গাছেরও যে প্রাণ আছে তা বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু কীভাবে প্রমাণ করেছিলেন তা ব্যাখ্যা করো। |
উদ্দীপক প্রয়োগে (আঘাত, স্পর্শ, দমকা হাওয়া ইত্যাদি) লজ্জাবতী উদ্ভিদের পাতার পত্রকগুলি মুদে যায়, কারণ পত্রকগুলি উদীপ্ত হলে উদ্দীপনা পত্রবৃন্তের গোড়ার কোশে প্রেরিত হয় এবং পত্রমূলের উপাধান (pulvi- nus) কোশ থেকে জল অন্য কোশে স্থানান্তরিত হওয়ায় কোশগুলির রসস্ফীতির পরিবর্তন ঘটে, ফলে পত্রকগুলি নুয়ে পড়ে। উদ্দীপকের প্রভাব মুক্ত হলে আবার পূর্বাবস্থায় ফিরে আসে। অনুরূপ কোশের রসস্ফীতির তারতম্যের দরুন বনচাঁড়ালের পাতার ত্রিফলকের পার্শ্বের পত্রক দুটি পর্যায়ক্রমে ওঠানামা করে।
আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু মহাশয়ও Resonant Recorder, Electric Probe, Crescograph প্রভৃতি যন্ত্রের সাহায্যে উদ্দীপক প্রয়োগে উদ্ভিদের প্রতিক্রিয়া দেখান। তিনি লজ্জাবতী এবং বনচাঁড়াল উদ্ভিদের মধ্যে বৈদ্যুতিক উদ্দীপনা (electrical stimulation) পাঠিয়ে দেখান উদ্দীপনা উদ্ভিদের কাণ্ডের মধ্য দিয়ে পাতায় পৌঁছে পাতাকে নুইয়ে দিচ্ছে বা বনচাঁড়ালের পাতার স্বতঃস্ফূর্ত চলন ঘটাচ্ছে। স্পন্দন যুক্ত অবস্থায় বনচাঁড়ালের পত্রবৃন্ত কেটে দিলে স্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু উপাধানের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উদ্দীপনা প্রয়োগ করলে আবার স্পন্দন ঘটে। এর থেকে প্রমাণিত হয়, গাছেরও প্রাণ আছে।