শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন-মুহূর্তটি কেন দুঃখের? এই দুঃখবোধ থেকে বক্তা কী সংকল্প গ্রহণ করেছিল? |
দুঃখের প্রকৃত কারণ
সুখ-দুঃখের আবর্তনে আবর্তিত যে মনুষ্য জীবন, তার দুঃখের নেপথ্যে নানা লৌকিক কারণ বর্তমান। আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের আবেগদীপ্ত চরিত্র তপনের জীবনেও ঘটে যাওয়া দুঃখময় অনুভূতির বিশেষ কারণ ছিল। প্রায় না চাইতেই পেয়ে যাওয়ার মতো তপনের লেখা জীবনের প্রথম গল্পটি ‘প্রথম দিন’ শিরোনামে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশ করে দিয়েছিলেন তার সাহিত্যিক মেসো। এই ঘটনায় অপ্রত্যাশিত সুখের শিখরে পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল তপনের। কিন্তু একদিকে নিজের বাড়িতেই তার লেখা নিয়ে বিদ্রুপ এবং অন্যদিকে ‘কারেকশান’-এর নামে ছোটোমেসোর দ্বারা তপনের গল্পটির সামগ্রিক পরিবর্তন তপনের মনকে ভয়ানক আঘাত করেছিল। সে কারণেই ওই মুহূর্তটি তার কাছে হয়ে উঠেছিল দুঃখের।
দুঃখবোধ থেকে জাত সংকল্প
এই দুঃখবোধে তপন প্রথমে আবেগের বশে কান্নায় ভেঙে পড়লেও পরে সে তার মনকে শক্ত করে। সে গভীরভাবে সংকল্প করে যদি কখনও সে তার লেখা ছাপতে দেয়, তবে সেই লেখা সে নিজে গিয়ে পত্রিকার দপ্তরে জমা দেবে। কারো কোনো সাহায্য নেবে না। সেই অপটু লেখা যদি পত্রিকার সম্পাদকের দ্বারা বাতিলও হয়, তাহলেও তপন দুঃখিত হবে না। কারণ সেক্ষেত্রে তপনকে শুনতে হবে না অন্য কেউ তপনের লেখা ছাপিয়ে দিয়েছে। সবচেয়ে বড়ো কথা নিজের লেখা গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়তে হবে না তাকে।