ভিয়েনা সম্মেলনের উদ্দেশ্য ও নীতি উল্লেখ করো – আজকের পর্বে ভিয়েনা সম্মেলনের উদ্দেশ্য ও নীতি উল্লেখ করা হল।
ভিয়েনা সম্মেলনের উদ্দেশ্য ও নীতি উল্লেখ করো
|
ভিয়েনা সম্মেলনের উদ্দেশ্য ও নীতি উল্লেখ করো। |
ভূমিকা
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ইতিহাসে ভিয়েনা সম্মেলন একটি অতি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। বিশ্বের বহু দেশ এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছিল। 1815 খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা নগরীতে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অনেকে একে পৃথিবীর প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন বলে থাকেন।
বিগ ফোর
এই সম্মেলনে যোগদানকারী রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া, রাশিয়া ও ইংল্যান্ড প্রধান ভূমিকা নিয়েছিল। তাই এদেরকে বিগ ফোর বলা হয়। এই সম্মেলনে তুরস্কের কোনো প্রতিনিধি ছিল না। অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলার মেটারনিক, প্রাশিয়ার রাজা তৃতীয় ফ্রেডারিক উইলিয়াম, ইংল্যান্ডের বিদেশ সচিব ক্যাসালরি, রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার এই সম্মেলনে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
ভিয়েনা সম্মেলনের উদ্দেশ্য
ভিয়েনা সম্মেলনের উদ্দেশ্য ছিল-
① ইউরোপকে পুনর্গঠনের মাধ্যমে নেপোলিয়ানের ক্ষমতা লাভের পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া।
② ইউরোপের পুনরুজ্জীবনের মাধ্যমে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।
③ ফ্রান্স যাতে আর ইউরোপের শান্তি বিঘ্নিত করতে না পারে তার ব্যবস্থা করা।
④ নেপোলিয়ানের সঙ্গে যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
⑤ ফরাসি বিপ্লবের পূর্বেকার রাজ্যগুলিকে পুনরায় ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনা।
⑥ ইটালি, জার্মানি, পোল্যান্ড প্রভৃতি দেশের ভবিষ্যৎ ঠিক করা।
ভিয়েনা সম্মেলনের প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল সুদূরপ্রসারী। প্রকৃতপক্ষে, এই সম্মেলনে ফরাসি বিপ্লব সৃষ্ট গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, উদারনৈতিক ভাবধারার অবসান ঘটিয়ে পুরাতন রাজতান্ত্রিক আদর্শের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা ছিল প্রধান উদ্দেশ্য।
ভিয়েনা সম্মেলনের নীতি
উপরোক্ত উদ্দেশ্যগুলি সামনে রেখে ভিয়েনা সম্মেলনে তিনটি প্রধান নীতি স্থির করা হয়েছিল। এগুলি হল-
① ন্যায্য অধিকার নীতি (Principle of Legitimacy),
② ক্ষতিপূরণ নীতি (Principle of compensation) এবং
③ শক্তিসাম্য নীতি (Principle of Balance of Power)।
উপসংহার
ভিয়েনা সম্মেলন পৃথিবীর প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য, নীতি ও কর্মপন্থা স্বতন্ত্র ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ।