মধ্যশিক্ষা পর্ষদ প্রদত্ত নমুনা প্রশ্নপত্র
বিভাগ ক
1 (i) উঁচু স্থান থেকে দিগন্তরেখাকে দেখতে লাগে (a) বৃত্তাকার।
(ii) পৃথিবীর দুই মেরুতে আবর্তনের গতিবেগ হল – (c) প্রায় ০ কিমি/ঘণ্টা।
(iii) যে তারিখে ছায়াবৃত্ত প্রতিটি সমাক্ষরেখাকে সমান দুটি ভাগে ভাগ করে তা হল – (a) 21 মার্চ।
(iv) ভারতের প্রমাণ সময় নির্ধারক দ্রাঘিমারেখা প্রদত্ত যে শহরের ওপর দিয়ে বিস্তৃত তা হল – (a) এলাহাবাদ।
(v) মূলত চ্যুতির ফলে সৃষ্টি হয়। – (b) স্তূপ পর্বত।
(vi) একটি ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমির উদাহরণ হল – (c) ছোটোনাগপুর মালভূমি।
(vii) জৈবিক আবহবিকারের একটি ফলাফল হল – (c) শিলায় উদ্ভিদের শিকড়ের প্রবেশজনিত ফাটল।
(viii) যে রাসায়নিক আবহবিকার প্রক্রিয়ায় চুনাপাথরযুক্ত অঞ্চলে গর্ত সৃষ্টি হয় তা হল (b) কার্বনেশন।
(ix) ঘূর্ণিঝড়ের বিপর্যয়ের আকার ধারণ করার সম্ভাবনা থাকে ভারতের – (a) জনঘনত্বপূর্ণ উপকূল অঞ্চলে।
(x) একটি অপ্রচলিত শক্তির উৎসের উদাহরণ – (a) জলবিদ্যুৎ শক্তি।
(xi) একটি কয়লা খনি অঞ্চলের নাম (a) ঝরিয়া।
xii) প্রদত্ত যে জেলাটি পশ্চিমের মালভূমির অন্তর্ভুক্ত তা হল – (d) পুরুলিয়া।
(xiii) উত্তরবঙ্গের অর্থনীতির মূল স্তম্ভ হল (C) চা শিল্প।
(xiv) বৃহৎ স্কেলের মানচিত্র হল (a) 1:50,000
বিভাগ – খ
2 (A)
(i) পৃথিবীর আকৃতি পৃথিবীর মতো। ঠিক
(ii) নিরক্ষরেখা ও মেরুতে পৃথিবীর আবর্তন বেগ একই থাকে। ভুল
(iii) মূলমধ্যরেখা একটি মহাবৃত্ত। ভুল
(iv) মহীভাবক আলোড়ন ভূপৃষ্ঠে অনুভূমিকভাবে কাজ করে । ভুল
(v) খনিজ সম্পদ প্রবহমান সম্পদের উদাহরণ। ভুল
(vi) চা চাষের জন্য এঁটেল মৃত্তিকা প্রয়োজন। ভুল
(vii) পশ্চিমবঙ্গের একটি জাতীয় উদ্যান হল গোরুমারা। ঠিক
(B) (i) চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের ওপর পৃথিবীর ছায়া পড়ে।
(ii) নরওয়ের হ্যামারফেস্ট বন্দরকে ‘নিশিথ সূর্যের দেশ’ বলা হয়।
(iii) কোনো স্থান ও তার প্রতিপাদ স্থানের সময়ের পার্থক্য 12 ঘণ্টা।
(iv) তিব্বত মালভূমি পর্বতবেষ্টিত মালভূমির উদাহরণ।
(v) দক্ষিণ ভারতের শিবসমুদ্রম একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদাহরণ।
(vi) মালদার পূর্বাংশের ভূমিভাগ বরেন্দ্রভূমি নামে পরিচিত।
(vii) ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের ভগ্নাংশসূচক স্কেল হল 1:50,000।
(C)
(i) ভূমিরূপ (b) সমোন্নতি রেখা
(ii) সুনামি (a) ভূমিকম্প
(iii) জারণ (d) লোহায় মরচে ধরা
(iv) তুষারঝড় (c) পর্বতারোহণে সমস্যা
(D) (i) 85°30′ পূর্ব দ্রাঘিমার প্রতিপাদ স্থানের মান হবে 94°30′ পশ্চিম।
(ii) একটি বদ্বীপ সমভূমি হল গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ সমভূমি।
(iii) আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবনকে একত্রে নগ্নীভবন বলা হয় ।
(iv) গ্রানাইট শিলাগঠিত অঞ্চলে শল্কমোচন দেখা যায়।
(v) ‘চিত্রকলা’-কে সাংস্কৃতিক সম্পদের অন্তর্ভুক্ত করা হয় ।
(vi) পূর্ব ভারতের একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হল সাঁওতালডিহি।
(vii) জনসংখ্যার বণ্টন কোরোপ্লেথ মানচিত্রের সাহায্যে প্রকাশ করা হয়।
(viii) ভারতে ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র প্রস্তুতকারী সংস্থা হল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া।
