দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা ভাষাবিজ্ঞান ও তার শাখাপ্রশাখা ছোটো প্রশ্ন ও উত্তর

সূচিপত্র

দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা ভাষাবিজ্ঞান ও তার শাখাপ্রশাখা ছোটো প্রশ্ন ও উত্তর
দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা ভাষাবিজ্ঞান ও তার শাখাপ্রশাখা ছোটো প্রশ্ন ও উত্তর

ভাষা কী?

ভাষা হল মানুষের বাগ্যন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত ধ্বনিগত প্রতীকের সমবায় যার মাধ্যমে জনগোষ্ঠী পরস্পরের মধ্যে ভাববিনিময় করে।

‘আধার’ ও ‘আধেয়’ কী?

‘আধার’ হল ধ্বনি বা ধ্বনিগুচ্ছ, যার সাহায্যে ভাষা আত্মপ্রকাশ করে। ‘অন্যদিকে ‘আধেয়’ হল অর্থ, যার দ্বারা শ্রোতা বক্তার মনোভাব বুঝতে পারে।

ভাষাবিজ্ঞানের কাজ কী?

বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ভাষার বিভিন্ন দিক আলোচনা করাই ভাষাবিজ্ঞানের কাজ।

ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনায় কোন ভাষার গুরুত্ব বেশি এবং কেন?

ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনায় মুখের ভাষার গুরুত্ব অনেক বেশি, কারণ মুখের ভাষা অনেক বেশি পরিবর্তনশীল।

মুখের ভাষা পরিবর্তনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক কী কী?

মুখের ভাষা পরিবর্তনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল অঞ্চলভেদ ও কালভেদ।

কে, কত খ্রিস্টাব্দে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সূত্রপাত করেন?

স্যার উইলিয়াম জোন্স ১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সূত্রপাত করেন।

স্যার উইলিয়াম জোন্স সংস্কৃত ভাষার সঙ্গে যেসব ভাষার প্রচুর মিল খুঁজে পেয়েছিলেন, তার মধ্যে দুটি ভাষার নাম লেখো।

স্যার উইলিয়াম জোন্স সংস্কৃত ভাষার সঙ্গে যেসব ভাষার প্রচুর মিল খুঁজে পেয়েছিলেন তার মধ্যে দুটি ভাষা-গ্রিক, লাতিন।

বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়গুলি কী কী?

বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান সমকালীন ভাষার গঠনরীতি বিচার ও বিশ্লেষণ করে। বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের মতে ভাষার প্রধান আলোচনার বিষয় চারটি-ধ্বনিবিজ্ঞান ও ধ্বনিতত্ত্ব, রূপতত্ত্ব, বাক্যতত্ত্ব এবং শব্দার্থতত্ত্ব।

Semantics-এর অর্থ কী?

‘Semantics’-এর অর্থ হল শব্দার্থতত্ত্ব।

প্রধান ভাষাবিজ্ঞান আলোচনার পাঁচটি শাখা কী কী?

ভাষাবিজ্ঞান আলোচনার পাঁচটি শাখা হল-ধ্বনিবিজ্ঞান (Phonetics), ধ্বনিতত্ত্ব (Phonology) রূপতত্ত্ব (Morphology), বাক্যতত্ত্ব (Syntax) এবং শব্দার্থতত্ত্ব (Semantics)।

ফলিত ভাষাবিজ্ঞানের ভাগগুলি কী কী?

ফলিত ভাষাবিজ্ঞানের ভাগগুলি হল যথাক্রমে-সমাজভাষাবিজ্ঞান, মনোভাষাবিজ্ঞান, স্নায়ুভাষাবিজ্ঞান, নৃভাষাবিজ্ঞান, শৈলীবিজ্ঞান এবং অভিধানবিজ্ঞান।

সমাজভাষাবিজ্ঞানের সংজ্ঞা দাও।

ভাষা সমাজে কীভাবে কাজ করে এবং সমাজ ভাষার উপর কীভাবে প্রভাব বিস্তার করে, তা যে শাস্ত্র আলোচনা করে; তাকেই বলে সমাজভাষাবিজ্ঞান।

রেজিস্টার কী?

উপলক্ষ্য অনুযায়ী ভাষার বা উপভাষার বদলকে সমাজ-ভাষাবিজ্ঞানীরা রেজিস্টার বলে।

কোড কী?

কোনো ব্যক্তি বিশেষ উপভাষার যে বিশেষ রীতি ব্যবহার করে, তাকে বলে কোড।

কোড-বদল কাকে বলে?

কোনো ব্যক্তি বিশেষ উপভাষার যে বিশেষ রীতি ব্যবহার করে তাকে কোড বলে। সেই ব্যক্তি তার ভাষা যদি পরিস্থিতি অনুযায়ী বদলে নেয়, তবে তাকে বলে কোড-বদল।

প্রয়োগমূলক সমাজভাষাবিজ্ঞানের বিষয়গুলি কী কী?

