আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন – ‘তার’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? ‘আজ’ বলতে কোন্ দিনটির কথা বলা হয়েছে? সেটি কী কারণে বক্তার কাছে সবচেয়ে দুঃখের দিন?
আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন।’- ‘তার’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? ‘আজ’ বলতে কোন্ দিনটির কথা বলা হয়েছে? সেটি কী কারণে বক্তার কাছে সবচেয়ে দুঃখের দিন? |
প্রখ্যাত সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে ‘তার’ বলতে গল্পটির প্রধান চরিত্র তপনকে বোঝানো হয়েছে।
‘আজ’ দিনটির স্বরূপ
‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকার যে সংখ্যায় তপনের ‘প্রথম দিন’ গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল, সেই সংখ্যাটি নিয়ে যেদিন লেখক মেসো তপনের বাড়িতে এসে এসেছিলেন, ‘আজ’ বলতে সেইদিনের কথাই বলা হয়েছে।
তপনের দুঃখ পাওয়ার কারণ অনুসন্ধান
তপন অপ্রত্যাশিতভাবে তার সাহিত্যিক ছোটোমেসোর আনুকূল্য লাভ করে। মেসো প্রতিশ্রুতি দেন যে, তপনের লেখা গল্পটি সামান্য সংশোধন করে তিনি ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবেন। তপনের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসানে ছোটোমাসি আর ছোটোমেসো উপস্থিত হন তপনদের বাড়িতে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকার সেই সংখ্যা হাতে, যেখানে তপনের লেখা গল্প প্রকাশিত হয়েছে। বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায় এই উপলক্ষ্যে। কিন্তু কেবলমাত্র মেসোর করে দেওয়া গল্পের ‘কারেকশান’ ও তার মাহাত্ম্যের কথাই জোরালোভাবে চর্চিত হতে থাকে, যেন তপনের এক্ষেত্রে কোনো কৃতিত্বই নেই।
বাড়ির আবহে তপনের আকাঙ্ক্ষিত আনন্দ বিস্বাদ হতে শুরু করে। এরপর নিজের লেখা মুদ্রিত গল্প মায়ের আদেশে পাঠ করতে গিয়ে প্রচণ্ড মানসিক ধাক্কা খায় তপন। সে দেখে তার নামে মুদ্রিত গল্পটির সম্পূর্ণটাই বদলে দিয়েছেন মেসো। সেই গল্পে একমাত্র শিরোনামটি ছাড়া তপনের নিজস্বতা কিছু নেই। এই ঘটনায় তপন এতটাই স্তম্ভিত এবং মর্মাহত হয় যে, সে কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলে এবং নীরবে লুকিয়ে চোখের জল ফেলে। দিনটিকে তাই তপনের সবচেয়ে দুঃখের দিন বলে মনে হয়।
আরও পড়ুন – শৈশবের স্মৃতি রচনা