দশম শ্রেণি জীবনবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় প্রাণীদের সাড়াপ্রদান ও রাসায়নিক সমন্বয় হরমোন ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর

সূচিপত্র

দশম শ্রেণি জীবনবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় প্রাণীদের সাড়াপ্রদান ও রাসায়নিক সমন্বয় হরমোন ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর
দশম শ্রেণি জীবনবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় প্রাণীদের সাড়াপ্রদান ও রাসায়নিক সমন্বয় হরমোন ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর

‘কোনো একজন মানুষ দূরের জিনিস স্পষ্ট দেখতে পেলেও জান 1 কাছের জিনিস ভালোভাবে দেখতে পান না। এরকম সমস্যার কারণ ও প্রতিকার কী কী হতে পারে তা অনুমান করে লেখো।

এর কারণ হাইপারমেট্রোপিয়া বা হাইপেরোপিয়া। এক্ষেত্রে চক্ষুগোলকের ব্যাস স্বাভাবিকের তুলনায় ছোটো হওয়ায় বস্তুর প্রতিবিম্ব রেটিনার পিছনে পড়ে ফলে কাছের বস্তু দেখা যায় না।

▶ প্রতিকার: উত্তল লেন্সযুক্ত চশমা ব্যবহার করলে এই ত্রুটি সংশোধিত হয়।

দরজায় ঘণ্টা বাজার শব্দ শুনে তুমি যেভাবে দরজা খুলবে, সেই স্নায়বিক পথটি একটি শব্দছকের মাধ্যমে দেখাও।

দরজার ঘণ্টা বাজার শব্দ শুনে আমি দরজা খুললাম। তার স্নায়বিক পথটি হল গ্রাহক (শ্রুতি যন্ত্র) স্নায়ু কারক (হাতের পেশি)। সংজ্ঞাবহ স্নায়ু স্নায়ুকেন্দ্র আজ্ঞাবহ

মেনিনজেস ও CSF-এর অবস্থান বিবৃত করো।

মেনিনজেস: কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড)-কে বেষ্টন করে অবস্থান করে।

CSF: কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের (মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড) গহ্বরে এবং সাব- অ্যারাকনয়েড স্থানে অবস্থান করে।

অক্ষিগোলকের বিভিন্ন প্রতিসারক মাধ্যমগুলির নাম ক্রমানুসারে লেখো। 

অক্ষিগোলকের প্রতিসারক মাধ্যমগুলি হল কর্নিয়া, অ্যাকুয়াস হিউমর, লেন্স ও ভিট্রিয়াস হিউমর।

নীচের ঘটনাগুলি ঘটলে মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে প্রতিবর্ত ক্রিয়া ঘটে। এই প্রতিবর্ত ক্রিয়ার দুটির গুরুত্ব লেখো-যখন শ্বাসনালিতে খাদ্যকণা ঢুকে পড়ে। যখন নাকের মধ্যে কোনো বিজাতীয় বস্তু ঢুকে পড়ে।

যখন শ্বাসনালিতে খাদ্যকণা ঢুকে পড়ে, তখন কাশি প্রতিবর্ত ক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ফলে শ্বাসনালি থেকে খাদ্যকণা নির্গত হয়ে শ্বাসনালি পরিষ্কার হয়।

যখন নাকের মধ্যে কোনো বিজাতীয় বস্তু ঢুকে পড়ে, তখন হাঁচি প্রতিবর্তের সৃষ্টি হয়। এই বিজাতীয় বস্তু হিস্টামিন ক্ষরণে উদ্দীপনা দেয়, যা নাকের স্নায়ুকোশকে উদ্দীপিত করে হাঁচির প্রতিবর্ত ক্রিয়া সৃষ্টি করে, ফলে বিজাতীয় বস্তু নির্গত হয়ে যায়। জীবনহানি থেকে রক্ষা হয়।

চোখে কোন্ কোন্ দৃষ্টিজনিত ত্রুটি সংশোধনের জন্য অবতল লেন্সযুক্ত এবং উত্তল লেন্সযুক্ত চশমা ব্যবহার করা হয়?

চোখের মায়োপিয়াজনিত ত্রুটি সংশোধনের জন্য অবতল লেন্স এবং হাইপেরোপিয়া বা হাইপারমেট্রোপিয়া ত্রুটি সংশোধনের জন্য উত্তল লেন্সযুক্ত চশমা ব্যবহার করা হয়।

নিম্নলিখিত ক্রিয়াগুলির মধ্যে কোনগুলি সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়া বা কোনগুলি অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়া তা তালিকাভুক্ত করো-সদ্যজাতের স্তন্যপানের ইচ্ছা; সাইকেল চলানো; হাঁচি; ক্ষিপ্রতার সঙ্গে উইকেট কিপারের বল ধরা।

সদ্যজাতের স্তন্যপানের ইচ্ছা-সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়া।

সাইকেল চালানো-অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়া।

হাঁচি-সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়া।

ক্ষিপ্রতার সঙ্গে উইকেট কিপারের বল ধরা-অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়া।

কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র ও প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের অংশগুলো লেখো।

কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড নিয়ে গঠিত এবং প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র 12 জোড়া করোটিয় স্নায়ু ও 31 জোড়া সুষুম্না স্নায়ু নিয়ে গঠিত।

অস্তগামী সূর্য দেখার সময় আমাদের চোখে কী কী পরিবর্তন ঘটে?

