টীকা লেখো ভূমিদাস প্রথা বিলোপ – আজকের পর্বে টীকা লেখো ভূমিদাস প্রথা বিলোপ আলোচনা করা হল।
টীকা লেখো ভূমিদাস প্রথা বিলোপ
টীকা লেখো: ভূমিদাস প্রথা বিলোপ। |
ভূমিকা
ক্রিমিয়ার যুদ্ধে রাশিয়ার পরাজয় তার অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ক্ষেত্রে বিপর্যয়ের সূচনা করেছিল এবং অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে বিপর্যয় মোকাবিলা করার জন্য জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডারের অন্যতম পদক্ষেপ ছিল ভূমিদাস মুক্তি (১৮৬১ খ্রি.)।
ভূমিদাস প্রথা বিলোপের কারণ
রাশিয়ায় ভূমিদাস প্রথা বিলোপের কারণগুলি হল-
ভূমিদাস বিদ্রোহ: জার প্রথম নিকোলাসের সময় থেকে ভূমিদাস প্রথা বিলোপের আগে সংঘটিত ভূমিদাস বিদ্রোহ থেকে প্রমাণিত হয়েছিল যে, এই প্রথা সমাজের পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক।
কর্তৃত্ব হ্রাস : ক্রিমিয়ার যুদ্ধের পর ভূমিদাসদের ওপর অভিজাত ও জমিদারদের কর্তৃত্ব হ্রাস পায় এমনকি ভূমিদাস প্রথা তাদের কাছে অলাভজনক হয়ে পড়ে।
রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ: জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার পরিস্থিতির জটিলতা উপলব্ধি করে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে ভূমিদাস প্রথা বিলোপের নীতি গ্রহণ করেন।
ভূমিদাস মুক্তি
১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে ‘মুক্তির ঘোষণা’ দ্বারা রাশিয়ায় ভূমিদাস প্রথা বিলোপ করা হয়। এই আইনের শর্তগুলি ছিল-
- এই ‘মুক্তির ঘোষণা’ দ্বারা রাশিয়ার ভূ মিদাস বা সার্ফদের স্বাধীন প্রজা হিসেবে গণ্য করা হয় এবং তারা সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার লাভ করে।
- সার্ফরা ভূমিদাস হিসেবে যেসব জমি চাষ করত তার অর্ধেকের ওপর তাদের মালিকানা স্বীকৃত হয়। এবং একারণে
- তাদেরকে অবশ্য এজন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হয়; সরকারি তহবিল থেকে এজন্য তাদেরকে ঋণ দেওয়া হয়।
- জমিগুলি অবশ্য সোজাসুজি মুক্ত ভূমিদাসদের দেওয়া হয়নি, কারণ ‘মির’ নামক গ্রাম্য সমবায় সমিতির ওপর গ্রামের সকল জমির তত্ত্বাবধানের ভার দেওয়া হয়, ক্ষতিপূরণের অর্থ আদায়ের দায়িত্বও এদের হাতে দেওয়া হয়।
উপসংহার
রাশিয়ার সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিবর্তনের ইতিহাসে ভূমিদাস মুক্তির গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। তবে ভূমিদাসরা তাদের ভূমিদাসত্ব থেকে মুক্তি পেলেও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পায়নি।