১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের মনোভাব কীরকম ছিল? |
শিক্ষিত বাঙালি সমাজের বিরোধিতার কারণ
[1]মধ্যযুগীয় শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার ভয়: শিক্ষিত বাঙালি সমাজ মনে করেছিল বিদ্রোহীরা জয়লাভ করলে ভারতে আবার মধ্যযুগীয় মুঘল শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। তারা মধ্যযুগীয় মুঘল শাসনের ঘোরতর বিরোধী ছিলেন।
[2] আধুনিকতার অবসানের ভয়: শিক্ষিত বাঙালি সমাজ ছিল আধুনিক শিক্ষা ও সংস্কারের সমর্থক। তারা মনে করেছিল বিদ্রোহীরা জয়ী হলে তাদের সামন্ততান্ত্রিক শাসনে আধুনিক শিক্ষা ও সংস্কারের অবসান ঘটবে।
বিরোধিতা
সভা করে বিরোধিতা করা: বিদ্রোহ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাজা রাধাকান্ত দেবের সভাপতিত্বে সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সভা হয়। সভায় বিদ্রোহীদের নিন্দা করা হয়।
মেট্রোপলিটন কলেজের সভা: রাজা রাধাকান্ত দেবের সভাপতিত্বে সিপাহি বিদ্রোহের বিরুদ্ধে আরও একটি সভা হয় মেট্রোপলিটন কলেজে (২৬ মে, ১৮৫৭ খ্রি.)। এই সভায় উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ হলেন কালীপ্রসন্ন সিংহ, কমলকৃষ্ণ বাহাদুর, হরচন্দ্র ঘোষ প্রমুখ। তাঁরা সরকারকে সবরকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সভায় প্রস্তাব পাস করেন এবং সরকারের কাছে তা পেশ করেন।
পত্রপত্রিকায় বিরোধিতা: সংবাদ ভাস্কর, সংবাদ প্রভাকর প্রভৃতি পত্রপত্রিকায় শিক্ষিত বাঙালি সমাজ বিদ্রোহীদের তীব্র বিরোধিতা করেছিল। সংবাদ প্রভাকর পত্রিকার সম্পাদকের সিপাহি বিদ্রোহের নেতৃবৃন্দ, নানাসাহেব, লক্ষ্মীবাঈ সম্পর্কে বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা ছিল না।
ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত সংবাদ প্রভাকর’ পত্রিকায় লিখেছিলেন যে, ‘হে বিঘ্ন হর….. ব্রিটিশ গভর্নমেন্টের জয়পতাকা চিরকাল সমভাবে উড্ডীয়মান কর। অত্যাচারি অপকারি বিদ্রোহকারি দুর্জনদিগকে সমুচিত প্রতিফল প্রদান কর।’