অস্তগামী সূর্য অনেক দূরে থাকে। অস্তগামী সূর্যকে দেখার জন্য

চোখের লেন্সের পরিমার্জন ঘটে। চোখের সিলিয়ারি পেশির প্রসারণ লেন্সের ফোকাস দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পায় লেন্স পাতলা বা অবতল হয়→ দূরের বস্তু দৃশ্যমান হয়।

অন্তর্বাহী ও বহির্বাহী স্নায়ুর একটি করে বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

অন্তর্বাহী স্নায়ু সেনসরি নিউরোন দিয়ে গঠিত এবং বহির্বাহী স্নায়ু মোটর নিউরোন দিয়ে গঠিত।

প্রতিবর্ত ক্রিয়া কাকে বলে?

বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ দ্দীপনা গ্রহণ করে তাদের রিসেপটর বা গ্রাহক বলে। এরা ত্বকে, চক্ষুর রেটিনায়, পেশিতে, কন্ডরায়, জিহ্বায়, ঘ্রাণঝিল্লিতে এবং কর্ণের কক্লিয়ার মধ্যে অবস্থিত।

মানুষের অক্ষি গোলকের পেশিগুলির নাম লেখো।

রেকটাস পেশি 4 টি, অবলিক পেশি ২টি, লিভেটর পেশি। টি থাকে।

নিউরোগ্লিয়া কাকে বলে?

স্নায়ুতন্ত্রে যেসব কোশ তারকাকার বা স্বল্প প্রবর্ধকযুক্ত কোশ যারা বিভাজন ক্ষমতাসম্পন্ন কিন্তু স্নায়ুস্পন্দন পরিবহণে অক্ষম তাদের নিউরোগ্লিয়া বলে। স্নায়ুতন্ত্রের কোশ সমষ্টির ৭০% নিউরোগ্লিয়া। এরা ধারক কোশ হিসেবে কাজ করে।

কয়েক প্রকার গ্রাহকের উদাহরণ দাও।

 চাপ গ্রাহক, তাপ গ্রাহক, টান গ্রাহক, বর্ণ গ্রাহক, স্বাদ গ্রাহক, স্পর্শ গ্রাহক, বেদনা গ্রাহক ইত্যাদি।

ইফেকটর কাকে বলে? এর উদাহরণ দাও।

দেহের যেসব অঙ্গ উদ্দীপকের প্রভাবে উদ্দীপিত হয় বা সাড়া দেয় তাদের ইফেকটর বা কারক বলে। যেমন-পেশি, গ্রন্থি ইত্যাদি।

প্রাণীদেহে নার্ভতন্ত্র ও হরমোনের কাজের একটি সাদৃশ্য এবং একটি বৈসাদৃশ্য উল্লেখ করো।

সাদৃশ্য: উভয়েই সংযোগসাধনের কাজ করে। বৈসাদৃশ্য: নার্ভতন্ত্রের ক্রিয়া তাৎক্ষণিক, কিন্তু হরমোনের ক্রিয়া সুদূরপ্রসারী।

স্নায়ু কাকে বলে? এটি কয় প্রকারের?

রক্তবাহ সমন্বিত যোগকলা পরিবেষ্টিত এক বা একাধিক স্নায়ুতন্তুকে বা স্নায়ুতন্তুগুচ্ছকে স্নায়ু বলে। স্নায়ু প্রধানত তিন-প্রকারের। যথা-অ্যাফারেন্ট বা অন্তর্বাহী স্নায়ু, ইফারেন্ট বা বহির্বাহী স্নায়ু এবং মিশ্র স্নায়ু।

বাহক কাকে বলে? এটি কত প্রকারের?

স্নায়ুতন্ত্রের যে উপাদান স্নায়ু-উদ্দীপনা পরিবহণ করে তাদের বাহক বলে। এরা দু-প্রকারের। যথা-সংজ্ঞাবহ এবং আজ্ঞাবহ।

নিজল দানা কোথায় অবস্থিত এবং এদের কাজ কী?

নিজল দানা নিউরোনের কোশদেহের সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত। প্রোটিন সংশ্লেষ করা এদের কাজ।

নিউরোফাইব্রিল কোথায় অবস্থিত এবং এদের কাজ কী?

নিউরোফাইব্রিল স্নায়ুকোশের কোশদেহের সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত)। এরা স্নায়ুকোশের সংকোচন ঘটায়।

অ্যাক্সনের আবরণীগুলি কী কী?

