‘গঙ্গাসাগরের ঢেউয়ে ডুবে গেছে’-কে, কার মতো ডুবে গেছে? এরপরের দৃশ্য বর্ণনা করো। |
যে ডুবে যাচ্ছে
যার মতো ডুবে গেছে
আলোচ্য কবিতায় গঙ্গাসাগরের ঢেউয়ে অস্তমিত সূর্যের আলোয় ভাসমান মেঘ যখন কামরাঙা-লাল বর্ণ পেয়েছে, কবি তার সঙ্গে মিল খুঁজে পেয়েছেন প্রাণচঞ্চল পাখি মনিয়ার মৃতাবস্থার সঙ্গে। কবি প্রত্যক্ষ করেছেন শান্ত অনুগতভাবে বাংলাদেশে নেমে আসছে নীল সন্ধ্যা আর তার মায়াবী আলোয় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে বাংলার নিসর্গপ্রকৃতি। কবির মনে হয় এই মায়াময় সন্ধ্যা যেন কেশবতী কন্যা, যার চুল কবির চোখের উপর, মুখের উপর খেলা করে। আসলে বঙ্গপ্রকৃতির সান্ধ্য সৌন্দর্যে আবিষ্ট হয়ে পড়েছেন জীবনানন্দ।
পরবর্তী দৃশ্য
কবির প্রকৃতিপ্রেমী চোখ খেয়াল করে এই বিরল সৌন্দর্য থেকে বঞ্চিত বাকি পৃথিবী। কবি আর কোথাও দেখেননি, যে কেশবতী কন্যার অজস্র চুল এমন অবিরত চুম্বন করে যাচ্ছে হিজল-কাঁঠাল কিংবা জামগাছকে। আসলে বাংলার নীল সন্ধ্যার মায়াময় আবেশ সর্বদা ঝরে পড়ছে বঙ্গপ্রকৃতির সর্বত্র। কবি নানা অনুষঙ্গে অনুভব করেছেন সন্ধ্যার স্নিগ্ধ গন্ধ। কখনও নরম ধানে, কলমির ঘ্রাণে; আবার কখনও হাঁসের পালক, শর, পুকুরের জল, চাঁদা-সরপুঁটিদের মৃদু ঘ্রাণে বাংলার সন্ধ্যা আমোদিত করে দেয় কবিকে। এসবের মাঝে, কিশোরের পায়ে দলা মুথাঘাস কিংবা লাল লাল বটের ফলের ব্যথিত গন্ধের ক্লান্ত নীরবতায় কবি স্পর্শ পান বাংলার প্রাণের।