তপের প্রভাবে বাঙালিসাধক কীভাবে জড়ের সাড়া পেয়েছেন? এ সাধনা শবসাধনার বাড়া কেন? |
উদ্ভিদের প্রাণ আবিষ্কার
বিশ্ববিখ্যাত পদার্থবিদ ও জীববিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৮-১৯৩৭) ‘জড় ও জীবের মধ্যে উত্তেজনাপ্রসূত বৈদ্যুতিক সাড়ার সমতা’ নিয়ে গবেষণা করেন এবং সমগ্র বিশ্বে প্রশংসিত হন। তাঁর দ্বিতীয় পর্যায়ের গবেষণার বিষয়বস্তু তাঁর ‘Responses in the living and Non-living’ বইটিতে পাওয়া যায়। তিনি দেখান বৈদ্যুতিক, রাসায়নিক ও যান্ত্রিক উত্তেজনায় ধাতু, উদ্ভিদ ও প্রাণী একইভাবে সাড়া দেয়। প্রাচীনকাল থেকেই উদ্ভিদ অর্থাৎ বৃক্ষাদি মানুষের জীবনচর্চার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রাচীন মানব উদ্ভিদের গুরুত্ব ও মর্যাদা জানত। জানত তার মধ্যে প্রাণপ্রবাহের স্পন্দনের কথা। কিন্তু উদ্ভিদ যে উত্তেজনায় সাড়া দেয়, প্রতিক্রিয়া করে, মানুষের মতো আঘাত করলে আহত হয়, বিষপ্রয়োগে মারা যায় তা বিশ্বমানবের কাছে অজ্ঞাত ছিল। এর আগে মানুষ উদ্ভিদের এ গুণ জানত না, আর ধাতুর সাড়া দেওয়াও কল্পনাতীত ছিল। এই অসামান্য কৃতিত্বকেই কবি তাঁর কবিতায় তপের প্রভাব বা তপস্যা, সাধনারূপ গবেষণার ফলে জড়ের সাড়া পাওয়া বলে উল্লেখ করেছেন।
তান্ত্রিক সাধকরা শবসাধনা করেন। শব এককালে প্রাণবান ছিল। কিন্তু যা চিরকালই প্রাণহীন, জড় তারও প্রাণস্পন্দন খুঁজে পেয়েছিলেন জগদীশচন্দ্র। তাই তাঁর কর্ম শবসাধনার থেকে দুরূহ, উন্নত ও শ্রেষ্ঠ কর্ম বলে কবি যথার্থই বলেছেন।