অ্যাক্সনের আবরণীগুলি হল-অ্যাক্সোলেমা, মায়েলিন সিদ্ বা মেডুলারি আবরণ এবং নিউরিলেমা।

র‍্যানভিয়ারের পর্ব কাকে বলে?

অ্যাক্সনের বিচ্ছিন্ন মেডুলারি আবরণের স্থানে নিউরিলেমা সংকুচিত হয়ে যে পর্ব গঠন করে, তাকে র‍্যানভিয়ারের পর্ব বলে।

প্রান্তবুরুশ কাকে বলে?

অ্যাক্সনের শেষপ্রান্ত সূক্ষ্ম শাখান্বিত হয়ে যে বুরুশের আকার গঠন করে, তাকে প্রান্তবুরুশ বলে।

অ্যাক্সন হিলক কাকে বলে?

অ্যাক্সনটি কোশদেহের যে অংশে সংযুক্ত থাকে সেই অংশটিকে অ্যাক্সন হিলক বলে। ওই অংশে মায়েলিন সিদ্ এবং নিউরিলেমা থাকে না।

স্নায়ুর কাজ কী?

স্নায়ুর কাজ হল- (i) রিসেপটর বা গ্রাহক থেকে উদ্দীপনা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে প্রেরণ করা এবং (ii) কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে সাড়াকে কারক অঙ্গে প্রেরণ করা।

অ্যাফারেন্ট স্নায়ু কাকে বলে? এর উদাহরণ দাও।

যে স্নায়ুর মাধ্যমে উদ্দীপনা রিসেপটর থেকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে বাহিত হয়, তাকে অ্যাফারেন্ট স্নায়ু বলে। এই প্রকার স্নায়ু সেনসরি নিউরোন দিয়ে গঠিত হওয়ায় একে সেনসরি বা সংজ্ঞাবহ স্নায়ু বলে। যেমন-অপটিক স্নায়ু।

ইফারেন্ট স্নায়ু কাকে বলে? এর উদাহরণ কী?

যে স্নায়ুর মাধ্যমে উদ্দীপনা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে ইফেকটরে বাহিত হয়, তাকে ইফারেন্ট স্নায়ু বলে। এই প্রকার স্নায়ু মোটর নিউরোন দিয়ে গঠিত হওয়ায় একে মোটর বা চেষ্টীয় স্নায়ু বলে। যেমন-অকিউলোমোটর স্নায়ু।

মিশ্র স্নায়ু কাকে বলে? এর উদাহরণ কী?

যে স্নায়ু সেনসরি ও মোটর উভয় নিউরোন দিয়ে গঠিত, তাকে মিশ্র ANS স্নায়ু বলে। যেমন-ভেগাস স্নায়ু।

মেডুলেটেড স্নায়ু কাকে বলে এবং এটি কোথায় অবস্থিত?

মেডুলাযুক্ত স্নায়ুতন্ত্র দিয়ে গঠিত স্নায়ুকে মেডুলেটেড স্নায়ু বলে। এটি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে অবস্থিত।

নন-মেডুলেটেড স্নায়ু কাকে বলে? এটি কোথায় অবস্থিত?

মেডুলাবিহীন স্নায়ুতন্তু দিয়ে গঠিত স্নায়ুকে নন-মেডুলেটেড স্নায়ু বলে। এই প্রকার স্নায়ু অটোনোমিক স্নায়ুতন্ত্রে অবস্থিত।

স্নায়ুগ্রন্থি কাকে বলে? এর কাজ কী কী?

কয়েকটি স্নায়ুকোশের কোশদেহগুলি মিলিত হয়ে যে গ্রন্থি গঠন করে, তাকে স্নায়ুগ্রন্থি বলে। স্নায়ু সৃষ্টি করা এর প্রধান কাজ।

স্নায়ুসন্ধি বা সাইন্যাপস কাকে বলে?

দুটি নিউরোনের মিলনস্থলকে স্নায়ুসন্ধি বা প্রান্তসন্নিকর্ষ বা সাইন্যাপস বলে। সাইন্যাপসের মাধ্যমে এক নিউরোন থেকে অপর নিউরোনে স্নায়ু-সংবেদ প্রবাহিত হয়।

স্নায়ুসন্ধি কীভাবে গঠিত হয়?

একটি নিউরোনের অ্যাক্সনের শেষ প্রান্তের সঙ্গে অপর একটি নিউরোনের ডেনড্রন বা কোশদেহের মিলনে স্নায়ুসন্ধি গঠিত হয়।

সরল ও জটিল প্রতিবর্ত কাকে বলে?

যে প্রতিবর্ত কেবল সুষুম্নাকাণ্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তাকে সরল প্রতিবর্ত এবং যে প্রতিবর্ত সুষুম্নাকাণ্ড এবং মস্তিষ্ক উভয়ের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তাকে জটিল প্রতিবর্ত বলে।

প্রতিবর্ত চাপ কাকে বলে?

