টীকা লেখো প্রাগের সন্ধি

টীকা লেখো: প্রাগের সন্ধি
টীকা লেখো: প্রাগের সন্ধি।

ভূমিকা

প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক ‘রক্ত ও লৌহ’ নীতি অনুসরণ করে যে তিনটি যুদ্ধের মাধ্যমে জার্মানির ঐক্য সম্পন্ন করেছিলেন সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল স্যাডোয়ার যুদ্ধ (১৮৬৬ খ্রি.)। এই যুদ্ধে অস্ট্রিয়া পরাজিত হয় ও প্রাশিয়ার সঙ্গে প্রাগ-এর সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য হয় ২৩ আগস্ট, ১৮৬৬ খ্রি.।

প্রাগের সন্ধির শর্ত

প্রাগের সন্ধিতে স্থির হয় যে- 
  • ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে গঠিত ও অস্ট্রিয়ার নেতৃত্বে পরিচালিত জার্মান রাষ্ট্রসংঘের বিলুপ্তি হবে; 
  • প্রাশিয়ার নেতৃত্বে উত্তর-জার্মান রাজ্যগুলি নিয়ে উত্তর জার্মান রাষ্ট্রসংঘ গঠিত হবে; 
  • ভেনেশিয়া ইটালিকে ছেড়ে দিতে হবে; 
  • ক্যাসেল, হ্যানোভার ও শ্লেজউইগ-হলস্টেইন প্রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হবে এবং 
  • অস্ট্রিয়াকে যুদ্ধের জন্য কিছু ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

প্রাগের সন্ধির গুরুত্ব

ইউরোপের ইতিহাসে প্রাগের সন্ধির গুরুত্ব যথেষ্ট ছিল, কারণ-

প্রাশিয়ার মর্যাদা বৃদ্ধি: এই সন্ধির মাধ্যমে ইউরোপের রাজনীতি ক্ষেত্রে প্রাশিয়ার সামরিক ও রাষ্ট্রনৈতিক মর্যাদা যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়।

জার্মানির ঐক্যের অগ্রগতি: জার্মানির ঐক্যের প্রধান অন্তরায় অস্ট্রিয়া জার্মানি থেকে বিতাড়িত হয় এবং প্রাশিয়ার নেতৃত্বে উত্তর-জার্মান রাষ্ট্রসংঘ গঠিত হওয়ার ফলে জার্মান ঐক্য বাস্তবে অনেকখানি অগ্রসর হয়।

বিসমার্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি: এই সন্ধির ফলে জার্মানির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিক্ষেত্রে বিসমার্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং তার ক্ষমতা অপ্রতিহত হয়ে ওঠে।

অস্ট্রীয় সাম্রাজ্যের ভিত্তির দুর্বলতা: বিভিন্ন জাতিকে পদানত করে যে অস্ট্রিয়া সাম্রাজ্য গঠিত ছিল তারও ভিত্তি শিথিল হয়ে পড়ে।

ইটালির লাভ: স্যাডোয়ার যুদ্ধকালে ইটালি প্রাশিয়ার পক্ষ গ্রহণ করেছিল এবং একারণেই এই যুদ্ধে অস্ট্রিয়ার পরাজয়ের পর প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক ইটালিকে ভেনেশিয়া অধিকারের অনুমতি দেন; ফলে ইটালির ঐক্যের অগ্রগতি ঘটে।

Leave a Comment