“সর্বনাশী/শিখায় এ হীন তথ্য কে রে?” -কোন্ তথ্যকে ‘সর্বনাশী’ ও ‘হীন’ বলা হয়েছে? কবি কেন এরূপ মন্তব্য করেছেন

"সর্বনাশী/শিখায় এ হীন তথ্য কে রে?” -কোন্ তথ্যকে 'সর্বনাশী' ও 'হীন' বলা হয়েছে? কবি কেন এরূপ মন্তব্য করেছেন
“সর্বনাশী/শিখায় এ হীন তথ্য কে রে?” -কোন্ তথ্যকে ‘সর্বনাশী’ ও ‘হীন’ বলা হয়েছে? কবি কেন এরূপ মন্তব্য করেছেন?
সংগ্রামী চেতনার অতন্দ্র প্রহরী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর ‘ভাঙার গান’ কবিতায় ‘ভগবান পরবে ফাঁসি?’ -এই তথ্যটিকে ‘সর্বনাশী’ ও ‘হীন’ বলেছেন।

বিদ্রোহী কবি নজরুল সুন্দরের পূজারি। সুন্দরের অপমান তিনি একেবারে সহ্য করেন না। তিনি সমকালীন সময়ে লক্ষ করেছেন হিন্দু পুরোহিত ও মুসলমান মোল্লাদের দৌরাত্ম্য। ‘পথের দিশা’ কবিতায় তিনি বলেছেন–

তরুণদের প্রতি কবি আহ্বান

‘উড়ছে আজো ধর্মধ্বজা টিকির পিঠে দাড়ির ঝোপে’। যেখানে দেশ পরাধীনতার শৃঙ্খলে বন্দি, সেখানে স্বার্থপর উচ্চ সম্প্রদায়, রাজনৈতিক নেতা এঁরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিতে ব্যস্ত। তাই বিপ্লবীদের নবমন্ত্রে দীক্ষিত করতে তাঁর আবির্ভাব। জাগিয়ে তুলেছেন তিনি ‘তরুণ ঈশান’ ‘পাগলা ভোলা’রূপী বিপ্লবীদের –

‘নবীন মন্ত্রে দানিতে দীক্ষা আসিতেছে ফাল্গুনী,

জাগোরে জোয়ান! ঘুমায়ো না ভুয়ো শান্তির বাণী শুনি।’ ধর্মীয় ভণ্ডামির মুখোশধারী মানুষেরা সর্বদাই দেবতার দোহাই দিয়ে স্বার্থসিদ্ধিতে ব্যস্ত। তারা এতটাই প্রভাবশালী যেন দেবতাকে ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দিতে তাঁদের কোনো কুণ্ঠা নেই। কবি তাঁদের এই ভণ্ডামি দেখে কৌতুক প্রকাশ করেছেন। যেখানে দেবতাই সর্বশক্তিমান, সেখানে তারা দেবতাকে শৃঙ্খল দিয়ে বন্দি করতে চান। এই তথ্য কখনোই সর্বোৎকৃষ্ট হতে পারে না। এ হীন এবং সর্বনাশী তথ্য। কবি তাই বলেছেন–

“হা হা হা পায় যে হাসি, 
ভগবান পরবে ফাঁসি?

সর্বনাশী 

শিখায় এ হীন তথ্য কে রে?”

Leave a Comment