যে স্নায়ুপথে প্রতিবর্ত ক্রিয়ার স্নায়ুস্পন্দন আবর্তিত হয় তাকে প্রতিবর্ত চাপ বলে।

ধূসর বস্তু ও শ্বেত বস্তু কী?

কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে স্নায়ুকোশের কোশদেহ দিয়ে গঠিত বস্তুকে ধূসর বস্তু এবং মায়োলিনযুক্ত অ্যাক্সন দিয়ে গঠিত বস্তুকে শ্বেত বস্তু বলে। উল্লেখ্য, মস্তিষ্কের কেন্দ্রে শ্বেত বস্তু এবং পরিধিতে ধূসর বস্তু থাকে। অপরপক্ষে, সুষুম্নাকাণ্ডের কেন্দ্রে ধূসর বস্তু এবং পরিধিতে শ্বেত বস্তু থাকে।

স্নায়ুসন্ধির কাজ কী?

পূর্ববর্তী নিউরোন থেকে স্নায়ু-সংবেদকে পরবর্তী নিউরোনে পৌঁছে দেওয়া স্নায়ুসন্ধির কাজ।

সহজাত ও অভ্যাসমূলক প্রতিবর্ত বলতে কী বোঝো?

যেসব প্রতিবর্ত বংশগত সূত্রে পূর্বপুরুষ থেকে প্রাপ্ত, তাদের সহজাত প্রতিবর্ত এবং যেসব প্রতিবর্ত জন্মের পর অনুশীলন বা অভ্যাসের মাধ্যমে অর্জিত হয়, তাকে অভ্যাসমূলক প্রতিবর্ত বলে।

গুরুমস্তিষ্কের কাজ কী?

গুরুমস্তিষ্ক প্রাণীদের বুদ্ধি, চিন্তা, স্মৃতি, দর্শন, ঘ্রাণ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে।

লঘুমস্তিষ্কের কাজ কী?

লঘুমস্তিষ্ক প্রাণীদের দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে।

সুষুম্নাশীর্ষকের কাজ কী?

সুষুম্নাশীর্ষক প্রাণীদের হৃদস্পন্দন, শ্বাসক্রিয়া, ঘাম নিঃসরণ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে।

মস্তিষ্কের ভেন্ট্রিকল বলতে কী বোঝো?

মস্তিষ্কের মধ্যে যে প্রকোষ্ঠগুলি থাকে, তাদের ভেন্ট্রিকল বা নিলয় বলে।

ফাইলাম টারমিনেল কাকে বলে?

সুষুম্নাকাণ্ডের শেষপ্রান্তে সরু চুলের মতো অংশ দেখা যায়, একে ফাইলাম টারমিনেল বলে।

যে-কোনো দুটি উল্লেখযোগ্য কাজের নাম করো, যথাক্রমে যার একটি ‘ডেনড্রন’ ও দ্বিতীয়টি ‘অ্যাক্সন’-এর কাজ।

ডেনড্রন রিসেপটর থেকে বা পূর্ববর্তী নিউরোন থেকে স্নায়ু- উদ্দীপনা গ্রহণ করে কোশদেহে প্রেরণ করে। অপরপক্ষে অ্যাক্সন কোশদেহ থেকে স্নায়ু-সংবেদ পরবর্তী নিউরোনে বা কারকে বহন করে।

করপাস ক্যালোসাম কাকে বলে?

গুরুমস্তিষ্কের গোলার্ধদ্বয় যে স্নায়ু-যোজক দিয়ে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাকে করপাস ক্যালোসাম বলে।

ভারমিস কাকে বলে?

লঘুমস্তিষ্কের গোলার্ধদ্বয় যে স্নায়ু-যোজক দিয়ে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাকে ভারমিস বলে।

র‍্যানভিয়ারের পর্ব কাকে বলে?

স্নায়ুকোশের অ্যাক্সনের বিচ্ছিন্ন মায়েলিন সিদ্ অঞ্চলের নিউরিলেমা সংকুচিত হয়ে যে পর্ব গঠন করে, তাকে র‍্যানভিয়ারের পর্ব বলে।

কোল্যাটারাল কাকে বলে?

অ্যাক্সনের র‍্যানভিয়ারের পর্ব থেকে অনেক সময় সূক্ষ্ম শাখা নির্গত হয়, অ্যাক্সনের এরূপ শাখাকে কোল্যাটারাল বলে।

নিউরোট্রান্সমিটার কাকে বলে?

যেসব রাসায়নিক বস্তু স্নায়ুপ্রান্ত থেকে ক্ষরিত হয়ে স্নায়ু-স্পন্দনকে এক নিউরোন থেকে অপর নিউরোনে বা পেশিতে পৌঁছে দেয় তাদের নিউরোট্রান্সমিটার বলে। যেমন-অ্যাসিটাইল কোলিন, অ্যাড্রিনালিন ইত্যাদি।

স্নায়ুতন্ত্রে সাইন্যাপস না থাকলে কী ক্ষতি হবে?

