লখনউ চুক্তির শর্তাবলি উল্লেখ করো। লখনউ চুক্তির গুরুত্ব সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।
লখনউ চুক্তির শর্তাবলি উল্লেখ করো। লখনউ চুক্তির গুরুত্ব সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো। |
লখনউ চুক্তি
মুসলিম লিগ যখন ব্রিটিশ সরকারের দমনমূলক নীতি সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠে তখন যাবতীয় দ্বন্দ্ব ভুলে কংগ্রেসের সঙ্গে এক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হয়। এসময় ইংল্যান্ডের বিরোধিতায় কংগ্রেস ও মুসলিম লিগ কাছাকাছি আসে এবং উভয়ের মধ্যে ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে লখনউ চুক্তি সম্পাদিত হয়।
শর্তাবলি
লখনউ চুক্তির শর্তগুলি হল-
- জাতীয় কংগ্রেস ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের মর্লে-মিন্টো শাসনসংস্কার আইন অনুযায়ী ঘোষিত মুসলিমদের পৃথক নির্বাচনের অধিকার মেনে নেয়।
- পাঞ্জাবে শতকরা ৫০ ভাগ, বাংলায় শতকরা ৪০ ভাগ, বোম্বাইয়ে শতকরা ৩৫ ভাগ -এই ভাগে মুসলিম প্রতিনিধিত্ব হার বণ্টিত হয়।
- সংখ্যালঘু প্রদেশগুলিতে মুসলিমদের ওয়েটেজ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ঘটে।
- কেন্দ্রে মুসলিমদের আসনসংখ্যা বাড়িয়ে এক-তৃতীয়াংশ করা হয়।
- সরকারি আয়-ব্যয়ের উপর প্রাদেশিক আইন পরিষদের নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধির দাবি করা হয়। এ ছাড়া বলা হয় যুদ্ধ, পররাষ্ট্র বিষয়ে কেন্দ্রীয় আইন পরিষদের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।
লখনউ চুক্তির গুরুত্ব
লখনউ চুক্তি ভারতীয় রাজনীতিতে বিভিন্ন দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যেমন-
- এই চুক্তি কংগ্রেস-মুসলিম লিগের পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তি রচনা করে। এই দুই রাজনৈতিক দল যুগ্মভাবে শাসনসংস্কারের দাবি ব্রিটিশ সরকারের কাছে পেশ করে।
- জাতীয় কংগ্রেস মুসলিমদের পৃথক নির্বাচন অধিকার স্বীকার করায় কেন্দ্র ও প্রদেশে মুসলিম প্রতিনিধিত্ব এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশগুলিতে হিন্দু প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির সুযোগ ঘটে।
- মুসলিম লিগ এই চুক্তির দ্বারা কংগ্রেসের স্বরাজ আদর্শ মেনে নেয়। গান্ধি-পূর্ব ভারতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের এই স্বরাজ আদর্শের অন্য দলের স্বীকৃতিলাভ করার ঘটনাটি ছিল সাফল্যের পরিচায়ক।
আরও পড়ুন – স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান ও শেখ মুজিবর রহমানের ভূমিকা আলোচনা করো