তপন কৃতার্থ হয়ে বসে বসে দিন গোনে।”-কী কারণে তপন দিন গুনছিল? তার দিন গোনার ফল কী হয়েছিল? |
দিন গোনার কারণ
বাংলার অন্যতম বিশিষ্ট সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পটির প্রধান চরিত্র তপন অত্যন্ত সাহিত্যানুরাগী। সেই অনুরাগ থেকে সে গল্প লিখতে শুরু করে। বিশেষত, তার প্রিয় ছোটোমাসির সঙ্গে এক নামি লেখকের বিয়ে হওয়ায় সেই উৎসাহ আরও বেড়ে যায়। এদিকে ছোটোমাসির তৎপরতায় গল্পটি নতুন মেসোর কাছে পৌঁছোয়। নতুন মেসো তখন তপনের গল্পের বিষয় নির্বাচনের প্রশংসা করে জানান, গল্পটি সামান্য কারেকশান করে তিনি সেটা ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবেন। এই কারণে তিনি গল্পটি সঙ্গে করে নিয়ে চলে যান। তাই তপন তার গল্প ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হওয়ার প্রতীক্ষায় আকুলভাবে দিন গুনছিল।
দিন গোনার ফল
তপনের অপেক্ষার ফল সুখকর হয়নি। লেখক নতুন মেসো তপনকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলেও ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় তপনের নামে মুদ্রিত গল্পটি তপন মায়ের অনুরোধে সবার সামনে পাঠ করতে গিয়ে আবিষ্কার করে সামান্য কারেকশান নয়, মেসো সম্পূর্ণ গল্পটিই তার নিজস্ব দক্ষতায় লিখে দিয়েছেন। যা তপনের নিজের লেখা নয়, মেসোের করুণায় তা তার নামে প্রকাশিত হয়েছে দেখে লজ্জায় এবং আত্মাভিমানে তপন ব্যথিত হয়। সকলের আড়ালে গিয়ে কেঁদে ফেলে সে। মনে মনে শপথ নেয় তার নিজের লেখা যদি কখনও কোনো পত্রিকায় ছাপানোর যোগ্য হয় তবে সে নিজে গিয়েই ছাপাতে দেবে, এ বিষয়ে তার তৃতীয় কোনো ব্যক্তির সহানুভূতির প্রয়োজন নেই।