সাইন্যাপসের মধ্য দিয়ে রিলে সিস্টেমের মাধ্যমে স্নায়ু-আবেগ দেহের বিভিন্ন অঙ্গে প্রেরিত হয়। সাইন্যাপস না থাকলে বহিঃপরিবেশ থেকে আগত উদ্দীপনা স্নায়ুর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে যেতে পারবে না এবং কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে সাড়া বা নির্দেশ বিভিন্ন কারক অঙ্গে পৌঁছেতে পারবে না।

ফোরামেন অব ম্যাগনাম কাকে বলে?

করোটির অঙ্কদেশে অবস্থিত যে ছিদ্র দিয়ে সুষুম্নাকাণ্ড নির্গত হয়েছে তাকে ফোরামেন অব ম্যাগনাম বলে।

প্রতিবর্ত ক্রিয়ার দুটি উদাহরণ দাও।

(ⅰ) চোখে তীব্র আলো পড়লে তারারন্ধ্র সংকুচিত হয়। (ii) খাদ্যের দর্শনে বা ঘ্রাণে লালা নিঃসরণ হওয়া।
প্রতিবর্ত ক্রিয়ার দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
(i) প্রতিবর্ত ক্রিয়া অনৈচ্ছিক, (ii) এটি মস্তিষ্কের সাহায্য ছাড়াই ঘটে।

বিজ্ঞানী প্যাভলভ প্রতিবর্ত ক্রিয়াকে কয় ভাগে ভাগ করেছেন?

রুশ বিজ্ঞানী আইভ্যান প্যাভলভ প্রতিবর্ত ক্রিয়াকে দুভাগে ভাগ করেছেন, যেমন- (i) জন্মগত প্রতিবর্ত এবং (ii) অর্জিত প্রতিবর্ত।

জন্মগত প্রতিবর্ত কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

যে সব প্রতিবর্ত পূর্বপুরুষ থেকে প্রাপ্ত এবং কোনো শর্তের অধীন নয়, তাদের জন্মগত প্রতিবর্ত বলে। যেমন-জন্মের সঙ্গে সঙ্গে শিশুর স্তনপানের ইচ্ছা।

অর্জিত প্রতিবর্ত কাকে বলে? উদাহরণ দাও?

যে সব প্রতিবর্ত জন্মগত নয়, বারবার অনুশীলনের মাধ্যমে অর্জিত হয় এবং নির্দিষ্ট শর্তের অধীন, তাদের অর্জিত প্রতিবর্ত বলে। যেমন-শিশুর কথা বলতে শেখা, সাইকেল চালানো ইত্যাদি।

প্রতিবর্ত ক্রিয়ার উপাদানগুলি কী কী?

প্রতিবর্ত ক্রিয়ার উপাদানগুলি হল- (i) গ্রাহক, (ii) সংজ্ঞাবহ নিউরোন (iii) স্নায়ুকেন্দ্র, (iv) আজ্ঞাবহ নিউরোন এবং (v) কারক।

জ্ঞানেন্দ্রিয় কাকে বলে?

প্রাণীদের যে সব গ্রাহক অঙ্গ পরিবেশ থেকে বিশেষ বিশেষ উদ্দীপনা গ্রহণ করে নির্দিষ্ট স্নায়ুর মাধ্যমে স্নায়বিক কেন্দ্রে পাঠিয়ে সেখানকার নির্দেশ পালন করে, তাদের জ্ঞানেন্দ্রিয় বলে।
আমাদের পাঁচটি জ্ঞানেন্দ্রিয়র মধ্যে চোখ অন্যতম, কারণ যা দিয়ে আমরা বহির্জগতের দৃশ্য অনুভব করি তাই চোখ হল দর্শনেন্দ্রিয়।

আমাদের (মানুষের) জ্ঞানেন্দ্রিয়গুলি কী কী?

আমাদের জ্ঞানেন্দ্রিয়গুলি হল-চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা এবং ত্বক।

চক্ষুকে দর্শনেন্দ্রিয় বলে কেন?

আমরা চোখ দিয়ে বহির্জগতের দৃশ্য অনুভব করি তাই চোখকে দর্শনেন্দ্রিয় বলে।

চক্ষুর তিনটি স্তর কী কী?

চক্ষুর তিনটি স্তর হল-স্কেরা, কোরয়েড এবং রেটিনা।

মানব চক্ষুর প্রতিসারক মাধ্যমগুলি কী কী?

চক্ষুর প্রতিসারক মাধ্যমগুলি হল-কর্নিয়া, অ্যাকুয়াস হিউমর,, লেন্স, ভিট্রিয়াস হিউমর।

চক্ষুর আনুষঙ্গিক অংশগুলি কী কী?

চক্ষুর প্রধান আনুষঙ্গিক অঙ্গ হল- (i) অক্ষিপল্লব, (ii) কনজাংটিভা, (iii) অক্ষিপেশি, (iv) অশ্রুগ্রন্থি।

অশ্রুগ্রন্থি কোথায় অবস্থিত? এর কাজ কী?

