‘ওরে ও পাগলা ভোলা’ – ‘পাগলা ভোলা’ কে? ‘পাগলা ভোলা’-কে আর কী ভিন্ন নামে কবি তাঁর অন্য কবিতায় ব্যবহার করেছেন? ‘পাগলা ভােলা’ এসে কী করবে?

'ওরে ও পাগলা ভোলা' – 'পাগলা ভোলা' কে? 'পাগলা ভোলা'-কে আর কী ভিন্ন নামে কবি তাঁর অন্য কবিতায় ব্যবহার করেছেন? 'পাগলা ভােলা' এসে কী করবে
‘ওরে ও পাগলা ভোলা’ – ‘পাগলা ভোলা’ কে? ‘পাগলা ভোলা’-কে আর কী ভিন্ন নামে কবি তাঁর অন্য কবিতায় ব্যবহার করেছেন? ‘পাগলা ভােলা’ এসে কী করবে?
বিদ্রোহী কবি নজরুল তাঁর ‘ভাঙার গান’ গীতিকায় যে ‘পাগলা ভোলা’-কে আহ্বান করেছেন সেই ‘পাগলা ভোলা’ হলেন দেবাদিদেব মহাদেব, যার দুই রূপ -মঙ্গলময়রূপ ও ধ্বংসাত্মকরূপ।

‘পাগলা ভোলা’-কে কবি নজরুল তাঁর ‘ফণিমনসা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘পথের দিশা’ কবিতায় ‘ভাঙনদেব’ নামে অভিহিত করেছেন।

‘পাগলা ভোলা’-কে আহ্বানের কারণ

‘পথের দিশা’ কবিতায় কবি যেমন ‘ভাঙনদেব’-কে আহ্বান করলেও আসলে তিনি ‘ভাঙনদেব’-এর মতো কোনো ধ্বংসাত্মক শক্তিকে আহ্বান করেছিলেন, একইরকমভাবে ‘ভাঙার গান’ কবিতাতেও ‘পাগলা ভোলা’ বলতে দেবাদিদেব মহাদেবকে বোঝালেও আসলে কবি অত্যাচারী ইংরেজদের কারাগারে বন্দি ভারতীয় বিপ্লবীদের মহাদেবের মতো প্রবল শক্তিধর হয়ে আবির্ভূত হতে বলেছেন। কবি সুন্দরের পূজারি। তিনি জানেন ধ্বংস না হলে কখনও নবসৃষ্টি হবে না। তাই কবি ভারতবর্ষের অশিক্ষা, কুসংস্কার, অজ্ঞতা, ধর্মীয় ভণ্ডামি, সর্বোপরি পরাধীনতার ধ্বংস চান। তাই গীতিকার প্রথমাংশে কবি ‘তরুণ ঈশান’-কে তার প্রলয়-বিষাণ বাজিয়ে এবং ধ্বংস নিশান উড়িয়ে প্রাচীন প্রাচীরকে ভেদ করতে বলেছেন–

“ওরে ও তরুণ ঈশান! 
বাজা তোর প্রলয়-বিষাণ 
ধ্বংস-নিশান, 
উড়ুক প্রাচী’র প্রাচীর ভেদি।”

পরবর্তী অংশে তিনি বিদ্রোহী মানসিকতার প্রকাশ ঘটিয়ে ‘পাগলা ভোলা’-র উদ্দেশে জানিয়েছেন, ‘পাগলা ভোলা’ যেন প্রলয় দোলা দিয়ে গারদগুলোকে জোরসে ধরে হ্যাঁচকা টানে বিনষ্ট করে। এইভাবে কবি ভারতবর্ষের অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে সুন্দর সমাজ গড়ার লক্ষ্যে ‘পাগলা ভোলা’-কে আহ্বান জানিয়েছেন।

Leave a Comment