উদাহরণসহ বিভিন্ন প্রকার সঞ্চয়জাত সমভূমির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও |
মূলত বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির সঞ্চয়কার্যের ফলে, যে সমভূমির সৃষ্টি হয়, তাকে সঞ্চয়জাত সমভূমি বলে। বিভিন্ন প্রকার সঞ্চয়জাত সমভূমিগুলি হল–
• পলিগঠিত সমভূমি:
নদীবাহিত পলি দীর্ঘদিন ধরে নদী অববাহিকায় সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমির সৃষ্টি হয়, তাকে পলিগঠিত সমভূমি বলে। যেমন– উত্তর ভারতের সিন্ধু-গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র সমভূমি।
• প্লাবন সমভূমি: বন্যার সময় জলবাহিত পলি প্লাবিত স্থানে জমে যে সমভূমি গড়ে ওঠে, তাকে প্লাবন সমভূমি বলে। যেমন গঙ্গার মধ্য ও নিম্নগতিতে এই সমভূমি দেখা যায়।
• ব-দ্বীপ সমভূমি: নদীবাহিত পলি, বালি, কাদা, নুড়ি, কাঁকর প্রভৃতি নদীর মোহানায় দীর্ঘদিন সঞ্চিত হয়ে যে মাত্রাহীন ‘ব’ অক্ষরের ন্যায় সমভূমির সৃষ্টি হয়, তাকে ব-দ্বীপ সমভূমি বলে। যেমন গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র ব-দ্বীপ সমভূমি (বৃহত্তম), নীলনদ ব-দ্বীপ সমভূমি প্রভৃতি।
• লাভা সমভূমি: ভূগর্ভের উত্তপ্ত ম্যাগমা কোনো ফাটল দিয়ে ভূপৃষ্ঠের বাইরে এসে লাভারূপে শীতল ও কঠিন হয়ে জমাট বেঁধে যে সমভূমির সৃষ্টি হয়, তাকে লাভা সমভূমি বলে। যেমন ভারতের গুজরাটের মালব সমভূমি।
• উপকূলীয় সমভূমি: বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির ক্ষয়জাত পদার্থ সমুদ্রের অগভীর উপকূলীয় অংশে সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমির সৃষ্টি হয়, তাকে উপকূলীয় সমভূমি বলে। যেমন – ও পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি। ভারতের পূর্ব
• লোয়েস সমভূমি: মরু অঞ্চলের সূক্ষ্ম বালুকণা বায়ু দ্বারা পরিবাহিত হয়ে দূরবর্তী কোনো অবনমিত স্থানে সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমির সৃষ্টি হয়, তাকে লোয়েস সমভূমি বলে। যেমন – গোবি মরুভূমির বালিরাশি উড়ে গিয়ে চীনের হোয়াং-হো নদী অববাহিকায় সঞ্চিত হয়ে লোয়েস সমভূমি গড়ে উঠেছে।
• হিমবাহ সমভূমি: হিমবাহ দ্বারা বাহিত নুড়ি, কাঁকর, বালি পর্বতের পাদদেশে সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমি গড়ে ওঠে, তাকে হিমবাহ সমভূমি বলে। যেমন কাশ্মীর উপত্যকায় এই সমভূমি দেখা যায়।
• বাজাদা বা মরু সমভূমি: মরু অঞ্চলে কোনো উচ্চভূমির খাড়া ঢালের পাদদেশে বালি সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমির সৃষ্টি করে, তাকে বাজাদা বা মরু সমভূমি বলে। যেমন- সাহারা মরুভূমিতে আটলাস পর্বতের পাদদেশে এই বাজাদা দেখা যায়।
• হ্রদ সমভূমি: নদীবাহিত পলি, বালি, নুড়ি, কাঁকর প্রভৃতি কোনো হ্রদে সঞ্চিত হয়ে কালক্রমে হ্রদ ভরাট হয়ে যে সমভূমির সৃষ্টি হয়, তাকে হ্রদ সমভূমি বলে। যেমন আফ্রিকার চাদ সমভূমি।