উগ্র জাতীয়তাবাদ বলতে কী বোঝো

উগ্র জাতীয়তাবাদ বলতে কী বোঝো – আজকের পর্বে উগ্র জাতীয়তাবাদ বলতে কী বোঝো তা আলোচনা করা হল।

    উগ্র জাতীয়তাবাদ বলতে কী বোঝো

    উগ্র জাতীয়তাবাদ বলতে কী বোঝো
    উগ্র জাতীয়তাবাদ বলতে কী বোঝো?

    ভূমিকা

    ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে ও বিংশ শতাব্দীর শুরুতে ইউরোপের বিভিন্ন পুঁজিবাদী দেশে এক ধরনের বিকৃত জাতীয়তাবাদের প্রসার ঘটে। এই সমস্ত দেশগুলির সমস্ত জাতির মধ্যে পরিকল্পিতভাবে, অন্য দেশের অন্য জাতির বিরুদ্ধে ঘৃণার ভাব সঞ্চারিত করা হতে থাকে। ফলে সব জাতিই নিজের দেশ ও জাতিকে সব চাইতে শ্রেষ্ঠ বলে মনে করতে থাকে। যা উগ্র জাতীয়তাবাদ নামে পরিচিত।

    উগ্র জাতীয়তাবাদের স্বরূপ

    এই ধরনের উগ্র, স্বার্থপর ও সংকীর্ণ মনোভাবের কারণে এক দেশ অপর দেশকে দমন করে নিজের দেশ ও জাতির শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ফলে ইউরোপের বিভিন্ন জাতির মনে অপর জাতি সম্পর্কে এক ধরনের ঘৃণা, বিদ্বেষ ও জাতিবৈরিতার সৃষ্টি হয়।

    সাহিত্যিকদের মতামত

    সেসময় এই জাতীয় উগ্র জাতীয়তাবাদের পক্ষে কিছু সাংবাদিক, সাহিত্যিক নিজের দেশের জাত্যভিমানের শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে প্রচার শুরু করেছিলেন। ইংরেজ লেখক হোমার লি আংলো-স্যাক্সন জাতিকে জাতিশ্রেষ্ঠ বলে প্রচার করেছিলেন। জার্মান ঐতিহাসিক বার্নহার্চি, হেনরিখ ফন ট্রটস্কি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে জার্মানির টিউটনিক জাতির নাম ঘোষণা করেছিলেন। ফরাসি নেতা ক্লেমাঁসু প্রমুখ ফরাসি-লাতিন জাতির শ্রেষ্ঠত্ব প্রচার করে বলেছিলেন, ‘লাতিন সভ্যতার সঙ্গে টিউটনিক সভ্যতার সংঘর্ষ অনিবার্য।’ এইভাবে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানিসহ একাধিক সাম্রাজ্যবাদী দেশের মানুষ এক সময় বিভ্রান্ত হয়ে নিজেদের দেশের সাম্রাজ্যবাদী নীতিকে সমর্থন জানিয়েছিল। এ ছাড়া রাশিয়া, জাপান, ইটালি ও পৃথিবীর অপরাপর দেশেও এই জাতীয় উগ্র ও সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদের প্রতিফলন ঘটে। 

    প্রভাব

    এ কথা অনস্বীকার্য যে, এই জাতীয় উগ্র স্বার্থপর ও সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদের ফলে নিজের জাতিকে শ্রেষ্ঠ ও অপর দেশের জাতিকে নিম্নমানের ও তুচ্ছ করার প্রচেষ্টায় সমগ্র ইউরোপে এক বিধ্বংসী যুদ্ধের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। জার্মানির নাতসিবাদ, ইটালির ফ্যাসিবাদ, জাপানের উগ্র সমরবাদ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘটানোর জন্য প্রত্যক্ষভাবে দায়ী ছিল।

    Leave a Comment