জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের মূল্যায়ন করো

জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের মূল্যায়ন করো

জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের মূল্যায়ন করো
জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের মূল্যায়ন করো।

জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের মূল্যায়ন

নির্জোট আন্দোলনের অবদান সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হল-

(ক) উপনিবেশবাদের অবসানে

এশিয়া-আফ্রিকার জাতীয় আন্দোলনের সাফল্য, জাতিপুঞ্জের অভ্যন্তরে নিরন্তর চাপ সৃষ্টি প্রভৃতির মাধ্যমে উপনিবেশবাদের অবসানে জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন কার্যকরী ভূমিকা পালন করেছিল।

(খ) অস্ত্র প্রতিযোগিতা ও পারমাণবিক অস্ত্রের বিপদ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতে

জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলি অস্ত্র প্রতিযোগিতার কুফল ও পরমাণু অস্ত্রের বিপদ সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করে চলেছে। নিরস্ত্রীকরণ, মারণাস্ত্রের পরীক্ষা বন্ধ করা প্রভৃতির উপর গুরুত্ব প্রদানের মধ্য দিয়ে জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন বিশ্বরাজনীতিতে এক নতুন মাত্রা সংযোজন করেছে।

(গ) দ্বিমেরুকেন্দ্রিকতার অবসান

জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রে দ্বিমেরুকেন্দ্রিকতার অবসান ঘটাতে সাহায্য করেছে। জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন ছিল ঠান্ডা যুদ্ধের বিরুদ্ধে একটি সংঘবদ্ধ প্রতিবাদ।

(ঘ) বর্ণবৈষম্যের প্রতিবাদে

দক্ষিণ আফ্রিকা-সহ বিভিন্ন দেশের বর্ণবিদ্বেষী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে মানবাধিকারকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

(ঙ) জাতিপুঞ্জে চাপসৃষ্টিকারী একক হিসেবে ভূমিকা

জোটনিরপেক্ষ দেশগুলি জাতিপুঞ্জে চাপসৃষ্টিকারী একক হিসেবে পরিচিত। জাতিপুঞ্জের অনেক প্রস্তাবেই জোটনিরপেক্ষ দেশগুলি চাপসৃষ্টিকারী একক গোষ্ঠী হিসেবে একত্রে ভোটদান করেছে। New International Economic Order, United Nations Development Programme প্রভৃতি উন্নয়নমূলক কর্মসূচি সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ জোটনিরপেক্ষ দেশসমূহের চাপেই গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছে।

মূল্যায়ন

জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন বিশ্বরাজনীতিতে এক নতুন পথের সন্ধান দেয়। কিন্তু সদস্যরাষ্ট্রগুলির স্বার্থ, পারস্পরিক দ্বন্দু এবং প্রাতিষ্ঠানিক ত্রুটি ইত্যাদি সীমাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। তবে সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম।

Leave a Comment