রেনেসাঁসের বৈশিষ্ট্য লেখো – আজকের পর্বে রেনেসাঁসের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হল।
রেনেসাঁসের বৈশিষ্ট্য লেখো
রেনেসাঁসের বৈশিষ্ট্য লেখো |
মধ্যযুগের শেষ পর্বে ইউরোপে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিতে যে ব্যাপক পরিবর্তনের সূত্রপাত হয়, তা সাধারণত রেনেসাঁস বা নবজাগরণ নামে পরিচিত। রেনেসাঁসের নানাবিধ বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। যথা-
যুক্তিবাদের বিকাশ
যুক্তিবাদের বিকাশ ছিল নবজাগরণের মূল বৈশিষ্ট্য। নবজাগরণ মানুষকে মধ্যযুগীয় অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের গন্ডীবদ্ধ দশা থেকে মুক্ত করে এবং সবকিছুকে যুক্তিতর্কের মাধ্যমে ও বিচারবোধের নিরিখে যাচাই করে গ্রহণ করতে শেখায়।
মানবতাবাদ
মানবতাবাদ ছিল রেনেসাঁস যুগের একটি প্রধান শাখা ও বৈশিষ্ট্য। এর মূল কথা ছিল, আধ্যাত্মিক বিষয়গুলির পরিবর্তে ইহলৌকিক জগতের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা এবং মানুষের হিতসাধন। ফ্রান্সিসকো পেত্রার্ক, মাইকেল অ্যাঞ্জেলো, মেকিয়াভেলি, লিওনার্দো-দ্য-ভিঞ্চি প্রমুখ ছিলেন রেনেসাঁস যুগের উল্লেখযোগ্য মানবতাবাদী।
শিল্পকলায় পরিবর্তন
রেনেসাঁস মধ্যযুগীয় গতানুগুতিক শিল্পচর্চা ভেঙে দিয়ে নিয়ে আসে জীবনমুখী শিল্পচর্চা। ফলে নিষ্প্রাণ শিল্পচর্চা হয় প্রাণস্বচ্ছল। শিল্পে প্রস্ফুটিত হয় মানুষের জীবন, প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলি, জীবজন্তু প্রভৃতি। লিওনার্দো-দ্য- ভিঞ্চি, রাফায়েল মাইকেল অ্যাঞ্জেলো প্রমুখের শিল্পকলার মধ্য দিয়ে রেনেসাঁসের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত হয়েছিল।
ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তা ও চেতনা
ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তা ও চেতনা রেনেসাঁসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। রেনেসাঁস ধর্মকে যেমন অস্বীকার করেনি, তেমনি এটিকেই একমাত্র জীবনসর্বস্ব করেও তোলেনি। ধর্মীয় প্রভাব থেকে ব্যক্তিকে মুক্ত করতে রেনেসাঁস বিশেষভাবে সাহায্য করেছিল।
ভৌগোলিক আবিষ্কার
রেনেসাঁসের মাধ্যমে মানুষ ভৌগোলিক আবিষ্কারের অনুপ্রেরণা লাভ করে। এসময় সামাজিক জীবনযাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মনে অজানাকে জানার আগ্রহ প্রবলভাবে বৃদ্ধি পায়। এই আগ্রহের কারণেই মানুষ দুঃসাহসে ভর করে নতুন নতুন দেশ ও জলপথ আবিষ্কারে রত হয়। তাই ভৌগোলিক আবিষ্কার রেনেসাঁস যুগের বৈশিষ্ট্য বহন করে।