জাতিসংঘের ব্যর্থতার কারণ গুলি আলোচনা করো – আজকের পর্বে জাতিসংঘের ব্যর্থতার কারণ গুলি আলোচনা করা হল।
জাতিসংঘের ব্যর্থতার কারণ গুলি আলোচনা করো
জাতিসংঘের ব্যর্থতার উল্লেখযোগ্য কারণগুলি লেখো। |
ভূমিকা
1919 খ্রিস্টাব্দে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। পরবর্তী সময় জাতিসংঘ কয়েকটি ক্ষেত্রে তার উদ্দেশ্যপূরণে সফল হয়েছিল এ কথা অস্বীকার করা যায় না। তবে সার্বিক দিক থেকে দেখলে সমগ্র বিশ্বের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানে এটি ব্যর্থ হয়েছিল তা বলা চলে।
জাতিসংঘের ব্যর্থতার কারণসমূহ
① শক্তিধর রাষ্ট্রগুলির স্বার্থপূরণ
জাতিসংঘ পরিচালিত হত ইউরোপের শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলির দ্বারা। এই রাষ্ট্রগুলি তাদের স্বার্থপূরণ করার জন্য জাতিসংঘকে নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করেছিল। এই কারণে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত রাষ্ট্রগুলি জাতিসংঘের বিরোধিতা করে।
② নিজস্ব সৈন্যবাহিনীর অনুপস্থিতি
জাতিসংঘ গঠিত হলেও এর কোনো নিজস্ব সৈন্যবাহিনী ছিল না। বিশ্বে শান্তি বজায় রাখার প্রয়োজনে গঠিত এই সংস্থাটি সামরিক বাহিনী তৈরির প্রতি গুরুত্ব দেয়নি। ফলে কোনো প্রয়োজন হলে এই সংস্থাটি সামরিক শক্তির প্রয়োগ ঘটাতে পারেনি।
③ শক্তিধর রাষ্ট্রগুলির প্রতি তোষণ নীতি
জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা হওয়ার কিছু সময়ের মধ্যেই তার দুর্বলতা প্রকাশ পায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর কয়েকটি শক্তিশালী দেশ (যেমন-ফ্রান্স, জার্মানি) আগ্রাসী নীতি অবলম্বন করেছিল। ফ্রান্স কর্তৃক জার্মানির রূঢ় অঞ্চলে আগ্রাসনই হোক বা জার্মানি কর্তৃক অস্ট্রিয়া দখল-জাতিসংঘ কোনো বিরোধিতা না করে শক্তিধর রাষ্ট্রগুলিকে একপ্রকার তোষণ করেছিল।
④ নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনে ব্যর্থতা
1932-33 খ্রিস্টাব্দে জাতিসংঘ নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলন আহ্বান করে। বিশ্বের বিভিন্ন শক্তিধর রাষ্ট্রগুলি যাতে অস্ত্র মজুতের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে না পারে সেটাই এই সম্মেলনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু জার্মানি ও ইটালির প্রতিনিধি এই সম্মেলন ত্যাগ করলে সেটি ব্যর্থ হয়।