বিভাগ – গ
3 (i) গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (GPS) : GPS-এর পুরো কথাটি হল Global Positioning System। যার দ্বারা মানুষের তৈরি 24টি কৃত্রিম উপগ্রহের সাহায্যে ভূপৃষ্ঠের ওপর কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয় করা যায়। জাহাজ চালানো থেকে শুরু করে মিসাইল উৎক্ষেপণ সবেতেই সঠিক দিশা ও নির্ভুল নির্দেশ দিতে GPS-এর ব্যবহার করা হয় ৷ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ প্রথম GPS চালু করে।
ব্যবহার : বর্তমানে GPS handset দ্বারা মানচিত্র প্রস্তুত, জরিপ কার্য, টোপোম্যাপ তৈরি, মৌজা ম্যাপ তৈরি, ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভে, শহর পরিকল্পনা সম্ভবপর হয়েছে।
অথবা, আন্তর্জাতিক তারিখরেখার গুরুত্ব :
সংজ্ঞা : মূলমধ্যরেখার বিপরীত দিকে অবস্থিত সুমেরু বিন্দু থেকে কুমেরু বিন্দু পর্যন্ত বিস্তৃত 180° দ্রাঘিমারেখাকে অনুসরণ করে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি তারিখরেখা কল্পনা করা হয়েছে, একে আন্তর্জাতিক তারিখরেখা বলে।
গুরুত্ব : (১) এই রেখাটিকে একটি বার ও তারিখের শুরু ও শেষ হিসেবে ধরা হয়। (২) সময় ও তারিখ নিয়ে নানা অসুবিধা দূর করার জন্য পূর্ব গোলার্ধের কোনো বিমান বা জাহাজ 180° দ্রাঘিমারেখাটি অতিক্রম করে পশ্চিম গোলার্ধে প্রবেশ করলেই 1 দিন সময় কমিয়ে নেয়। অপরদিকে, পশ্চিম গোলার্ধ থেকে কোনো জাহাজ বা বিমান পূর্ব গোলার্ধে প্রবেশ করলেই 1 দিন সময় বাড়িয়ে নেয়।
(ii) ছায়াবৃত্ত (Shadow Circle) : পৃথিবীর যে নির্দিষ্ট সীমারেখা বরাবর দিন এবং রাতের যথাক্রমে আলোকিত ও অন্ধকারাচ্ছন্ন অংশ পরস্পর পৃথক থাকে, তাকে ছায়াবৃত্ত বলে।
সৃষ্টি : পৃথিবীর গোলীয় আকৃতির জন্যই ছায়াবৃত্তের সৃষ্টি হয়।
প্রভাব : পৃথিবীর যদি কোনো অংশ ছায়াবৃত্তকে অতিক্রম করে আলোকিত হয় সেখানে ঊষা ও প্রভাতের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে পৃথিবীর যে অংশ ছায়াবৃত্ত অতিক্রম করে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয় সেখানে গোধূলি ও সন্ধ্যার সৃষ্টি হয়।
বৈশিষ্ট্য :
(১) স্থান পরিবর্তন : ছায়াবৃত্ত সর্বদা একস্থানে স্থির নয়। বিভিন্ন ঋতুতে স্থান পরিবর্তন করে। (২) দিন-রাত্রির অবস্থান : ছায়াবৃত্তের একদিকে আলোকিত অর্ধাংশ হল দিন, অপরদিকের অন্ধকারাচ্ছন্ন অর্ধাংশ হল রাত। (৩) ঊষা ও গোধূলি সৃষ্টি : ছায়াবৃত্ত বরাবর ঊষা এবং গোধূলি হয়। ছায়াবৃত্তের অবস্থান পরিবর্তনের কারণে দিন ও রাত্রির বিভিন্ন পর্যায়গুলিরও পরিবর্তন ঘটে। (৪) আকৃতি : এর আকৃতি গোলাকার। (৫) বিস্তৃতি : এটি পৃথিবীর উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত।
অথবা, সূর্যের আপাত দৈনিক গতি পৃথিবী নিজের অক্ষের চারপাশে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন করছে বলে আমরা প্রতিদিন সকালে সূর্যকে পূর্ব আকাশে উদয় হতে এবং বিকেলে পশ্চিম আকাশে অস্ত যেতে দেখি। আপাতদৃষ্টিতে সূর্যের এই চলনকে সূর্যের আপাত দৈনিক গতি বলে।
অবস্থা : সূর্যের আপাত দৈনিক গতির তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থা রয়েছে— (১) পূর্বাকাশে সূর্যের উদয়, (২) মধ্যগগনে সূর্যের অবস্থান, (৩) পশ্চিমাকাশে সূর্যাস্ত।