মাতৃভাষা শেখানোর পদ্ধতি, অন্য ভাষা শেখার পদ্ধতি আবিষ্কার, অনুবাদনীতি, লিপি প্রণালীর আবিষ্কার, পরিমার্জনা ও সংশোধন, বানান-সংস্কার, ভাষা পরিকল্পনার দিক থেকে রাষ্ট্রভাষা ও সংযোগের ভাষা ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ-এসবই প্রয়োগমূলক সমাজভাষাবিজ্ঞানের অন্তর্গত।

মস্তিষ্ককে ভাষা শেখার ব্যবস্থা কে বলেছেন?

মস্তিষ্ককে ভাষা শেখার ব্যবস্থা বলেছেন নোয়াম চমস্কি।

LAD ও LAS কী?

মানুষের মস্তিষ্কে একটা ভাষা-প্রত্যঙ্গ রয়েছে, যার নাম ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যাকুইজিশন ডিভাইস। তাকেই সংক্ষেপে LAD বলে। আর মানুষের মস্তিষ্কে যে ভাষা শেখার প্রক্রিয়া ঘটে থাকে, সেটিই হল LAS-ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যাকুইজিশন সিস্টেম।

স্নায়ুভাষাবিজ্ঞান মূলত কী?

স্নায়ুভাষাবিজ্ঞান মূলত মস্তিষ্ক ও ভাষা এই দুইয়ের মেলবন্ধন। এই ভাষাবিজ্ঞান মানবমস্তিস্কের সঙ্গে ভাষার সম্পর্ক এবং ভাষাব্যবহারগত সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে।

ভাষার ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের বাম গোলার্ধের কাজ কী কী?

ভাষার সৃষ্টিতে, প্রয়োগে এবং সংযোগস্থাপনে মস্তিষ্কের বাম গোলার্ধ বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে।

নৃভাষাবিজ্ঞানের মূল ব্যবহার কী?

নৃভাষাবিজ্ঞান মূলত আদিম জনজাতির কথ্যভাষার বিশ্লেষণ ও তথ্যসংগ্রহ করে।

‘শৈলী’ বলতে কী বোঝায়?

‘শৈলী’ বলতে বোঝায় কোনো রচনা বা রচয়িতার নিজস্বতাকে।

শৈলীবিজ্ঞান’ কাকে বলে?

ভাষার বিশিষ্টতার আলোচনায় ভাষার রূপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই রূপ আসলে লেখকের লেখার শৈলীর উপর নির্ভর করে। কোনো লেখকের লেখার এই শৈলী বিশ্লেষণকেই শৈলীবিজ্ঞান বা Stylistics বলা হয়।

‘লাঙ্’ ও ‘পারোল’ কী?

ফের্দিনী দ্য সোস্যুর ভাষার নানা উপাদান এবং তাদের পরস্পরের মধ্যে সম্পর্কের মূল সংবিধি, ভাষার বিভিন্ন উপাদান ও উপাদানগুলির পারস্পরিক সম্পর্কের জালবিন্যাসকে বলেছেন লাঙ্। পারোল হল লাঙ্-সংবিধিগুলিকে মান্য করেও ভাষা ব্যবহারের উপাদান নির্বাচন ও প্রতিস্থাপনের মধ্য দিয়ে নিজস্ব একটি বিন্যাসে স্পষ্ট ও প্রকট বাচনক্রিয়া।

Lexicography কী?

ভাষাবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা অভিধান বিজ্ঞান হল Lexicography।

অভিধান বিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় কী?

বৈজ্ঞানিক উপায়ে একটি আদর্শ ব্যবহারযোগ্য অভিধান প্রণয়নের কাজ অভিধান বিজ্ঞানের বিষয়বস্তু। অভিধান কীভাবে তৈরি করা হবে, কীভাবে শব্দচয়ন হবে, শব্দের অর্থ কীভাবে বিন্যস্ত হবে এবং শব্দের ব্যুৎপত্তি ও শব্দগুলির অর্থানুযায়ী প্রয়োগ অভিধান বিজ্ঞান আলোচনা করে।

ভারতে অভিধান রচনার সূত্রপাত কে করেন?

ভাষাবিজ্ঞানী যাক্স ‘নিরুক্ত’ লেখার মাধ্যমে অভিধান রচনার সূত্রপাত করেন।

‘Dictionarius’ শব্দটি কে, কবে প্রথম ব্যবহার করেন?

এয়োদশ শতাব্দীতে ‘অভিধান’ বোঝাতে জন গারল্যান্ড প্রথম ‘Dictionarius’ শব্দটি ব্যবহার করেন।

‘Dictionary’ শব্দটি কবে, কোথায় পাওয়া যায়?

১৫৩৮ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজি ‘Dictionary’ শব্দটি পাওয়া যায় স্যার থমাস এলিয়টের ল্যাটিন-ইংরেজি অভিধানে।

‘একভাষিক ও দ্বিভাষিক অভিধান কাকে বলে?

যে অভিধানে এক ভাষার শব্দকে সেই ভাষাতেই ব্যাখ্যা করা হয়, তা হল একভাষিক অভিধান। যে অভিধানে এক ভাষার শব্দ অন্য ভাষায় ব্যাখ্যা করা হয় সেই অভিধানকে বলে দ্বিভাষিক অভিধান।

Leave a Comment