শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র্যাগিং-এর কুফল নিয়ে দুই বন্ধুর সংলাপ |
রোহিত: কাল কাগজে আবার একটা র্যাগিং-এর কারণে মৃত্যুর সংবাদ পড়লাম। আর ভালো লাগে না।
কৃষ্ণা: কিছু করার নেই। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষত ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিকেল কলেজগুলিতে যেন র্যাগিংয়ের প্রকোপ উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে।
রোহিত : র্যাগিংয়ের কারণে কত কিশোর-কিশোরী অকালে প্রাণত্যাগ করছে। কাল সংবাদপত্রে দেখলাম, উলুবেড়িয়ার এক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রের রেললাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহননের ঘটনা। কিছুদিন আগেই তারাতলার মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেও এমন ঘটনা ঘটেছিল।
কৃষ্ণা: কেন, কোলাঘাট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বা দুর্গাপুর বি. সি. রায় কলেজের ঘটনাও কি বহুচর্চিত নয়?
রোহিত: র্যাগিং কলেজগুলোর সুঠাম পরিকাঠামোয় যেন ক্ষয়রোগের সমতুল্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির সংস্কৃতি চর্চার মাঝে তা বড়োই বেমানান। তাই নয় কি?
কৃষ্ণা : নিশ্চয়ই। র্যাগিং-এর কারণে কত যোগ্য ছাত্রছাত্রী যারা পরবর্তীকালে কৃতী শিক্ষার্থীদের দলভুক্ত হতে পারত, তারা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ত্যাগ করছে নতুবা মৃত্যুকে বরণ করে নিচ্ছে। নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা তো র্যাগিং ভীতির কারণে কলেজের চৌহদ্দিতে পদার্পণে ভীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
রোহিত : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিও তো দুর্নামগ্রস্ত হয় এবং বহুক্ষেত্রেই বহু যোগ্য শিক্ষার্থীকে অকালে হারায়। বিঘ্নিত হয় দেশের ও দশের ভবিষ্যৎ।
কৃষ্ণা: সে তো নিঃসন্দেহে। যে তরুণ সমাজ দেশের ভবিষ্যৎ তাদের ভবিষ্যৎ যদি র্যাগিং নামক জাঁতাকলে ক্রমাগত নিষ্পেষিত হতে থাকে তাহলে দেশের ভবিষ্যৎও বিরাট প্রশ্নচিহ্নের সম্মুখীন হয়ে পড়ে।
রোহিত : র্যাগিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির উপবনতুল্য বাতাবরণে রক্ষতাণ্ডবের সমতুল্য। অবিলম্বে তা বন্ধ না হলে এ দেশের শিক্ষাব্যবস্থার অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে পড়বে এবং অদূর ভবিষ্যতে পুনরায় আমরা বন্য জীবনেই প্রত্যাবর্তন করব।
কৃষ্ণা: যেভাবে বর্তমান প্রজন্ম কুরতার পাঠগ্রহণ করছে, তার ফলে তারা যে বন্য প্রবৃত্তিগুলি খুব শীঘ্রই লাভ করবে তাতে সন্দেহ নেই। র্যাগিং যেন আমাদের বন্য বৃত্তিগুলিরই নামান্তর।