‘বিষম ধাতুর মিলন’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ‘নব্য রসায়ন শুধু গরমিলে মিলাইয়া’ বলা হয়েছে কেন? |
বিষম ধাতুর মিলনের স্বরূপ
‘বিষম ধাতু’ বলতে বোঝায় ভিন্নধর্মী ধাতুকে। বাঙালি রসায়নবিদ, অধ্যাপক, ভারতীয় রাসায়নিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের স্থপতি আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র পারদ (মার্কারি) ও নাইট্রাইট মিশিয়ে একটি মিশ্র পদার্থ তৈরি করেন, যার নাম মারকিউরাস নাইট্রাইট। দুই ভিন্নধর্মী পদার্থের মিশ্রণে এই মিশ্র পদার্থের গড়ে ওঠাকেই কবি ‘বিষম ধাতুর মিলন ঘটায়ে বাঙালি দিয়েছে বিয়া’ বলে বর্ণনা করেছেন। বিয়া অর্থাৎ বিয়ে এক সামাজিক বন্ধন। বিপরীত লিঙ্গের মধ্যে এই মেলবন্ধন থেকে সংসার সূচিত হয়। বিয়েতে বৈপরীত্যের ঐক্য বা মেলবন্ধন ঘটে। রাসায়নিক অধ্যাপক আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র বিপরীতধর্মী ধাতুমিশ্রণে নতুন মিশ্র পদার্থ গঠন করেন। এই বৈপরীত্যের ঐক্যই কবির ভাষায় ‘বিষম ধাতুর বিয়া।’
দুই বা ততোধিক ভিন্নধর্মী মৌলিক পদার্থ রাসায়নিক সংযুক্তির মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সম্পূর্ণ নতুন ধর্মবিশিষ্ট পদার্থ উৎপন্ন করে এবং তার নাম হয় যৌগিক পদার্থ। প্রাচীন ভারত রসায়নে অতি উন্নত দেশ ছিল। সে ধারাপ্রবাহ নব্য যুগের রসায়নে আরও সমৃদ্ধ করেন প্রফুল্লচন্দ্র। ‘গরমিল’ বলতে বোঝায় অমিল বা অনৈক্য। অমিল ধাতুর মেলবন্ধন তিনি ঘটিয়েছিলেন বলেই ‘নব্য রসায়ন গরমিলে মিলাইয়া’ বলা হয়েছে।