পরিবহণের মাধ্যম হিসেবে রেলপথের গুরুত্ব
পরিবহণের মাধ্যম হিসেবে রেলপথের গুরুত্ব লেখো। |
ভারতের আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে রেলপথের গুরুত্ব অপরিসীম –
কম ব্যয়ে পরিবহণ
অন্যান্য পরিবহণ মাধ্যমের তুলনায় রেল পরিবহণে ব্যয় অনেক কম। তাই যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণে রেলপথের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। কৃষি উন্নয়ন: ভারত কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষির প্রয়োজনীয় সার, বীজ, কীটনাশক পরিবহণ এবং ধান, গম, পাট, তুলা, ডাল প্রভৃতি দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে পরিবহণে রেলপথের গুরুত্ব অসামান্য।
খনিজ উত্তোলন
ভারতে রেলপথের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে খনিগুলির সম্প্রসারণ ঘটেছে। কয়লা, আকরিক লোহা, তামা প্রভৃতি ভারী খনিজ দ্রব্যগুলি রেলপথের মাধ্যমেই পরিবাহিত হয়। তাই খনিজ সম্পদ উত্তোলনে রেলপথের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
শিল্পোন্নতি
ভারতের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলগুলির প্রয়োজনীয় কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি পরিবহণে ও শিল্পজাত দ্রব্য বাজারে প্রেরণের জন্য কম ব্যয়ের এবং সময়সাশ্রয়ী রেলপথের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি।
তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন
ভারতে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত ও ব্যবহৃত বিদ্যুৎ হল তাপবিদ্যুৎ। এই তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কয়লা রেলপথের মাধ্যমেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে পরিবাহিত হয়। সামরিক ক্ষেত্রে: দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করতে এবং বহিঃশত্রুর হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে দ্রুত সেনাবাহিনী, অস্ত্রশস্ত্র ও খাদ্যদ্রব্য প্রেরণে রেলপথের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি।
বিপর্যয় মোকাবিলা
বন্যা, খরা ও দুর্ভিক্ষপীড়িত অঞ্চলে দ্রুত ত্রাণসামগ্রী প্রেরণের মাধ্যম হিসেবে রেলপথের গুরুত্ব অসামান্য।
অন্যান্য গুরুত্ব
এ ছাড়া (i) রেলপথ পরিবহণ অত্যন্ত নিরাপদ আরামদায়ক ও সময়সাশ্রয়ী। (ii) রেলের মাধ্যমে পরিবাহিত পণ্য নষ্ট হয়ে গেলে রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়। (iii) রেলের পণ্য বোঝাইয়ের রসিদ ব্যাংকে গচ্ছিত রেখে ঋণ পাওয়া যায়। (iv) ভারতের যাত্রী পরিবহণের 45% রেলপথের মাধ্যমে সংঘটিত হয়ে থাকে। (v) সর্বোপরি, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রসার, জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে রেলপথের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই রেলপথকে ভারতের ‘জাতীয় জীবনরেখা’ বলা হয়।
আরও পড়ুন – শৈশবের স্মৃতি রচনা