মার্কেন্টাইলবাদ বলতে কী বোঝো? বাণিজ্যিক মূলধন কীভাবে শিল্প ও পুঁজিবাদী মূলধনে রূপান্তরিত হয়? |
মার্কেন্টাইলবাদ
ষোড়শ থেকে অষ্টাদশ শতকের মধ্যে ইউরোপে মার্কেন্টাইলবাদ একটি বিশিষ্ট অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। রাষ্ট্রে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক দিক থেকে গৃহীত নীতিসমূহ, যথা- বুলিয়ান্ সঞ্চয়, উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা ইত্যাদির দ্বারা বাণিজ্যের ভারসাম্য বজায় রাখা ছিল মার্কেন্টাইলবাদের মূল কথা।
পুঁজির বিভিন্ন স্তর ও বাণিজ্যিক পুঁজি থেকে শিল্প পুঁজিতে উত্তরণ
বাণিজ্যিক পুঁজি (Mercantile Capital)
এই পর্যায়ে উপনিবেশগুলির বৈদেশিক বাণিজ্যে ঔপনিবেশিক শক্তির একচেটিয়া আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন উপনিবেশে কৃষির বাণিজ্যিকীকরণ ঘটে। অর্থাৎ তুলো, পাট, নীল, আফিম, চা, কফি প্রভৃতি বাণিজ্যিক ফসলের চাষ এবং মজুরিভিত্তিক শ্রমব্যবস্থা চালু হয়। বাণিজ্যিক মুনাফার মাধ্যমে বিপুল পুঁজির ভাণ্ডার গড়ে ওঠে।
শিল্প পুঁজি (Industrial Capital)
শিল্পবিপ্লবের ফলে বাণিজ্য পুঁজি শিল্প পুঁজিতে পরিণত হয়। ড. কানিংহাম-এর মতে, হঠাৎ করে নতুন যন্ত্রপাতি আবিষ্কারের যে প্রবণতা দেখা দেয় তার পিছনে সৃজনী প্রতিভা যেমন ছিল, তেমনি পুঁজিরও প্রভাব ছিল। উৎপাদনের নতুন কলাকৌশল, শ্রমিক শোষণ, প্রচুর উৎপাদন, বিশ্বব্যাপী বাজার শিল্পমালিকদের হাতে প্রচুর মুনাফা এনে দেয়।
শিল্প পুঁজির যুগে উপনিবেশগুলির বৈদেশিক বাণিজ্যে কাঠামোগত পরিবর্তন ঘটে। উপনিবেশগুলির রফতানিকৃত পণ্যের মধ্যে শিল্পের উপযোগী কাঁচামাল এবং আমদানিকৃত পণ্যের মধ্যে শিল্পপণ্যের পরিমাণ বেশি থাকে। এই পণ্যদ্রব্য বেশি দামে বিক্রি করে চড়া মুনাফা লাভ করে। এইভাবে এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিনিয়োগের চেয়ে মুনাফার পরিমাণ বেশি হতে দেখা যায়।