মানুষের দ্বিপদ গমন পদ্ধতি বর্ণনা করো

মানুষের দ্বিপদ গমন পদ্ধতি বর্ণনা করো
মানুষের দ্বিপদ গমন পদ্ধতি বর্ণনা করো।
দুটি পদের সাহায্যে গমন পদ্ধতিকে দ্বিপদ গমন বলে।

দ্বিপদ গমন পদ্ধতি

মানুষের গমন অঙ্গ পা। তবে হাতও গমনে সাহায্য করে। স্থিরভাবে দাঁড়ানোর সময় মানুষের পা-দুটি দেহের ভার বহন করে, কিন্তু হাঁটা বা চলার সময় এই ভার ভূমিসংলগ্ন পদ অর্থাৎ পায়ের পাতার (foot) পর ন্যস্ত থাকে। হাঁটার সময় দেহের ঊর্ধ্বাংশের অর্থাৎ দেহকাণ্ডের অগ্রগতি হয় এবং নিম্নাংশ অর্থাৎ পা-দুটি ভূমির ওপর অবস্থান করে। দেহের ঊর্ধ্বাংশের অগ্রগতিতে দেহের ভারকেন্দ্রের (centre of gravity) পরিবর্তন ঘটে; ফলে দেহকান্ড সামনের দিকে পতনের সম্মুখীন হয় এই পতন রোধ করার জন্য বাঁ-পা সামনের দিকে প্রসারিত হয়। বাঁ-পায়ের অগ্রগতির সময় প্রথমে গ্যাস্ট্রোনেমিয়াস (gastrocnemious) নামক কাফ্ পেশির সংকোচনের ফলে গোড়ালির অস্থিতে চাপ পড়ে ফলে গোড়ালি মাটি থেকে ওপরে উঠে আসে। পরক্ষণে এক্সটেনসর ডিজিটোরিয়াম পেশির সংকোচনে পায়ের সম্মুখভাগও উত্তোলিত হয়। এরপর বাইসেপস্ ফিমোরিস পেশির সংকোচনে পা ওপরের দিকে উত্তোলিত হয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হয়। পা মাটি থেকে সম্পূর্ণ ভাবে উত্তোলিত হয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হলে সমগ্র পেশিগুলি প্রসারিত হয়। পেশি-প্রসারণ ও মাধ্যাকর্ষণজনিত আকর্ষণের ফলে পা মাটিতে পুনরায় নেমে আসে। পদ্ধতিটি ক্রমিক পর্যায়ে একবার বাঁ-পা আবার ডান পায়ে চলতে থাকে, ফলে মানুষ হেঁটে সামনের দিকে অগ্রসর হয়। দৌড়ানোর সময় পদ্ধতিটি দ্রুতগতিতে সম্পন্ন হয়। এইরকম গমনের সময় মানুষের হাতদুটিও পর্যায়ক্রমে সামনে ও পিছনে সঞ্চালিত হতে থাকে। সাধারণত বাঁ-পা এর অগ্রসরের সময় ডান হাত এবং ডান-পা-এর অগ্রসরের সময় বাঁ-হাত প্রসারিত হয়। ফলে দেহের ভারসাম্য বজায় থাকে। গমনের সময় লঘুমস্তিষ্ক ও অন্তঃকর্ণে অবস্থিত অর্ধচন্দ্রাকার নালি দেহের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করে। বিভিন্ন পেশি, অস্থি ও অস্থিসন্ধি গমনে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে।

Leave a Comment