‘আকাশে সাতটি তারা’ কবিতায় কবির উপমা প্রয়োগের দক্ষতা আলোচনা করো। |
উপমা প্রয়োগের দক্ষতা
‘রূপসী বাংলা’ কাব্যের অন্তর্গত ‘আকাশে সাতটি তারা’ কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশ বঙ্গপ্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের বর্ণনা করতে গিয়ে নানান উপমা প্রয়োগ করেছেন। সান্ধ্যকালীন পরিবেশে অস্তগামী সূর্যের রক্তিম আলোর আভায় ভাসমান মেঘের বর্ণকে কবি তুলনা করেছেন কামরাঙার লাল বর্ণের সঙ্গে। পাকা কামরাঙার লালচে বর্ণের সঙ্গে গোধূলি আলোয় রাঙা মেঘের সাধারণ ধর্ম খুঁজে নিয়ে মেঘের রঙের উপমান করেছেন কামরাঙার লাল বর্ণকে। আবার অন্যদিকে রাত্রির অন্ধকারে ডুবতে যাওয়া ভাসমান মেঘের উপমান হিসেবে কবি ব্যবহার করেছেন মৃত মনিয়া পাখিকে। তাই লিখেছেন–
‘…..কামরাঙা-লাল মেঘ যেন মৃত মনিয়ার মতো
গঙ্গাসাগরের ঢেউয়ে ডুবে গেছে-‘
জীবনানন্দ দাশ বাংলাদেশের মায়াবী মেদুরতা সৃষ্টিকারী নীল সন্ধ্যাকে উপমিত করেছেন কেশবতী কন্যার সঙ্গে। লিখেছেন–
‘আসিয়াছে শান্ত অনুগত
বাংলার নীল সন্ধ্যা— কেশবতী কন্যা যেন এসেছে আকাশে;’
কাব্য প্রতিভা
কবির সৌন্দর্যপিয়াসি মন মায়াময় সন্ধ্যার উপমান হিসেবে ব্যবহার করেছে কেশবতী কন্যাকে। কবির মন পাড়ি দিয়েছে রূপকথার জগতে। বঙ্গপ্রকৃতির সান্ধ্যকালীন সৌন্দর্যে আবিষ্ট কবি তাই কেশবতী কন্যার মোহিনীসত্তার সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের সন্ধ্যার মোহময় আবেশকে। আঙ্গিক সচেতন কবি জীবনানন্দের আলোচ্য কবিতায় উপমা প্রয়োেগ তাঁর কাব্যপ্রতিভার অন্যতম পরিচায়ক হয়ে উঠেছে।