তপ্ত বালিতে চিত হয়ে পড়ে রইল।”-বুড়ির চেহারা ও পোশাকের পরিচয় দাও। তার তপ্ত বালিতে পড়ে থাকার কারণ কী? |
চেহারা ও পোশাক
সাহিত্যিক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে যে থুখুড়ে বুড়ির উল্লেখ আছে সে ছিল ভিখিরি, বয়সের ভারে তার শরীর ন্যুব্জ। তার মাথা-ভরতি রুক্ষ সাদা চুল, পরনে ছেঁড়া নোংরা একটা কাপড়। গায়ে লেপটে আছে একইরকম তেল-চিটচিটে তুলোর কম্বল। তার হাতে একটা বেঁটে লাঠি। ক্ষয়িষ্ণু খবুটে মুখে সুদীর্ঘ আয়ুর চিহ্ন যেন বলিরেখা এঁকেছে।
কারণ
শীতকালের ফাঁপির অকালবর্ষণ বন্ধ হয়ে যেদিন আকাশ পরিষ্কার হয় সেদিন সবাই বটতলার খোঁদলে বুড়ির নিঃসাড় দেহ আবিষ্কার করে। অনেক বেলা পর্যন্ত তাকে অনড় দেখে চাওয়ালাজগা বলে, বুড়িনির্ঘাত মরে গেছে। ক্রমে ভিড় বাড়ে। কেউ ভাবে বুড়ির মৃতদেহ শেয়াল-কুকুরে ছিঁড়ে খাবে, গন্ধে টেকা যাবে না। কেউ কপাল ছুঁয়ে দ্যাখে প্রচণ্ড ঠান্ডা, নাড়ির স্পন্দন নেই। চৌকিদার বুড়ির মৃতদেহ নদীতে ফেলে আসার জন্য কিংকর্তব্যবিমূঢ় গ্রামবাসীদের পরামর্শ দেয়। বিজ্ঞ চৌকিদারের পরামর্শ মেনে বাঁশের চ্যাংদোলায় ঝুলিয়ে বুড়ির দেহ নদীর চড়ায় ফেলে আসা হয়, সৎকার করা হয় না। গল্পের এই অংশটি মানুষের অমানবিকতাকেই ফুটিয়ে তোলে। মানুষের এই নির্দয় আচরণেই বুড়ির মৃতকল্প দেহ তপ্ত বালিতে পড়ে থাকে।
আরও পড়ুন – সাহিত্য পাঠের প্রয়োজনীয়তা রচনা