উষ্ণ মরু অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রাধান্য লাভের কারণ উল্লেখ করো |
মরু অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রাধান্য লাভের কারণগুলি হল—
• তাপমাত্রার উচ্চ প্রসর:
মরু অঞ্চল উষ্ণ প্রকৃতির হলেও এখানে দিন ও রাত্রির তাপমাত্রাগত প্রসর অনেক বেশি। উদাহরণ স্বরূপ, এখানে দিনের তাপমাত্রা যেমন যথেষ্ট বেশি, তেমনি রাতের তাপমাত্রা যথেষ্ট কম। ফলে, এখানকার শিলা ক্রমাগত সংকোচন ও প্রসারণের ফলে যান্ত্রিকভাবে বিচূর্ণীকৃত হয়
• বৃষ্টিপাতের স্বল্পতা:
মরু অঞ্চলে স্বল্প বৃষ্টিপাতের কারণে যান্ত্রিক আাবহবিকার ছাড়া অন্য কোনো আবহবিকার প্রভাব বিস্তার করতে পারে না।
• শিলায় বিষম প্রকৃতির খনিজের উপস্থিতি :
মরু অঞ্চলে একই শিলায় বিষম প্রকৃতির খনিজের উপস্থিতি থাকে যাদের একই উষ্ণতায় সংকোচন ও প্রসারণের হার ভিন্ন। উদাহরণস্বরূপ, বলা যায় গ্রানাইট ও নিস্ শিলার মধ্যে ‘কোয়ার্টজ এবং অভ্র’ – এই দুরকমের খনিজ পদার্থই অবস্থান করে। উম্নতার সংস্পর্শে এলে কোয়ার্টজ অতি সহজেই স্ফীত এবং সংকুচিত হয়, কিন্তু অভ্র তা হয় না। ফলে, ওই শিলার মধ্যে অসমান চাপের সৃষ্টি হয় বলে প্রচণ্ড টানের (Strain) উদ্ভব ঘটে এবং শিলাটি একসময়ে শব্দ করে ফেটে যায়। এই কারণে, মরু অঞ্চলে সন্ধ্যার সময় মাঝে মাঝে বন্দুকের গুলি ছোড়ার মতো শিলা ফাটার শব্দ শোনা যায়।
• শিলায় সমপ্রকৃতির খনিজের উপস্থিতি :
অনেক সময় সমপ্রকৃতির শিলার উপরের স্তর ভেতরের স্তরের চেয়ে অনেক বেশি উত্তপ্ত হয়ে আয়তনে বৃদ্ধি পেলে তা পেঁয়াজের খোসার মতো ধীরে ধীরে খুলে যায়, একে শল্কমোচন বলে।
• হঠাৎ বর্ষণ:
অধিক উষ্ণ শিলায় হঠাৎ বর্ষণের ঠান্ডা জল পড়ে শিলার মধ্যে হঠাৎ সংকোচনের কারণে পীড়ন সৃষ্টি হয় যা শিলাকে বিচূর্ণ করে। অন্যদিকে, লবণ সমৃদ্ধ বৃষ্টির জল বাষ্পীভূত হয়ে লবণ কেলাস গঠন করে ও শিলাকে বিচূর্ণ করে।
• অধিক বাষ্পীভবন:
উষ্ণ মরু অঞ্চলে বাষ্পীভবন বেশি পরিমাণে হলে লবণ কেলাস তৈরি হয়ে ভূপৃষ্ঠস্থ শিলা যান্ত্রিকভাবে আবহবিকারগ্রস্থ হয়।
• বায়ুর কার্যাবলি :
মরুভূমিতে বাতাস বাধাহীনভাবে প্রবল বেগে বয়ে চলায় বাতাসের আঘাতে কিছু শিলা যান্ত্রিকভাবে বিচূর্ণীকৃত হয়।