টীকা লেখো ইয়ং-ইটালি

টীকা লেখো ইয়ং-ইটালি – আজকের পর্বে টীকা লেখো ইয়ং-ইটালি আলোচনা করা হল।

    টীকা লেখো ইয়ং-ইটালি

    টীকা লেখো: ইয়ং-ইটালি
    টীকা লেখো: ইয়ং-ইটালি।

    ভূমিকা

    ইটালির ঐক্য আন্দোলনের পিছনে কার্বোনারির মতো গুপ্তসমিতি, বিভিন্ন দেশপ্রেমী সংগঠন ও পিডমন্ট-সার্ডিনিয়ার মতো ইতালীয় রাজ্যের বিশেষ অবদান ছিল। যোশেফ ম্যাৎসিনি (১৮০৫-১৮৭২ খ্রি.) এবং তাঁর নেতৃত্বে গঠিত ও পরিচালিত ‘ইয়ং-ইটালি’ দল ছিল ইটালির ঐক্য আন্দোলনের অগ্রদূত।

    ইয়ং-ইটালি দলের প্রতিষ্ঠা

    ইটালিতে যুবশক্তির উন্মেষ ও গণ জাগরণ ঘটানোর উদ্দেশ্যে ম্যাৎসিনি ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে মার্সাই শহরে ‘ইয়ং-ইটালি’ নামে একটি জাতীয়তাবাদী যুব সংগঠনের প্রতিষ্ঠা করেন। চল্লিশ বছরের নীচে দেশ প্রেমিক ইটালিবাসীরাই কেবল এর সদস্য হতে পারতেন। ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে এই দলের সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় ৬০,০০০-এ।

    ইয়ং-ইটালির আদর্শ ও কর্মপন্থা

    ইয়ং ইটালি দলের যে পতাকা ছিল তার একদিকে লেখা ছিল “স্বাধীনতা ও ঐক্য” এবং অন্যদিকে লেখা ছিল “গণতন্ত্র, সাম্য ও মানবতা”। এই দলের কর্মপন্থা ছিল- ১ ইটালি থেকে অস্ট্রিয়ার প্রাধান্য দূর করা; ২ যুবশক্তির উন্মেষ ঘটিয়ে ইটালিবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং কোনো বিদেশি শক্তির সহায়তা ছাড়া আত্মশক্তির ভিত্তিতে ইটালিতে স্বাধীন প্রজাতন্ত্র স্থাপন।

    ইয়ং-ইটালির নেতৃত্বে আন্দোলন

    গণ জাগরণ: ম্যাৎসিনি ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত ইয়ং-ইটালি দল ষড়যন্ত্র, গুপ্ত হত্যা বা বিপ্লববাদে বিশ্বাসী ছিল না, বরং জনজাগরণের মাধ্যমেই ইটালির থেকে অস্ট্রিয়ার আধিপত্যের অবসান করে ইটালিতে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল।

    আন্দোলন: ১৮৩৩, ১৮৩৪, ১৮৪১ ও ১৮৪৩-৪৪ খ্রিস্টাব্দে পিডমন্ট, নেপলস, ক্যালব্রিখ প্রভৃতির জায়গার বিপ্লবী কার্যকলাপের সঙ্গে ম্যাৎসিনি ও ইয়ং-ইটালি দলের যোগাযোগ ছিল।

    গুরুত্ব

    ওপরের তথ্যগুলি বিশ্লেষণ করে বলা যায়, ইয়ং-ইটালির প্রাণপুরুষ ম্যাৎসিনির নেতৃত্বে ইয়ং-ইটালি স্বাধীনতা, ঐক্য, গণতন্ত্র, সাম্য ও মানবতা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করেছিল। ম্যাৎসিনি ও তাঁর ইয়ং ইটালি দলের আন্দোলন ব্যর্থ হলেও তা গুরুত্বহীন ছিল না, কারণ :

    প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আদর্শ: সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা, বিদ্রোহ ও আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ইয়ং ইটালি দল ইটালিতে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আদর্শকে তুলে ধরেছিল।

    প্রেরণাস্থল: ম্যাৎসিনি ও ইয়ং-ইটালির গণবিপ্লবের তত্ত্ব বাস্তবায়িত না হলেও তা পরবর্তীকালের ইটালির ঐক্য আন্দোলনের পথ প্রশস্ত করেছিল।

    উপসংহার

    সারাদেশে জনমত গড়ে তোলা, যুবকদের থেকে প্রেমের আদর্শে অনুপ্রাণিত করে তোলা ও সামরিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা, অস্ট্রিয়াকে বিতাড়িত করার জন্য ইয়ং ইটালি দলের প্রতিষ্ঠা হলেও শেষ পর্যন্ত তা ব্যর্থ হয়। দেশপ্রেমের যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ইয়ং ইটালি রেখে যায় তা অবিস্মরণীয়।

    Leave a Comment