ইনসুলিনের উৎস ও কাজ বর্ণনা করো। অথবা, ইনসুলিনের কাজগুলি উল্লেখ করো, ইনসুলিনের কম ক্ষরণের ফল লেখো। |
ইনসুলিনের উৎস
অগ্ন্যাশয়ের আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহ্যানস গ্রন্থির বিটা কোশ (b-cell) থেকে নিঃসৃত হয়।
ইনসুলিনের কাজ
ইনসুলিনকে অ্যান্টি- ডায়াবেটিক হরমোন বলা হয়। এটি মানবদেহে নিম্নলিখিত কাজগুলি সম্পন্ন করে, যেমন- (i) ইনসুলিন কলাকোশে গ্লুকোজ বিশোষণ করে, অর্থাৎ কোশে গ্লুকোজ গ্রহণে সহায়তা করে। (ii) ইনসুলিন কলাকোশে গ্লুকোজ দহনে সহায়তা করে, বিশেষ করে গ্লুকোজকে পাইরুভিক অ্যাসিডে পরিণত করতে সাহায্য করে। (iii) ইনসুলিন যকৃৎ ও পেশি কোশে গ্লুকোজকে গ্লাইকোজেনে পরিণত করে জমা রাখে (গ্লুকোজ থেকে গ্লাইকোজেন সংশ্লেষকে গ্লাইকোজেনেসিস বলে)। (iv) ইনসুলিন প্রোটিন, ফ্যাট ইত্যাদি থেকে গ্লুকোজ উৎপাদনে বাধা দেয়। (যকৃতে প্রোটিন ও ফ্যাট থেকে গ্লুকোজ সৃষ্টিকে নিওগ্লুকোজেনেসিস বা গ্লুকোনিওজেনেসিস বলে)। (v) রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা, বিশেষ করে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে তা কমিয়ে স্বাভাবিক করা ইনসুলিনের প্রধান কাজ।
ইনসুলিনের কম ক্ষরণের ফল
ইনসুলিনের ক্ষরণ কম হলে কলাকোশে গ্লুকোজের দহন হ্রাস পায়, অপরপক্ষে যকৃতে গ্লাইকোজেনেসিস প্রক্রিয়া মন্থর হয়ে পড়ে বা বন্ধ হয়ে যায়; ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ (প্রতি 100 মিলি রক্তে শর্করার স্বাভাবিক পরিমাণ 80-120 মিগ্রা) বেড়ে যায় অর্থাৎ হাইপার গ্লাইসিমিয়া হয়। রক্তে শর্করার পরিমাণ 180 mg হলে মূত্রে শর্করা নির্গত হয়। মূত্রে শর্করা নির্গত হওয়াকে গ্লাইকোসুরিয়া বলে। রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধিজনিত রোগকে ডায়াবেটিস মেলিটাস বা মধুমেহ বলে।