‘মনে হলো, স্নেহ-মমতা-ক্ষমার এক মহাসমুদ্রের ধারে এসে দাঁড়িয়েছি।” কার সম্পর্কে এ মন্তব্য করা হয়েছে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তিকে এমন উপমায় ভূষিত করার কারণ কী? |
যার সম্পর্কে মন্তব্য করা হয়েছে
কথক সুকুমার তার ছেলেবেলার স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই-এর সঙ্গে বহুকাল পরে বাংলাদেশের একটি কলেজে পুনরায় সাক্ষাতের পর তাঁর সম্পর্কে এই মন্তব্য করেছেন।
উপমায় ভূষিত করার কারণ
বহুদিন পর কথক মাস্টারমশাইকে চিনেছেন অন্যভাবে। স্কুলজীবনে যে মাস্টারমশাই ছিলেন ছাত্রদের কাছে বিভীষিকা স্বরূপ, তাঁর সম্পূর্ণ অন্যরূপ প্রকাশিত হয়েছে কথকের সামনে বাংলাদেশের কলেজের মাঠে। একদিন যে মাস্টারমশাই-এর প্রকাণ্ড হাতের প্রচণ্ড চড় খেয়ে চোখ জলে ভরে যেত কথকের, বেশকিছুটা সময় পেরিয়ে এসে কথক দেখেছেন আবেগাপ্লুত সেই মাস্টারমশাই-এর চোখে জল। কথক ‘সর্বার্থসাধক বক্তৃতা’র ‘ফাঁপা ফানুস’ দিয়ে মাস্টারমশাইকে ভোলানো যাবে না ভেবে যখন আত্মগ্লানি অনুভব করেছেন, তখন মাস্টারমশাই ছাত্রের বক্তৃতা শুনে খুশি হয়ে তার প্রশংসা করেছেন। ছাত্রের প্রতিষ্ঠাকে সম্মান জানিয়েছেন মাস্টারমশাই। তাঁকে নিয়ে কল্পনার রং মিশিয়ে, উপদেশ বর্ষণ করে একটি পত্রিকায় গল্প লিখে কথক নগদ দশ টাকা লাভ করেছিলেন। সে গল্প মাস্টারমশাই পড়েছেন এবং যত্ন করে সেটি সংরক্ষণ করে রেখেছেন শুনে কথক যখন লজ্জায় এবং অপরাধবোধে মাটিতে মিশে যেতে চেয়েছেন, তখন তিনি স্পর্শ পেয়েছেন মাস্টারমশাই-এর ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টির। তাঁর অপার স্নেহ ও মমতার সান্নিধ্য পেয়ে কথক উপলব্ধি করেছেন মাস্টারমশাই যেন ‘স্নেহ-মমতা-ক্ষমার এক মহাসমুদ্র’।