মালভূমি সৃষ্টির কারণগুলি লেখো

মালভূমি সৃষ্টির কারণগুলি লেখো
মালভূমি সৃষ্টির কারণগুলি লেখো

মালভূমি: 

সাধারণত সমুদ্র সমতল থেকে 300 মিটারের অধিক উচ্চতাসম্পন্ন চারপাশে খাড়া ঢালযুক্ত এবং তরঙ্গায়িত উপরিভাগবিশিষ্ট উচ্চভূমিকে মালভূমি বলে।

মালভূমি সৃষ্টির কারণ: 

মালভূমি সৃষ্টি হওয়ার পিছনে সাধারণত তিনটি কারণ দায়ী। এগুলি হল–

(1) ভূ-আলোড়ন ও পাত সঞ্চারণ :

(i) পাত সঞ্চারণ তত্ত্ব অনুসারে পাতগুলির চলনের ফলে পৃথিবীপৃষ্ঠের প্রাচীন ভূখণ্ড ফেটে বিচ্ছিন্ন হয়ে মহাদেশীয় বা শিল্ড মালভূমি গঠন করে। যেমন – আরব মালভূমি, কানাডিয়ান শিল্ড প্রভৃতি।
(ii) পাত সঞ্চারণের ফলে ভঙ্গিল পর্বত সৃষ্টির সময় পর্বতের মাঝের নীচু অসমতল ভূমি উঁচু হয়ে মালভূমি সৃষ্টি হয়। এগুলি পর্বত দ্বারা বেষ্টিত। যেমন তিব্বত মালভূমি, ইরানের মালভূমি প্রভৃতি।
(iii) অনেক সময় ভূ-আলোড়নের ফলে ভূপৃষ্ঠের বিস্তৃত সুউচ্চ ভূভাগ একদিকে হেলে পড়ে ও মালভূমিতে পরিণত হয়। যেমন ভারতের উপদ্বীপীয় মালভূমি।
(iv) ভূ-আলোড়নের ফলে সৃষ্ট চ্যুতির পাশের কোনো অংশ অনেক সময় উত্থিত হয়ে মালভূমিতে পরিণত হয়। যেমন ফ্রান্সের সেন্ট্রাল ম্যাসিফ মালভূমি।

(2) ক্ষয়সাধন: 

নদী, বায়ু, হিমবাহ, সমুদ্রতরঙ্গ, আবহবিকার প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তি দ্বারা কোনো উচ্চভূমি বা পর্বতমালা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে মালভূমির আকার ধারণ করে। যেমন মধ্য ভারতের বুন্দেলখণ্ড ও বাঘেল্থণ্ড মালভূমি।

(3) সঞ্চয় কাজ: 

(i) নিঃসারী অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ভূগর্ভস্থ ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠের বাইরে এসে লাভারূপে সঞ্চিত হয়ে মালভূমিতে পরিণত হয়। যেমন – ভারতের দাক্ষিণাত্য মালভূমি বা ডেকানট্রাপ। (ii) শুষ্ক অঞ্চলে বালুরাশি জমা হয়ে মালভূমি সৃষ্টি হয়। যেমন আফ্রিকার সাহারা মালভূমি। (iii) অতিশীতল অঞ্চলে বরফ জমে উঁচু হয়ে মালভূমি সৃষ্টি হয়। যেমন – আন্টার্কটিকা মালভূমি ও গ্রিনল্যান্ড মালভূমি।

Leave a Comment