ভারতীয় নীতিতত্ত্বে মোক্ষলাভের উপায়গুলি কী |
ভারতীয় নীতিতত্ত্বে মোক্ষলাভের উপায়
সিদ্ধান্তগতভাবে উল্লেখ করা যায় যে, প্রায় সমস্ত ভারতীয় দার্শনিক সম্প্রদায়ই এরূপ অভিমত পোষণ করে যে, মোক্ষ মানুষকে অবিদ্যাজনিত দুঃখকষ্ট থেকে মুক্তি দেয়। এই মোক্ষই হল পরম বা শ্রেষ্ঠ পুরুষার্থ। পরম বা শ্রেষ্ঠ পুরুষার্থরূপ মোক্ষলাভের উপায় হিসেবে ভারতীয় দর্শনে জ্ঞানমার্গ, কর্মমার্গ এবং ভক্তিমার্গের পরিচয় পাওয়া যায়। ন্যায়-বৈশেষিক এবং অদ্বৈত বেদান্তীরা জ্ঞানমার্গের মাধ্যমে মোক্ষ বা মুক্তির কথা বলেছেন। সে কারণেই তাঁদেরকে জ্ঞানমার্গীরূপে উল্লেখ করা হয়। তাঁরা তাই বলেন- মোক্ষের জন্য জ্ঞানই হল একমাত্র পথ। কিন্তু বিশিষ্টাদ্বৈতীরা দাবি করেন যে, মোক্ষ বা মুক্তির জন্য একমাত্র উপায় হল ভক্তি। তাঁরা তাই ভক্তির মাধ্যমেই মোক্ষ বা মুক্তির কামনা করেন। সে কারণেই তাঁদেরকে জ্ঞানমার্গীরূপে উল্লেখ করা হয়। তাঁরা তাই বলেন-মোক্ষের জন্য জ্ঞানই হল একমাত্র পথ। কিন্তু বিশিষ্টাদ্বৈতীরা দাবি করেন যে, মোক্ষ বা মুক্তির জন্য একমাত্র উপায় হল ভক্তি। তাঁরা তাই ভক্তির মাধ্যমেই মোক্ষ বা মুক্তির কামনা করেন। সে কারণেই তাঁদেরকে বলা হয় ভক্তিমার্গী। এ ছাড়া আর অন্যান্য ভারতীয় সম্প্রদায়গুলি দাবি করেন যে, জ্ঞান এবং কর্ম-এই উভয়ের মাধ্যমেই মোক্ষ বা নিঃশ্রেয়স লাভ করা যায়। সে কারণেই এই সমস্ত দার্শনিককে বলা হয় জ্ঞান- কর্ম-সমুচ্চয়বাদী। যাইহোক না কেন, মোক্ষলাভের উপায় যেভাবেই সাধিত হোক না কেন, একথা সত্য যে, মোক্ষই হল জীবনের একমাত্র চরম ও পরম কাম্যবস্তু এবং অবশ্যই শ্রেষ্ঠ পুরুষার্থরূপে গণ্য।