অশ্রুগ্রন্থি উভয় চোখের অক্ষিকোঠরের ঊর্ধ্বতলে অবস্থিত। অশ্রু নিঃসরণ করে চোখকে সিক্ত রাখা এর কাজ।

অক্ষি প্রকোষ্ঠ দুটি কী কী?

অক্ষি প্রকোষ্ঠ দুটি হল-ভিট্রিয়াস প্রকোষ্ঠ ও অ্যাকুয়াস প্রকোষ্ঠ।

অশ্রুতে কী এনজাইম থাকে? এর কাজ কী?

অশ্রুতে লাইসোজাইম নামক এনজাইম থাকে। এই এনজাইম ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে।

আইরিশ বা কণীনিকা কী? এর কাজ কী?

অক্ষিগোলকের সামনে কর্নিয়ার পিছনে অবস্থিত বৃত্তাকার কালো পর্দাটিকে আইরিশ বা কণীনিকা বলে। এটি তারারন্ধ্রকে ছোটো ও বড়ো করে চোখে আলোক প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করে।

পিউপিল বা তারারন্ধ্র কাকে বলে? এর কাজ কী?

আইরিশের কেন্দ্রে যে ছিদ্র দিয়ে আলো প্রবেশ করে তাকে তারারন্ধ্র বলে। তারারন্ধ্র দিয়ে চোখে আলো প্রবেশ করে।

রেটিনা কাকে বলে? এর কাজ কী?

অক্ষিগোলকের একেবারে ভিতরের দিকে অবস্থিত স্নায়ুকোশ দিয়ে গঠিত স্তরটিকে রেটিনা বলে। রেটিনাতে বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠিত হয়।

রেটিনাতে কী কী স্নায়ুকোশ থাকে? এদের কাজ কী?

রেটিনায় রড ও কোন নামক স্নায়ুকোশ থাকে। রড কোশ আলোক সুবেদী। রড কোশ স্বল্প আলোকে দেখতে সাহায্য করে। কোন কোশ তীব্র আলো ও বর্ণ দেখতে সাহায্য করে।

লেন্স কোথায় অবস্থিত? এর কাজ কী?

লেন্স বা মণি আইরিশের পিছনে অবস্থিত। এটি সাসপেনসরি লিগামেন্ট দিয়ে অক্ষিকোঠরে ঝোলানো থাকে। লেন্স আলোর প্রতিসরণ ঘটিয়ে রেটিনায় ওপর ফোকাস সৃষ্টি করে।

দ্বিনেত্র দৃষ্টি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

যখন দুটি চোখ দিয়ে একসঙ্গে একই বস্তুর প্রতিবিম্ব দেখা যায় তাকে দ্বিনেত্র দৃষ্টি বলে। যেমন-মানুষ, পেঁচা ইত্যাদি।

একনেত্র দৃষ্টি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

যখন দুটি চোখ দিয়ে দুটি আলাদা বস্তুর প্রতিবিম্ব দেখা যায় তখন তাকে একনেত্র দৃষ্টি বলে। যেমন-গোরু, ব্যাং ইত্যাদি।

উপযোজন কাকে বলে?

স্থান পরিবর্তন না করে অক্ষিগোলকের পেশির প্রসারণ ও সংকোচনের মাধ্যমে লেন্সের প্রতিসরাঙ্ক বা স্থূলতা বৃদ্ধি ও হ্রাসের সাহায্যে যে পদ্ধতিতে বিভিন্ন দূরত্বে অবস্থিত বস্তুকে স্পষ্টভাবে দেখা যায় তাকে উপযোজন বলে।

মায়োপিয়া কাকে বলে? কীভাবে এর ত্রুটি দূর করা যায়?

যে দৃষ্টিতে দূরের দৃষ্টি ব্যাহত হয়, কিন্তু নিকটের দৃষ্টি ঠিক থাকে তাকে মায়োপিয়া বলে। অবতল লেন্স যুক্ত চশমা ব্যবহার করলে এই ত্রুটি দূর হয়।

হাইপেরোপিয়া বা হাইপারমেট্রোপিয়া কাকে বলে? কীভাবে এই ত্রুটি দূর করা যায়?

যে দৃষ্টিতে নিকটের দৃষ্টি ব্যাহত হয়, কিন্তু দূরের দৃষ্টি ঠিক থাকে তাকে হাইপোরোপিয়া বা হাইপারমেট্রোপিয়া বলে। অবতল লেন্স যুক্ত চশমা পরলে এই ত্রুটি দূর হয়।

প্রেসবায়োপিয়া কাকে বলে? কীভাবে এই ত্রুটি দূর করা যেতে পারে?

বছর এবং তার বেশি বয়সের লোকদের লেন্স এর স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কাছের বস্তু স্পষ্টভাবে দেখতে পায় না। বাইফোকাল লেন্সযুক্ত চশমা ব্যবহার করলে এই ত্রুটি দূর হয়।

ক্যাটারাক্ট বা ছানি পড়া কাকে বলে? এই ত্রুটি দূর করা হয় কীভাবে?

