মন্ত্রী মিশনকে ভারতে প্রেরণ করার কারণ ও মন্ত্রী মিশনের প্রস্তাব
মন্ত্রী মিশনকে ভারতে কেন প্রেরণ করা হয়েছিল? মন্ত্রী মিশনের প্রস্তাবগুলি আলোচনা করো। |
মন্ত্রী মিশনকে ভারতে প্রেরণের কারণ
১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটেনে শ্রমিক দল ক্ষমতা লাভ করলে ভারতীয়দের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের সম্ভাবনা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ওই বছরেই ৪ ডিসেম্বর ভারতসচিব স্যার পেথিক লরেন্স ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে ঘোষণা করেন যে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের একটি প্রতিনিধি দলকে শীঘ্রই ভারতে পাঠানো হবে। এই বিষয়ে অনুমতি দিয়ে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৯ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্লিমেন্ট এটলি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ঘোষণা করেন যে, ভারতের স্বাধীনতার বিষয়ে আলোচনার জন্য ব্রিটিশ মন্ত্রীসভার তিন জন সদস্যকে নিয়ে গঠিত একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিনিধি দল ভারতে পাঠানো হবে। এই দলের সদস্যরা ছিলেন ভারতসচিব স্যার পেথিক লরেন্স, বাণিজ্যসভার সভাপতি স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস এবং নৌবাহিনীর প্রধান এ ভি আলেকজান্ডার। এই দলটি মন্ত্রী মিশন বা ক্যাবিনেট মিশন (Cabinet Mission) নামে পরিচিত।
মন্ত্রী মিশনের প্রস্তাবসমূহ
মন্ত্রী মিশনের প্রস্তাবগুলি বা পরিকল্পনাগুলি হল-
- ব্রিটিশ শাসিত ভারত ও দেশীয় রাজ্যগুলিকে নিয়ে একটি যুক্তরাষ্ট্র গঠন করা হবে।
- প্রদেশগুলিতে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন প্রবর্তিত হবে এবং কেন্দ্রের হাতে কেবলমাত্র পররাষ্ট্র, দেশরক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার দায়িত্ব থাকবে।
- হিন্দুপ্রধান প্রদেশগুলিকে ‘ক’, মুসলিম প্রধান প্রদেশগুলিকে ‘খ’ এবং বাংলা ও আসামকে ‘গ’ শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
- প্রদেশগুলি নিজেদের শাসনতন্ত্র নিজেরাই রচনা করবে এবং ইচ্ছে করলে একই স্বার্থবিশিষ্ট প্রদেশগুলি (যেমন- ক, খ, গ) জোট বাঁধতে পারবে।
- প্রত্যেক শ্রেণি ও দেশীয় রাজ্যগুলির নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে সংবিধান সভা ও গণপরিষদ গঠিত হবে। এই গণপরিষদ ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের শাসনতন্ত্র রচনা করবে।
- শাসনতন্ত্র রচিত না হওয়া পর্যন্ত ভারতের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শাসন পরিচালনা করবে।