তেল কূটনীতি বলতে কী বোঝো? কীভাবে ‘তেল কূটনীতি’ (Oil Diplomacy) উপসাগরীয় সংকটের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছিল |
| তেল কূটনীতি বলতে কী বোঝো? কীভাবে ‘তেল কূটনীতি’ (Oil Diplomacy) উপসাগরীয় সংকটের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছিল সে সম্পর্কে বিশদে আলোচনা করো। |
তেল কূটনীতি
ইরান, ইরাক, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব ইত্যাদি তেল উৎপাদক দেশের উপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নির্ভরশীল ছিল। আমেরিকা-সহ বহু দেশ এই তেলের ভাণ্ডারগুলির উপর দখল কায়েম করতে সচেষ্ট হয়, আবার তেল উৎপাদক দেশগুলি নিজেদের মধ্যে সংঘাতে লিপ্ত ছিল। এই পরিস্থিতিই তেল কূটনীতি (Oil Diplomacy) নামে পরিচিত।
তেল বাণিজ্য থেকে প্রাপ্ত মুনাফার দ্বারা মার্কিন অর্থনীতিকে মজবুত করা ছিল আমেরিকার তেল কূটনীতির প্রধান লক্ষ্য।
তেল কূটনীতির বিভিন্ন পর্যায়
(ক) ব্রিটেন, রাশিয়া ও ইরানের চুক্তি
(খ) মার্কিন অংশীদারিত্ব কায়েম
আমেরিকা উপলব্ধি করে তার নিজের. সঞ্চিত তেল আগামী দিনের জন্য যথেষ্ট নয়। তাই ফ্রান্স ও ব্রিটেনের মধ্যে স্বাক্ষরিত সান রেমো চুক্তির বিরোধিতা করে আমেরিকা। ফলে তুর্কি পেট্রোলিয়াম কোম্পানি-তে মার্কিন অংশীদারিত্ব কায়েম হয়।
(গ) আন্তর্জাতিক সমস্যা সৃষ্টি
রাশিয়ার তেল অধিকার স্থাপনের উদ্যোগের বিরুদ্ধে ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরব হয় (১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দ)। ফলে তেল কূটনীতি এক আন্তর্জাতিক সমস্যায় রূপান্তরিত হয়।
(ঘ) তৈলখনির জাতীয়করণ
ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তেলের অধিকারের প্রশ্নে রুশবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ইরানের প্রধানমন্ত্রীকে প্ররোচিত করে। ইরানের সংসদ মজলিশ-এ এক আইন পাস করিয়ে তেলের খনিগুলিকে জাতীয়করণ করার ব্যবস্থা করা হয় (১৯৫১ খ্রিস্টাব্দের ২৪ এপ্রিল)।
(ঙ) সাদ্দাম হোসেনের ইরান আক্রমণ
মার্কিন সাহায্য নিয়ে ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ইরান আক্রমণ করেন (১৯৮০ খ্রিস্টাব্দ, সেপ্টেম্বর)। এতে বহু মুসলিম (আরবের মুসলমান নয়) ও ইরানি সেনা মারা যায়।
(চ) উপসাগরীয় সংকট
মার্কিন তেল কোম্পানিগুলির স্বার্থরক্ষা এবং রাজনৈতিক আধিপত্য বজায় রাখার জন্য ইরাক, ইরান ও কুয়েতকে কেন্দ্র করে একটি সংকট ও যুদ্ধ দেখা দেয়, যার প্রধান শক্তি ছিল আমেরিকা। এটি উপসাগরীয় সংকট বা Gulf Crisis নামে পরিচিত। প্রধানত ইরাক-ইরান যুদ্ধ (১৯৮০-৮৮ খ্রিস্টাব্দ), প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধ (১৯৯০-৯১ খ্রিস্টাব্দ) এবং দ্বিতীয় উপসাগরীয় যুদ্ধ (২০০৩-০৬ খ্রিস্টাব্দ)-এর মধ্য দিয়ে উপসাগরীয় সংকটের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
ইরাক-ইরান যুদ্ধ
মার্কিন উসকানি ও সাহায্যে ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ইরান আক্রমণ করলে (১৯৮০ খ্রিস্টাব্দ) শুরু হয় ইরাক-ইরান যুদ্ধ। ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে এই যুদ্ধের অবসান ঘটে।
%20%E0%A6%89%E0%A6%AA%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC%20%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%95%E0%A6%9F%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%83%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B6%20%E0%A6%98%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%9B%E0%A6%BF%E0%A6%B2%20%E0%A6%B8%E0%A7%87%20%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A7%87%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A6%A6%E0%A7%87%20%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%8B%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A6%BE%20%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8B.jpg)