মাতৃভাষার সাঙ্গা ইংরেজি ভাষা শেখার প্রয়োজনীয়তা (এই নিয়ে দুই বন্ধুর সংলাপ) |
আবির : বাংলা আমাদের মাতৃভাষা, যা মাতৃদুগ্ধসম। তবে সারাজীবন কিন্তু কেউ দুগ্ধপোষ্য হয়ে থাকতে পারে না, তাতে সুবিধাও হবে না।
তিলক : তার মানে তুমি মানছ না যে মাতৃভাষাতেই আমাদের লেখাপড়া করা উচিত। তাহলে তুমি কি মান না যে আমরা বাংলা ভাষাতেই পড়াশোনা করলে স্বচ্ছন্দবোধ করব। নিজের মনের ভাব যথাযথভাবে প্রকাশ করতে পারব?
আবির: সাধারণভাবে কথাটা ঠিক। কিন্তু একেকটা দেশের ইতিহাস, ভূগোল এবং গোটা দুনিয়ার যে পরিবর্তন, তার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক কিছুই বদলে যায়। বিশেষত আমাদের দেশে ইংরেজি শেখাটা ছোটো বয়স থেকেই জরুরি। কারণ ভালো করে ইংরেজি পড়তে বা লিখতে না জানলে ইংরেজি মাধ্যমে পড়া কঠিন হয়ে যায়।
তিলক : ইংরেজি মাধ্যমে না পড়লে কিসসু হবে না, কথাটা ঠিক নয়। আমার পরিবারের অনেকেই বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করে দিব্যি প্রতিষ্ঠিত। তাঁরা ইংরেজিও জানেন এবং বেশ মাথা উঁচু করেই আছেন।
আবির : আরে রেগে যাচ্ছ কেন? তোমার সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেও বলছি, আমাদের বড়োদের জীবনযুদ্ধ এবং আজকের বাস্তবতার অনেক ফারাক।
তিলক : নিশ্চয়ই। তবে কী জানো, আমার দৃঢ় বিশ্বাস নিজের ভাষাতে অনেক সহজে মনের ভাব প্রকাশ করা যায়। ভাবের আদানপ্রদান অনেক সহজ হয়।
আবির : সে কথা মানছি, তবে এই বিশ্বায়নের যুগে আমাদের নিজেদের রাজ্যের বাইরে গেলেই তো বাংলা ভাষায় কোনো কাজ চালানো যায় না। এমনকি এখানেও ব্যাংকের কাজে বা কোনো দরখাস্ত লিখতে কিংবা যে কোনো দরকারি অদরকারি কাজে ইংরেজি লিখতে হয়। তখন অনেকেই অসুবিধায় পড়ে যায়। এ বিষয়ে তুমি কী বলবে?
তিলক: তোমার কথা সমর্থন না করে পারছি না। বুঝতেই পারছি মনের ভাষা আর শিক্ষার ভাষা আলাদা হতেই পারে। তবে উভয়ের একটা গাঢ় যোগসূত্র থাকলেই ভালো। খেয়াল রাখতে হবে মনের ভাষাটা যেন হারিয়ে না যায়। বাংলা গান আর কবিতা হারিয়ে গেলে বাঁচব কী নিয়ে?
আবির : তা যা বলেছ। তাহলে আমরা দুজনেই তর্কে জিতলাম তাই তো।