দরদের চেয়ে ছোঁয়াচে কিছু নেই এ জগতে- মন্তব্যটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করো। মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো

দরদের চেয়ে ছোঁয়াচে কিছু নেই এ জগতে- মন্তব্যটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করো। মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো

"দরদের চেয়ে ছোঁয়াচে কিছু নেই এ জগতে"- মন্তব্যটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করো। মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো
“দরদের চেয়ে ছোঁয়াচে কিছু নেই এ জগতে”- মন্তব্যটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করো। মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
প্রশ্নোদৃত মন্তব্যটি গৃহীত হয়েছে সাম্যবাদের আদর্শে বিশ্বাসী লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে!’ নামক ছোটোগল্প থেকে। গল্পের প্রধান চরিত্র মৃত্যুঞ্জয় অফিস যাওয়ার পথে ফুটপাথে অনাহারক্লিষ্ট মানুষের মৃত্যু প্রত্যক্ষ করে। অনাহারজনিত মৃত্যুর বীভৎসতা তার শরীরে ও মনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। বিষয়টি সে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারে না। অফিসে সহকর্মী নিখিলকে ঘটনাটির বর্ণনা দেওয়ার সময় তার চোখ জলে ভরে ওঠে। এই প্রসঙ্গে নিখিলের মানসিক অবস্থা বোঝাতে আলোচ্য মন্তব্যের অবতারণা করা হয়েছে।
নিখিল অত্যন্ত বাস্তববাদী মানুষ। দুর্ভিক্ষকবলিত সময়ে মানুষের অনাহারে মৃত্যু হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার -এটা সে জানে। তবুও অন্যের দুঃখকষ্ট একজন সহৃদয় মানুষকে সহজেই ছুঁয়ে যায়। তাই মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিক অবস্থা তাকে নাড়িয়ে দেয়- “নিখিলের মনটাও খারাপ হয়ে যায়।” নিজস্ব বিচারবোধ হারিয়ে ঘটনার বীভৎসতায় সে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
সে ভাবতে থাকে দেশের সমস্ত মানুষের দরদ একত্রিত হলেও ক্ষুধার আগুন নিভবে না বরং ইন্ধনে পরিণত হবে। জীবনধারণের যে অন্নে মানুষের স্বাভাবিক দাবি আছে, তা ভিক্ষার মাধ্যমে অর্জন করতে হলে জীবনের মূল্য থাকে না। আগুনের দাহিকাশক্তি অসীম, চিতার আগুনে এতদিন কোটি কোটি মৃতদেহ পোড়ানো হলেও পৃথিবীর সমস্ত জ্যান্ত মানুষকে তা পুড়িয়ে ছাই করতে পারে। নিরন্ন মানুষের সর্বগ্রাসী জঠরাগ্নি এমনই দাহিকাশক্তি সম্পন্ন।

Leave a Comment