জাতপাতের বিভাজন ও বর্তমান সমাজ (এই নিয়ে দুই বন্ধুর সংলাপ)

জাতপাতের বিভাজন ও বর্তমান সমাজ (এই নিয়ে দুই বন্ধুর সংলাপ)
জাতপাতের বিভাজন ও বর্তমান সমাজ (এই নিয়ে দুই বন্ধুর সংলাপ)
শৈলী : কীরে সায়ন্তী, কী হল? একটু চুপচাপ লাগছে আজ তোকে।
সায়ন্তী : না, তেমন কিছু হয়নি, কাগজে একটা খবর পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেছে।
শৈলী : কী খবর রে? পরীক্ষার খাতা হারিয়েছে বুঝি?
সায়ন্তী : না, না। খবরে পড়লাম একটা স্কুলে জাতপাতের জন্য দুটি বন্ধুকে আলাদা বসতে হয়েছে।
শৈলী : সে কীরে? একবিংশ শতাব্দীতে এইসব। তবে মায়ের মুখে আমিও শুনেছি, এখনও ভারতের কয়েকটি রাজ্যে জাত নিয়ে মানুষ আশ্চর্য গোঁড়া-মোহগ্রস্ত।
সায়ন্তী : হ্যাঁরে, আজও আমাদের সমাজে জাতপাতকে কেন্দ্র করে ঘটে চলেছে নানা অন্যায়? এটা মেনে নেওয়া যায় না। অথচ এই কারণেই কিন্তু সমাজটা প্রায় অচল হতে বসেছে। সে হারিয়ে ফেলেছে তার যুক্তিবোধ।
শৈলী: ঠিক। যুক্তিবোধ জাগিয়ে তোলার কাজটা করতে হবে। এ নিয়ে ভাবতে হবে সবাইকে।
সায়ন্তী : ভাবতে হলে তো মানুষকে নিজের ধর্ম পালন করতে হবে।
শৈলী: ধর্ম? নিজের ধর্মের সঙ্গে জাতের কী সম্পর্ক?
সায়ন্তী : ধর্ম মানুষের মনুষ্যত্ব, সত্যবোধ। জীবনের পক্ষে যা মঙ্গলকর তাকে ধারণ করাই তো ধর্ম। সত্যবোধ না থাকলেই তো একজন আর একজনকে মানুষ হিসেবে মূল্য দেবে না। তখনই জাতপাতের প্রশ্ন আসে।
শৈলী : ঠিক বলেছিস। একমাত্র আমরা এই মানুষেরাই এখনও একে অপরকে অপমান ও অবমাননায় দূরে সরিয়ে দিই। ভুলে যাই আমরা সবাই এক, একই রবি-শশী আমাদের সাথি।
সায়ন্তী : সত্যি। তবে কী জানিস, আমরা বোধহয় নিজের ইচ্ছায় ভুলে যাই সংবিধানের একটি তথ্য। ভারতের সংবিধান রচয়িতাদের মধ্যে যিনি প্রধান, বাবা সাহেব আম্বেদকর, তিনি কিন্তু তথাকথিত নীচু জাতের মানুষ ছিলেন। কিন্তু অনেক উপেক্ষা সত্ত্বেও তিনি আজ সবার শ্রদ্ধার মানুষ। জাতের ভিত্তিতে কোনো মানুষকে ছোটো করা যায় কি? সে তো আমাদের দেশের আইনেও দন্ডনীয় অপরাধ।
শৈলী : শুধু তাই নয়। জাতপাত বড়ো লজ্জার।
সায়ন্তী: সত্যিই কেমন নিজেকেই ছোটো লাগে। তাই না।

Leave a Comment