গতিপথ : সূর্যের আপাত গতিপথ অর্ধবৃত্তাকার। অর্থাৎ, কৌণিক মাপ 180°।
সময়কাল : সূর্যের আপাত দৈনিক গতির সময়কাল হল সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত।
বাস্তবে উপযোগিতা : সূর্যের আপাতগতির ওপর নির্ভর করেই দিনের বিভিন্ন সময়ের নামকরণ করা হয়েছে। যেমন— পূর্বাহ্ন, মধ্যাহ্ন, অপরাহ্ণ ইত্যাদি।
(iii) নিরক্ষীয় অঞ্চলে রাসায়নিক আবহবিকারের প্রাধান্য বেশি হওয়ার কারণ : সারাবছর বৃষ্টিপাত হওয়ায় এখানে জলের প্রভাবে আর্দ্রবিশ্লেষণ, অঙ্গারযোজন, জারণ, দ্রবণের মতো সকল রাসায়নিক আবহবিকার প্রক্রিয়াগুলি কার্যকরী হয়। আবার, এই অঞ্চলে যে ঘন চিরহরিৎ অরণ্যের সৃষ্টি হয়েছে তার ডাল, পাতা, ফল, ফুল প্রভৃতি মাটিতে পড়ে পচে গিয়ে হিউমিক অ্যাসিড সৃষ্টি করে এবং এর প্রভাবে শিলার রাসায়নিক আবহবিকার ঘটায়।
অথবা, ক্ষয়জাত পর্বতের দুটি বৈশিষ্ট্য : (১) সক্রিয় শক্তি : বহির্জাত বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির ক্ষয়কার্যের ফলে এই পর্বত গঠিত হয়। (২) গঠনকারী শিলা : প্রধানত প্রাচীন ও কঠিন আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলা দ্বারা এই পর্বত গঠিত।
(iv) ভারতের দুটি ধসপ্রবণ অঞ্চলের নাম হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল এবং পশ্চিমঘাট পার্বত্য অঞ্চল।
অথবা, বর্ষা ঋতুর সঙ্গে যুক্ত দুটি দুর্যোগ হল বন্যা ও খরা।
(v) যে দুটি শর্তের সাপেক্ষে একটি নিরপেক্ষ বস্তু সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে তা হল :
(১) জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত কৌশল : যেহেতু মানুষের মস্তিষ্ক অন্যান্য প্রাণীর থেকে উন্নত, তাই মানুষ জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত কৌশলকে কাজে লাগিয়ে নিরপেক্ষ সামগ্রীগুলিকে সম্পদে পরিণত করে।
উদাহরণ : মালাবার উপকূলের বালুকারাশি থেকে তেজস্ক্রিয় পদার্থ থোরিয়াম সংগ্রহ করা।
(২) প্রাকৃতিক বাধা অতিক্রম : প্রাচীনকাল থেকে মানুষ বিভিন্ন ভাবে প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসারের ফলে মানুষ আজ প্রাকৃতিক বাধাবিপত্তিকে উপেক্ষা করে বিভিন্ন নিরপেক্ষ সামগ্রীকে সম্পদের রূপ দান করেছে।
উদাহরণ : বর্তমানে সাহারা মরুভূমি ও উত্তর সাগর থেকে খনিজ তেল উত্তোলন করা হয়েছে।
অথবা, পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের সীমানা স্পর্শ করে আছে এমন দুটি প্রতিবেশী রাজ্য হল সিকিম ও অসম।
(vi) উদাহরণ সহযোগে বিবৃতিমূলক স্কেলের ধারণা : বিবৃতিমূলক স্কেল (Statement Scale) : মানচিত্রের স্কেলকে যখন লিখিত বিবৃতির দ্বারা বা ভাষায় বর্ণনামূলকভাবে প্রকাশ করা হয়, তখন তাকে বিবৃতিমূলক স্কেল বলে।
বৈশিষ্ট্য : (১) এই স্কেলে মানচিত্রের দূরত্বকে সাধারণত সেমি ও ইঞ্চিতে প্রকাশ করা হয়। (২) এই স্কেলের লিখিত বিবৃতির বামদিকের মানটি মানচিত্রের দূরত্ব ও ডানদিকের মানটি ভূমিভাগের দূরত্বকে প্রকাশ করে।
উদাহরণ : 1 সেমিতে 1 মিটার, অর্থাৎ মানচিত্রে 1 সেমি = ভূমিভাগে 1 মিটার।
অথবা, পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন শিল্পের দুটি সমস্যা হল : (১) পশ্চিমবঙ্গে সুসংহত পর্যটন নীতি আজও তৈরি হয়নি। (২) নিরাপত্তা, সুষ্ঠু যাতায়াত ব্যবস্থা, উন্নত পরিকাঠামো সম্পর্কিত একাধিক সমস্যা বিদ্যমান।