বয়স্ক লোকদের চোখের লেন্স অস্বচ্ছ হয়ে গেলে দৃষ্টি শক্তি ব্যাহত হয়। একে ক্যাটারাক্ট বা চোখে ছানি পড়া বলে। ছোটো অপারেশন করে অস্বচ্ছ লেন্স সরিয়ে প্লাস্টিকের লেন্স লাগিয়ে দিলে ছানি সেরে যায়।

দূরের ও কাছের বস্তু দেখার জন্য সিলিয়ারি পেশির ভূমিকা লেখো।

দূরের বস্তু দেখার জন্য সিলিয়ারি পেশির ভূমিকা :
সিলিয়ারি পেশির প্রসারণ লেন্স পাতলা ও অবতল হয় দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি দূরের বস্তু দৃশ্যমান। 
কাছের বস্তু দেখার জন্য সিলিয়ারি পেশির ভূমিকা: 
সিলিয়ারি পেশির সংকোচন → লেন্সের বক্রতা বৃদ্ধি লেন্স মোটা ও বেশি উত্তল হয়→ ফোকাস দৈর্ঘ্য হ্রাস পায় কাছের বস্তু দৃশ্যমান।

মেনিনজেস-এর কাজ লেখো।

মেনিনজেস মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ডকে বাহ্যিক আঘাত থেকে রক্ষা করে। মেনিনজেসের পায়া ম্যাটার মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ করে।

স্নায়ুতন্ত্র কাকে বলে?

স্নায়ুকোশ/নিউরোন, নিউরোগ্লিয়া, সাইন্যাপস, নার্ভ, স্নায়ুগ্রন্থি প্রভৃতি সহযোগে গঠিত যে তন্ত্রের দ্বারা প্রাণীকূল পরিবেশের সাথে ও নিজ দেহের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে থাকে তাকে স্নায়ুতন্ত্র বলে। স্নায়ুতন্ত্রের গঠনগত ও কার্যগত একক হল নিউরোন।

নিউরোন ও স্নায়ুর মধ্যে সম্পর্ক লেখো।

প্রতিটি নিউরোন এন্ডেনিউরিয়াম নামক যোগকলার আবরণ দ্বারা আবৃত থাকে। এরূপ এন্ডোনিউরিয়াম আবৃত বেশ কিছু নিউরোন একত্রে বান্ডিল/ ফ্যাসিকিউলি গঠন করে যা পেরিনিউরিয়াম দ্বারা আবৃত হয়। এরূপ পেরিনিউরিয়াম আবৃত কতকগুলি বান্ডিল এপিনিউরিয়াম নামক যোগকলা দ্বারা আবৃত হয়ে স্নায়ু গঠন করে। অর্থাৎ বলা যেতে পারে যে তিন প্রকার যোগ কলার আবরণ বেষ্টিত একাধিক নিউরোন একত্রে স্নায়ু তৈরি করে।

কার্যানুসারে স্নায়ুর শ্রেণিবিভাগ দেখাও।

কার্যানুসারে স্নায়ু তিন প্রকার। যথা-সংজ্ঞাবহ (Afferent/Sen- sory), চেষ্টীয় (Effector/Motor) এবং মিশ্র স্নায়ু (mixed).

গঠন অনুসারে স্নায়ুর শ্রেণিবিভাগ দেখাও।

আপোলার/ মেরুবিহীন-যখন কোশদেহে কোনো প্রবর্ধক থাকে না একমেরু (Unipolar)-একটি মাত্র প্রবর্ধক যুক্ত নিউরোন। দ্বিমেরু (Bipolar)-দুটি প্রবর্ধক যুক্ত। ছদ্ম একমেরু (Pseudounipolar)-কোশদেহ থেকে একটি প্রবর্ধক নির্গত হয়ে দুভাগে ভেঙে যায়। বহুমেরু (Multi-po- lar)-তিন বা তিনের বেশি প্রবর্ধক যুক্ত, নিউরোন।

নিউরোট্রান্সমিটার/নিউরোহিউমর কী?

স্নায়ুকোশের অ্যাক্সনের শেষ প্রান্ত প্রাক্ সন্নিধিস্ফীতি মধ্যস্থিত সাইন্যাপটিক ভেসিকল (প্রান্ত সন্নিকর্ষীয় থলি)-এ উপস্থিত যে তরল এক নিউরোন থেকে আর নিউরোনে স্নায়ু উদ্দীপনা পরিবহণে সাহায্য করে, তাকে নিউরোট্রান্সমিটার বলে। উদা: অ্যাসিটাইল কোলিন ডোপামিন, GABA ইত্যাদি।

মেনিনজেস কী?

কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র যে ত্রিস্তরীয় বহিঃরাবরণ দিয়ে ঢাকা থাকে তাকে মেনিনজেস বলে। বাইরে থেকে ভিতরে এর তিনটি স্তর হল যথাক্রমে ডুরা ম্যাটার, অ্যারাকনয়েড ম্যাটার ও পায়া ম্যাটার।

CSF কী? এর কাজ লেখো।

মস্তিষ্কের কোরয়েড প্লেক্সাস থেকে ক্ষরিত যে হালকা হরিদ্রাভ তরল মস্তিষ্কের চারটি নিলয় ও সুষুম্নাকাণ্ডের কেন্দ্রীয় নালিতে অবস্থান করে তাকে মস্তিষ্ক সুষুম্না রস (CSF) বলে।

কাজ: CNS-র পুষ্টিতে সাহায্য করে, যান্ত্রিক আঘাত থেকে রক্ষা করে, অক্সিজেন সরবরাহ করে, দুষিত বস্তু অপসারণে সাহায্য করে ইত্যাদি।

মেরুদণ্ডী প্রাণীর সাথে অমেরুদণ্ডী প্রাণীর স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান পার্থক্য কোথায়?

মেরুদণ্ডী প্রাণীদের স্নায়ুতন্ত্র ফাঁপা গহ্বর যুক্ত কিন্তু অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের স্নায়ুতন্ত্র নিরেট, গহ্বরবিহীন।

সুষুম্নাকাণ্ডের কাজ লেখো।

সুষুম্নাকাণ্ডের কাজ :
(i) প্রতিবর্ত ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে।

(ii) স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের (ANS)-র কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।

(iii) দেহের বিভিন্ন অঙ্গ ও মস্তিষ্কের মধ্যে সংযোগস্থাপন করে।

(iv) পেশি টান নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে দেহভঙ্গিমা নিয়ন্ত্রণ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও দেহের উয়তা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

করপাস ক্যালোসাম ও ভারমিস কী?

স্তন্যপায়ীদের সেরিব্রাম/গুরুমস্তিষ্কের (Cerebral hemisphercs)-র গোলার্ধ দুটি অঙ্কীয় তল বরাবর যে স্নায়ুযোজক দ্বারা যুক্ত থাকে তাকে করপাস ক্যালোসাম বলে। লঘুমস্তিষ্ক (Cerebellum)-র পার্শ্বগোলক দুটি যে অংশ দ্বারা পরস্পর যুক্ত থাকে তাকে ভারমিস (Vermis) বলে।

ব্রেন স্টেম কী?

মস্তিষ্কের ডায়োসেফালন, মধ্যমস্তিষ্ক, পনস ও মেডালা অবলাংগটা সহযোগে গঠিত দণ্ডের ন্যায় অংশকে ব্রেন স্টেম বলা হয়।

স্নায়ুতন্ত্রে গ্যাংগ্লিয়া (স্নায়ুগ্রন্থি) ও নিউক্লিয়াই (nuclei) বলতে কী বোঝো?

কতকগুলো নিউরোনের কোশদেহের সমষ্টি বা সাইন্যাপসের সমষ্টি যখন CNS-র ধূসর বস্তুতে অবস্থান করে তখন তাকে নিউক্লিয়াই/নিউক্লিয়াস বলা হয়। পক্ষান্তরে যদি এগুলি PNS-এ অবস্থান করে তখন তাকে স্নায়ুগ্রন্থি (Ganglia) বলে।

গুরুমস্তিষ্কের কাজ উল্লেখ করো।

গুরুমস্তিষ্ক দর্শন শ্রবণ, স্মৃতি, বুদ্ধিমত্তা, কথাবার্তা নিয়ন্ত্রণ, স্বাদ, গন্ধ, পরিকল্পনা, বিচার ইত্যাদি কাজ সম্পন্ন করে থাকে।

থ্যালামাসের কাজ লেখো।

মস্তিষ্কের রিলে কেন্দ্র (সিংহদুয়ার বলে পরিচিত), হিসেবে কাজ করে, গুরুমস্তিষ্কের সাথে একযোগে ব্যক্তিত্ব ও সামাজিক আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে, অমার্জিত ইন্দ্রিয়ানুভূতির কেন্দ্রস্থল, দেহের জাগরণ ও সতর্কীকরণ প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে ইত্যাদি।

হাইপোথ্যালামাসের কাজ উল্লেখ করো।

সুপ্রিম কমান্ডার রূপে পিটুইটারিকে নিয়ন্ত্রণ করে দেহের উন্মুতা, ক্ষুধা, তৃন্না, পরিতৃপ্তি, মানসিক আবেগ, যৌন আচরণ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে।

পনস যোজকের কাজ লেখো।

v, vi, vii ও viii-নং করোটিক স্নায়ুর উৎপত্তিস্থল হল পনস, পনস শ্বাসকার্য, লালা ক্ষরণ, অশ্রু ক্ষরণ, মুখের অভিব্যক্তি, অক্সিগোলকের বিচলন, ডেট্রসর পেশির সংকোচনের মাধ্যমে মুত্রত্যাগে সহায়তা করা ইত্যাদি কাজ করে থাকে।

Leave a Comment