মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শোচনীয়- মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শোচনীয় কেন? এই শোচনীয় অবস্থার পরিচয় দাও।

"মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শোচনীয়।"- মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শোচনীয় কেন? এই শোচনীয় অবস্থার পরিচয় দাও
“মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শোচনীয়।”- মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শোচনীয় কেন? এই শোচনীয় অবস্থার পরিচয় দাও।”
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে!’ গল্পের মৃত্যুঞ্জয় ব্যতিক্রমী চরিত্র। একদিন অফিসে যাওয়ার সময় ফুটপাথে অভুক্ত মানুষের মৃত্যু দৃশ্য দেখে তার মনে গভীর হতাশার সৃষ্টি হয়। সেই আঘাত তার শরীরেও প্রভাব ফেলে। একজন অনুভূতিশীল মানুষ হিসেবে সে ওই ক্ষুধার্ত মানুষের যন্ত্রণা উপলব্ধির চেষ্টা করে এবং প্রায়শ্চিত্ত করার নেশায় মেতে ওঠে।

মৃত্যুঞ্জয় প্রথমে তার মাসের পুরো বেতন রিলিফ ফান্ডে দিয়ে দেয়। সে অফিসের কাজে অমনোযোগী হয় আর আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। পরিবর্তে শহরের ফুটপাথে-ফুটপাথে ঘুরে বেড়ায়। ক্রমশ সে দুর্ভিক্ষ পীড়িত মানুষদের সঙ্গে একাত্ম হওয়ার চেষ্টা করে, তাদের দুঃখের কাহিনি উপলব্ধি করতে চায়। এসব কারণে মৃত্যুঞ্জয় সংসারের প্রতি উদাসীন হয়ে পড়ে। মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবারে স্ত্রী-পুত্র-কন্যাসহ নয়জন সদস্য। মৃত্যুঞ্জয়ের উপার্জনে পরিবার সচ্ছলভাবে চলে না, তার উপর মৃত্যুঞ্জয়ের মানবসেবার উদ্যোগের কারণে পরিবারের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ে।

মৃত্যুঞ্জয়ের স্ত্রী স্বামীর ভাবনার সহমর্মী হয়ে স্বামীর মতো একবেলার খাবার না খেয়ে অভুক্তদের বিলিয়ে দেয়। ক্রমশ সে অসুস্থ হয়ে শয্যা নেয়। আর স্বামীর খোঁজে বারবার লোক পাঠায়। তারা খোঁজ না পেয়ে টুনুর মাকে মিথ্যা আশ্বাস দেয়। পরিবারে এমন এক অশান্তি বিরাজ করে যে প্রত্যেক সদস্যই গম্ভীর কাঁদো কাঁদো মুখে বসে থাকে। পরিবারের কর্ত্রী টুনুর মা স্বামীর মতো অভুক্ত মানুষদের সেবার বাসনায় এমনি বুঁদ হয়ে থাকে যে ছেলেমেয়েদের জন্যও ভাবে না বরং শরীর সুস্থ থাকলে সে-ও স্বামীর মতো পথে পথে ঘুরত। ফুটপাথে অভুক্ত মানুষের মৃত্যু দেখে মৃত্যুঞ্জয়ের যে প্রতিক্রিয়া হয়েছিল তার না প্রভাবে পরোক্ষভাবে মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবার ভেঙে যেতে বসেছিল।

Leave a Comment