মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা কী? মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনার মূল বিষয় কী ছিল
মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা কী? মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনার মূল বিষয় কী ছিল? |
মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা
ভারতবাসীর স্বাধীনতালাভের আকাঙ্ক্ষা এবং হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় যখন সারাদেশ বিপর্যস্ত তখন ব্রিটিশ সরকার দেশভাগ অনিবার্য বলে স্বীকার করে। এই পটভূমিকায় ভারতের বড়োলাট লর্ড মাউন্টব্যাটেন ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২৪ মার্চ ভাইসরয় হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ভারত বিভাগের একটি পরিকল্পনা রচনা করেন ও ৩ জুন প্রস্তাবগুলি ঘোষণা করেন। এই ঘোষণাই মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা নামে খ্যাত।
মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনার মূল বিষয়সমূহ
- ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট ভারত ও পাকিস্তান -দুটি স্বতন্ত্র ও স্বাধীন রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করবে।
- এই দুই রাষ্ট্রই স্বাধীনভাবে নিজের নিজের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বিষয়গুলি পরিচালনা করবে।
- দেশীয় রাজ্যগুলি ব্যতীত বোম্বাই, গুজরাট, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, উড়িষ্যা, পশ্চিম বাংলা, মাদ্রাজ, মধ্যপ্রদেশ, আজমির, কুর্গ ও মুসলিম অধ্যুষিত শ্রীহট্ট ছাড়া আসাম ভারত রাষ্ট্রের অন্তর্গত হবে।
- পাকিস্তানের অন্তর্গত হবে সিন্ধু, বেলুচিস্তান, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, পশ্চিম পাঞ্জাব ও পূর্ব বাংলা।
- পাঞ্জাব ও বাংলাকে ভাগ করা হবে এবং এই দুই প্রদেশের কোন্ কোন্ অঞ্চল কোন্ ডোমিনিয়নের সঙ্গে যুক্ত হবে তা নির্ধারণের জন্য একটি সীমানা নির্ধারণ কমিশন গঠন করা হবে।
- উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ ও আসামের শ্রীহট্ট জেলা কোন্ ডোমিনিয়নের সঙ্গে যুক্ত হবে তা গণভোট দ্বারা স্থির হবে; যদিও শেষ পর্যন্ত শ্রীহট্ট ভারতের অধীনে থাকেনি।
- দেশীয় রাজ্যগুলির রাজাদের ভারত বা পাকিস্তান – যে-কোনো ডোমিনিয়নে যোগদানের অধিকার দেওয়া হয়, ইচ্ছা করলে তারা স্বাধীনও থাকতে পারবে-এই নির্দেশও দেওয়া হয়।
- ভারত ও পাকিস্তান ডোমিনিয়নকে আপাতত ইংল্যান্ডের রাজার প্রতি আনুগত্যের শপথগ্রহণ করতে বলা হয়।
আরও পড়ুন – বিংশ শতকে উপনিবেশবিরোধী আন্দোলনের কারণ গুলি আলোচনা করো